Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেউলিয়া বাজেটগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়

ড. মঈন খান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে কথার ফুলঝুড়ি উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান বাজেটটি ৮০’র দশকের এরশাদ সরকারের সময়ে দেউলিয়া বাজেটগুলোর কথাই মনে করিয়ে দেয়। বরঞ্চ বিগত প্রায় ৩০ বছর ধরে প্রত্যেকটি সরকার এই প্রচেষ্টাই করেছে- বাজেট যতদূর সম্ভব স্বয়ং সম্পূর্ণ ও স্বনির্ভর করা যায়। কেবলমাত্র দেশী-বিদেশী ঋণের নির্ভর হয়ে বাজেটে শুভংকরের ফাঁকি দিয়ে এই দুঃসময়ে দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকার সমাধান আগামী বাজেটে হবে-এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এই শিক্ষক বলেন, এই সংকটকালে সরকার একটি বাজেট দিয়েছে যে বাজেট থেকে দেশের ১৭ কোটি মানুষের প্রত্যাশা ছিলো অনেক। অথচ পুরো বাজেটের এক তৃতীয়াংশই হলো ঘাটতি যা জিডিপির ৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্যখাতের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বড় একটা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু বিগত এক দশকে আমরা দেখেছি হাজার হাজার কোটি টাকার মেডিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট কেনা হয়েছে। তার সুফল করোনার প্রয়োজনে দেশের মানুষ পেলো না। কাজেই প্রশ্ন হচ্ছে, বরাদ্দের পরিমাণ নয়, বরাদ্দের সদব্যবহার। যদি ২ হাজার টাকার পিপিই ৪ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয় আর ডাক্তারদের ৫‘শ টাকার চশমা ৫ হাজার টাকায় কেনা হয় তাহলে স্বাস্থ্যখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়েও এদেশের মানুষের চিকিৎসা সমস্যার কোনো সমাধান হবে না।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিরোধিতা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বছরের পর বছর ধরে দেখছি- নামমাত্র কর দিয়ে অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এর ফলোশ্উতিতে দেশের অর্থনীতির কি উত্তরণ হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত কারো কাছে বোধগম্য নয়। এখন সময় এসেছে এই ধরনের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে এই বিপদের সময়ে দেশের করোনা আক্রান্ত মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগ করা।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের রাজস্ব আদায় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাজেটের বিরাট যে ঘাটতি সেটা কিভাবে কোথায় থেকে পূরণ হবে তার নির্দিষ্ট কোনো হিসাব-নিকাশ এই বাজেটে নেই। আসছে বছরে করোনা পরিস্থিতির যে দীর্ঘমেয়াদী ফলোশ্রুতি তাতে করে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতির এমন কোনো উন্নয়ন সাধিত হওয়ার লক্ষণ নেই। এই অবস্থায় বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বাজেটের মূল লক্ষ্য যেটা হওয়া উচিত ছিলো তা হলো- রাজস্ব ব্যয় সচেতনভাবে কমিয়ে আনা এবং সকল প্রকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া। ২ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট (এডিপি) কে সরাসরি অর্ধেকে নামিয়ে নিয়ে আসা। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন উন্নয়ন ব্যয় কমিয়ে আনলে কর্মসংস্থান ও জীবিকার সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এই যুক্তি ধোপে টিকে না।

এর ব্যাখ্যা দিয়ে মঈন খান বলেন, এডিপির ভেতরে যেসব ব্যয়ের তালিকা দেয়া হয়েছে তা সবই বিপুলভাবে বর্ধিত হারে। একটি বালিশের মূল্য ৬ হাজার টাকা, একটি পর্দার মূল্য ৮৪ হাজার। আইএমইডি‘র মাধ্যমে যৌক্তিকীকরণ করলে উন্নয়ন বাজেট থেকে যে এক লাখ হাজার কোটি টাক উদ্বৃত্ত হয়ে আসবে সেটা দিয়ে আমরা আগামী বাজেটের অত্যন্ত সহজে কোভিড-১৯ ক্ষতিগ্রস্থ কোটি কোটি কর্মহীন নারী-পুরুষ, প্রান্তিক কৃষক, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী এবং দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সমস্যার সমাধান খুব সহজে করতে পারি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ