পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রামকে দৃষ্টিনন্দন বিশ্বমানের নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, এক বছরে কাজের মূল্যায়ন যথেষ্ট নয়। কাজ শুরু করেছি। সফলতা-ব্যর্থতা নগরবাসী বিচার করবেন।
গতকাল (সোমবার) নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে মেয়র এবং নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরদের মাধ্যমে বিগত অর্থবছরে (২০১৫-২০১৬) সম্পাদিত সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রম অবহিতকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশে মেয়র এসব কথা বলেন। দায়িত্ব গ্রহণের পাঁচ বছর পরই প্রকৃত মূল্যায়নের সময় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, সত্যিকারের মূল্যায়নের জন্য মাত্র একবছর যথেষ্ট সময় নয়। যে পরিস্থিতিতে, যে পরিবেশে আমি দায়িত্ব নিয়েছি, যে অবস্থায় চসিককে আমি পেয়েছি সে সব বিবেচনায় রেখেই মূল্যায়ন করা উচিত। বিলবোর্ডমুক্ত নগরী গড়া, দৃষ্টিকটূ প্রক্রিয়ায় দিনের পরিবর্তে রাতে আবর্জনা-বর্জ্য অপসারণ, নালা-নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করে দ্রুততম সময়ে বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সফলতা পেয়েছি।
মেয়র বলেন, আগামী তিন বছর পর চট্টগ্রাম হবে একটি বিশ্বমানের নগরী। সেই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছি। আমি নগরবাসীকে বিশ্বমানের নগর উপহার দেবো। কিন্তু বিশ্বমানের নগরের পূর্বশর্ত বিশ্বমানের নাগরিক। সেটি তাদের নিশ্চিত করতে হবে। কিছু কিছু এলাকার মানুষ চসিকের আহ্বানে সাড়া না দেয়ায় রাতের বেলা বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শতভাগ সফল হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা ২০ লাখ লিফলেট বিলি করলাম। মাইকিং করলাম। স্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিলাম। আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা রাত জেগে বর্জ্য পরিষ্কার করলো, কিন্তু কিছু মানুষ দিনের বেলা আবার বর্জ্য ফেলে শহরটা নোংরা করলো। এবার আমরা আর ডাস্টবিন দেখতে চাই না। ঘরে ঘরে বিন দেবো, রিকশাভ্যানে সব বর্জ্য সংগ্রহ করে অপসারণ করবো। আগের মেয়রের সময়কালের তুলনামূলক চিত্র দিয়ে মেয়র বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের সময় চসিকের মাসে বেতন আসতো ৯ কোটি টাকা। এখন ১৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে শিক্ষক, ডাক্তার-নার্স-টেকনোলজিস্ট, প্রকৌশলীসহ জনবল বাড়ানো হয়েছে। বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। আগামীতে মাসে ১৮-১৯ কোটি টাকা বেতন বাবদ খরচ হবে।
সুধী সমাবেশে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নগরবাসীর পরামর্শ, নির্দেশনা ও যে কোন আলোচনা-সমালোচনা করার অধিকার রাখে। নগরবাসীর স্বার্থে যে কোন নাগরিক আমার মোবাইলে ফোন করে এসএমএস দিয়ে যে কোন বিষয় জানাতে পারবে। নগরীর স্বার্থে যে কোন স্থানে আমাকে আহ্বান করলে আমি সশরীরে সেখানে উপস্থিত হয়ে নাগরিকদের কথা শুনব। তিনি বলেন, বিগত এক বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী ৩ বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
আবর্জনা ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, নাগরিক স্বার্থে রাতে বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নগরবাসীকে সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১১টার মধ্যে আবর্জনা ফেলার আহ্বান করা হয় সে মতে রাতেই আবর্জনা অপসারণ কার্যক্রম চলছে তবে এ কার্যক্রমে নাগরিকদের শতভাগ সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তাই ১ আগস্ট থেকে ডোর টু ডোর আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ পার্ক প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এ পার্কটি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। আমার দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেখানে ২টি সুইমিংপুল ও জিমনেসিয়াম নির্মাণ করা হয়েছিল। সেগুলো জনকল্যাণে না আসায় জাতিসংঘ পার্কটির উন্নয়ন ও দৃষ্টিনন্দন পার্কে পরিণত করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, পার্কের উন্নয়ন প্রসঙ্গে নানামুখি জটিলতা সৃষ্টি করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর যৌক্তিক কোন কারণ ছিল বলে তিনি মনে করেন না। মেয়র দুঃখ করে বলেন, সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলার সৎসাহস থাকা উচিত।
সুধিজনের বক্তব্যে মেয়রের মর্যাদা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মর্যাদার বিষয়টি বিবেচনায় এনে আমি মেয়র পদে প্রার্থী হই নাই। মেয়রের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মর্যাদার বিষয়ে কোথাও কোন জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নাই। সুতরাং এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা না করতে তিনি সুধিজনদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সুধী সমাবেশে সিটি মেয়রের বিগত এক বছরের কার্যক্রমের উপর আলোচনা করেন ইউএসটিসি’র ভিসি প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়–য়া, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, বিজিএমই এর প্রথম সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিন আহমেদ মিন্টু, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী, মহিলা চেম্বার পরিচালক রেখা আলম চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মো. মজিবুল হক, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাদেক মোহাম্মদ চৌধুরী। সুধি-সমাবেশে কাউন্সিলরদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, মিসেস জোবাইরা নার্গিস খান, নিছার উদ্দিন আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।