পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্রটি লোকসানে পরিণত হয়েছে। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি বছরে বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসান গুনছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরে ৪২ লাখ টাকা লোকসান করছে পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্র। অন্যদিকে অর্ধ কোটি টাকার ওপরে গ্রাহকদের নিকট বিল বকেয়া থাকলেও আদায়ে পৌর কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। বছরের পর বছর এসব বকেয়া বিল বাকি থাকছে সরকারি-বেসরকারি গ্রাহকদের নিকট।
এদিকে দক্ষ জনবল অভাবে সরবরাহকৃত পানি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়েও জনমনে শঙ্কা রয়েছে। সরবরাহকৃত পানির নিয়মিত আর্সেনিক বা আয়রন পরীক্ষা করা হয় না। পানিতে কেমিক্যালসহ অন্যান্য মেডিসিন মিশ্রিত করা হয় সম্পূর্ণ অনুমানের ওপর ভিত্তি করে। কেমিস্ট ও টেকনিশিয়ানের দায়িত্ব পালন করছে একজন পাম্প অপরেটর। এভাবে গত ২০ বছর পানি সরবরাহ করে আসছে সাতক্ষীরা পৌরসভা।
তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ব্যাপারে দক্ষ লোকবল নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া জায়নি। সাতক্ষীরা পৌর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্রটি প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি লিটার খাওয়ার পানি সরবরাহ করে থাকে। এতে প্রতি মাসে ব্যয় হয় সাড়ে ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে আয় হয় প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১১ লাখ টাকা। ফলে মাসে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। যা বছরে ৪২ লাখ টাকা লোকসানের পরিমান। সে হিসাবে গত ২০ বছরে এ প্রতিষ্ঠানটি ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।
সূত্রটি আরো জানায়, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন গ্রাহকদের কাছে অন্তত ৫০ লাখ টাকার উপরে বকেয়া বিল পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমিতে বকেয়া রয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার, গণপূর্ত অধিদপ্তরে ৭৩ হাজার টাকা, সদর ভ‚মি অফিসে ৩৫ হাজার টাকা, পৌর কর্মচারী আব্দুল আজিজের নিকট ৩০ হাজার টাকা, সার্কিট হাউসে ২২ হাজার টাকা এবং ঠিকাদার মাতিন জমাদ্দারের নিকট ২৩ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন গ্রাহকদের বিল বকেয়া রয়েছে, যা আদায়ে কোনো রকম উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পৌর নাগরিকদের সুপেয় খাবার পানি সরবরাহের জন্য ১৯৯৬ সালে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের অভ্যন্তরে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। কিন্ত শুরু থেকে পানি সরবরাহ কেন্দ্রে রয়েছে নানা ধরনের অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা। যেসব লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে ওই প্রকল্পের আওতায় তারা সকলেই অদক্ষ। প্রায় অর্ধশত লোক গত ২০ বছর ধরে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছে নিয়মিতভাবে।
সাতক্ষীরা পৌর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. সেলিম সরোয়ার জানান, শুরু থেকে নানা সমস্যায় জজরিত পানি সরবরাহ কেন্দ্রটি। এখানে গত ২০ বছরের মধ্যে ল্যাবটরিজ হয়নি। নেই কোনো কেমিষ্ট। ম্যাকানিক্যাল, টেকনোলজি ও ইলেট্রিশিয়ানের পদ শূন্য আছে। পানির আয়রন ও আর্সেনিক পরীক্ষা করার দরকার হলে খুলনায় যেতে হয় তাকে। তিনি বলেন, পানি সরবরাহ কেন্দ্রে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশ অদক্ষ। ফলে তাকে প্রকৌশলী ছাড়াও বিভিন্ন রকম দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাছাড়া পৌর কর্তৃপক্ষের জোরালো পদক্ষেপ গ্রহন না করার ফলে বকেয়া বিল আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি জানান, বকেয়া বিল আদায়ে খুবই শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তাছাড়া অতীতের যে সব সমস্যা রয়েছে পানি সরবরাহ কেন্দ্রে তা পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।