পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
পঞ্চগড় জেলা সংবাদাতা : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের খাদ্য পরিদর্শক স্বয়ং মো. ফজলুল হক নিজের নাম-পদবি ব্যবহার করে পরিচালক, সংগ্রহ, খাদ্য অধিদপ্তর, ঢাকা ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রংপুর বিভাগ, রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পঞ্চগড় ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্টদের বরাবরে তেঁতুলিয়া খাদ্যগুদাম ও ভজনপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ধান ছাঁটাইয়ে ভুয়া বিল প্রদানের অভিযোগ দাখিল করেছেন। ওই অভিযোগ থেকে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার দুইজন ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা নিজ সরকারী বিধিমালা ভঙ্গ করে ধান সংগ্রহ চলাকালে (১) মেসার্স জাহাঙ্গীর হাস্কিং মিল প্রো. মো. জাহাঙ্গীর আলম, (২) মেসার্স আল নোমান হাস্কিং মিল, প্রো. মো. তোজাম্মেল হক ও (৩) মেসার্স ভাই ভাই হাস্কিং মিল, প্রো. ফিরোজা বেগম নামে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দফতর হতে ধানের বরাদ্দ গ্রহণ করে কৃষকের বিভিন্ন নামে ১১৫ মেট্রিক টন ধানের বিল প্রদান করেন। অপরদিকে ভজনপুর এলএসডিতে (১) মেসার্স অনিক অনু হাস্কিং মিল প্রো. সামসুল আলম (২) মেসার্স সোয়াইব হাস্কিং মিল প্রো. মো. রফিকুল ইসলাম ও (৩) মেসার্স রহিম হাস্কিং মিল-১ প্রো. আব্দুল জব্বার নামের ধানের বরাদ্দের বিপরীতে টন প্রতি ৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে ২৬৩ দশমিক ২৮০ মেট্রিক টন বিভিন্ন কৃষকের নামের ধানের বিল প্রদান করা হয়। হাস্কিং মিলে ধান ছাঁটাই করা হলে হাস্কিং মিলে প্রস্তুতকৃত চালই মিল পরিদর্শনকারী কর্তকর্তার প্রত্যয়ন ছাড়া অটো মিলের চাল গ্রহণ করা হয়েছে। এতে প্রকৃত কৃষকগণ সরকারী গুদামে ধান বিক্রির সুযোগ হতে বঞ্চিত এবং ধান ছাঁটাই কমিশন, ধান পরিবহন ও ফলিত চাল পরিবহন বাবদ সরকারের বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়। অভিযোগকারী মো. ফজলুল হক তেঁতুলিয়া ও ভজনপুর এলএসডিসহ সংশ্লিষ্ট সকল হাস্কিং মিল পরিদর্শন করে প্রাপ্ত অনিয়মের চিত্র তুলে উক্ত লিখিত দাখিল করেন। এর ফলে জেলার আটোয়ারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আফতাব হোসেন কে প্রদান করে তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি গত ১৪ জুলাই তদন্ত করেন।
সূত্র আরো জানায়, তেঁতুলিয়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন নীলফামারী জেলার চিলাহাটি এবং ভজনপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত রুবেল আলম দিনাজপুর জেলার মদিলা হাট গুদামে থাকালীন খাদ্যশস্য আত্মসাতের সাথে জড়িত ছিলেন। এরপরেও তারা আবার গুদামে ফিরে আসেন কিভাবে। অভিযোগ রয়েছে, গত গম সংগ্রহ মৌসুমে ওই খাদ্য গুদামে যে গম মজুদ রয়েছে তা পরীক্ষা করলে আর্দ্রতা যেখানে সর্বোচ্চ ১৪% থাকার কথা থাকলেও সেখানে ১৪% হতে ১৮% সহ অনেক গম নি¤œমানের পাওয়া যাবে। ওই দুটি গুদাম হতে জেলা সদরে প্রেরিত এক হাজার মেট্রিক টন গম সর্ম্পূন নিম্মমানের বলে সূত্রটি দাবী করেছে। গমের বস্তায় প্রেরিত কেন্দ্রর কোন ষ্টেনসিল বা চিহ্নিত নেই।
সম্প্রতি সংগৃহীত গমের মান যাচাই করার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের মো. রায়হানুল কবীর অতিরিক্ত পরিচালক গত ৯ জুন তেঁতুলিয়ার এলএসডি পরিদর্শন করেন এবং সদ্য সংগৃহীত গমে পোকা দেখতে পান। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করা হলেও যেখানে তাৎক্ষনিক ভাবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব ছিল রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা তেতুঁলিয়া খাদ্য গুদাম তার পূর্ব পরিচিত বলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এদিকে এ ঘটনার পরপর আরো ঘটনা ঘটে, যেমনÑভজনপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ২৫২ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান ক্রয় অতঃপর তা ফেরৎ প্রদান। এর পরেই তেতুঁলিয়া খাদ্য গুদামে চারশত বস্তা গম ও ভজনপুর খাদ্য গুদামে এক হাজার বস্তা গম কম মজুদ থাকার বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়লে গত শুক্রবার ২২ জুলাই জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তেতঁলিয়া মো. শমসের আলী, মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন টেক ইন্সপেক্টর, সাকোয়া গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান ভজনপুর খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেন। সূত্র জানায়, বিষয়টি যেন আর বাড়াবাড়ি না হয় সে জন্য ঠাকুরগাঁও হতে এক হাজার বস্তা গম ক্রয় করে ভজনপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে অভিযোগ হতে আপাতত অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
জানা যায়, ওই এক হাজার বস্তার মধ্যে দুইশত বস্তা শনিবার ২৩ জুলাই এবং চারশত বস্তা জেলা সদরে মজুদ দেখানো হয়। একই ভাবে বৃহষ্পতিবার ২১ জুলাই তেঁতুলিয়া খাদ্য গুদামে চারশত বস্তা গম পুনরায় মজুদ করা হয়।
এব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের জানান, আমার জেলার সব গুদামের খাদ্য মজুদের বিষয়টি উপড় ন্যস্ত। তাই আমি শক্রবারে সেখানে যাই। কারন অভিযোগ থাকলে সেটি আমার দেখার বিষয় আছে। এর বেশী কিছু জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। সূত্রমতে, এই তুঘলকি কাÐে উপজেলা খ্যদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে ওই দুটি গুদাম সীলগালা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।