পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দলীয় সংসদ সদস্যদের একাদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন। আড়াই বছর চলে গেছে। একাদশ নির্বাচনের জন্য হাতে আছে মাত্র দুই বছর। বাকি ৬ মাস যাবে বলতে বলতেই। সেজন্য আপনারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা- তুলে ধরুন। নতুন করে প্রস্তুত হোন। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। জঙ্গি হামলা নিয়ে ভয় ও চিন্তা না করে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে এমপিদের সতর্কতার সঙ্গে ইসলামের সঠিক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে জঙ্গিবাদ দমন ও জনসাধারণকে সচেতন করার নির্দেশ দেন। ইসলামকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব উল্লেখ করে এমপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজ নিজ এলাকায় যান এবং মানুষের মাঝে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ছড়িয়ে দিন।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দলীয় সংসদ সদস্যদের কড়া নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে ভোটের প্রস্তুতি নিন এবং দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা যেন বজায় থাকে, মানুষ যেন নিরাপদে থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। জঙ্গিবাদ নিয়ে সতর্ক থাকুন কিন্তু ভয় পাবেন না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সারাদেশেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি জনমত তৈরি হয়েছে। এ জনমতকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, সরকারের যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছে, আরও কী কী উন্নয়ন কাজ করা হবে সেগুলো ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে। নির্বাচনের তিন মাস আগে নির্বাচনের জন্য দলকে পুরোপুরি প্রস্তুত রাখতে হবে। এজন্য এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এমপিদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি না করার নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করার তাগিদ দেন তিনি।
বৈঠকে জেলা পরিষদের নির্বাচন চলতি বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি নারী এমপিদের নিজস্ব নির্বাচনী এলাকা তৈরি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। নারী এমপিরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহিলা আসনে যেসব এমপি আছেন, তাদের নিজ নির্বাচনী এলাকা তৈরি করার দরকার নেই। তাদের আমি মনোনয়ন দেব না। আপনাদের যেজন্য এমপি বানিয়েছি সেই সংগঠন গোছানোর কাজ করুন। নিজে নিজে এমপি প্রার্থী হওয়া যাবে না, মনোনয়ন দেব আমি। কে মনোনয়ন পাবে সেটা আমি দেখব। আপনারা সংগঠনের জন্য কাজ করুন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে যেন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে, মানুষের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের সঙ্গে যত সম্পৃক্ততা বাড়ানো যাবে জঙ্গিবাদ তত দ্রুত প্রতিরোধ করা যাবে। এজন্য জঙ্গিবাদবিরোধী যে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে বা হচ্ছে, সেই কমিটিগুলোর সঙ্গে প্রত্যেক এমপিকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
নিজ নিজ এলাকায় জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশ করারও নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ তৎপরতায় নারীদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দলের নারী সংগঠন ও নারী এমপিদেরও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এক লাখ আলেমের দেয়া যে জঙ্গিবিরোধী ফতোয়া তা অনুসরণ করে জনগণকে সচেতন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এমপিদের দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমরা এর আগেও অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান করেছি। এখনও করব। জঙ্গিবাদ কোনো সংকট নয়। আমরা এর মোকাবিলা করব।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বজুড়েই এখন তা ঘটছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশ তা দমন করতে না পারলেও আমরা পারব। কারণ আমাদের দলীয় লোকজন আছে। আছে শক্তিশালী সংগঠন।
বৈঠকে বগুড়ার সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান ও নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রীরা এমপিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করেন না। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে না জড়ানোর নির্দেশ দেন।
একজন সংসদ সদস্য বলেন, সব পুলিশ আমাদের আপন নয়। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কল্যাণপুরের জঙ্গি দমন তো পুলিশই করেছে। তারা ভালোভাবেই অভিযান পরিচালনা করেছে এবং সফল হয়েছে। আমাদের বিশেষায়িত সোয়াত বাহিনী ও পুলিশকে আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম রাতে অভিযান না চালিয়ে দিনের বেলায় চালাতে, যাতে সাধারণ মানুষের কোনো সমস্যা না হয়।
তারেক রহমানের সাজা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী এমপিদের জানান, এখানে আমাদের করার কিছু ছিল না। এটাই প্রথম মামলা যেখানে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। তারেক রহমানকে নিয়ে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছিলেন তা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। তার টাকা পাচার প্রমাণিত।
প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার উদ্দেশে সূচনা বক্তব্য দিয়ে সংসদ সদস্যদের কথা বলার সুযোগ দেন। এ সময়ে শুরুতেই বক্তব্য দেন সরকারদলীয় সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ। এর পর বক্তব্য দেন চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, আবদুল মান্নান, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, হাছান মাহমুদ, ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, বি এইচ হারুন, শামিম ওসমান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।