ইনপ্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬-দফা দাবি থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। ঐতিহাসিক ৬-দফা কেবল বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ নয়, সারা-বিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের অনুপ্রেরণারও উৎস এ কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬-দফা অন্যতম মাইলফলক।
তিনি আগামীকাল ৭জুন ‘ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন। আবদুল হামিদ বলেন,বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। তাঁর সে-স্বপ্ন পূরণে তথা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে প্রেসিডেন্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি ঐতিহাসিক এ দিনে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি ৬-দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের স্মৃতির প্রতি জানান বিনম্র শ্রদ্ধা।
আবদুল হামিদ বলেন,বাঙালির স্বাধীনতা একদিনে অর্জিত হয়নি। ১৯৪৮ সালে বাংলাভাষার দাবিতে যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, ’৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তার সফল পরিসমাপ্তি ঘটে। রচিত হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।
এরপর ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন,১৯৫৮ সালে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বায়ত্বশাসনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে লাহোরে সর্বদলীয় এক সম্মেলনে ঐতিহাসিক ৬-দফা প্রস্তাব পেশ করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন,‘শাসনতান্ত্রিক কাঠামো,কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা, মুদ্রানীতি,রাজস্ব ও করনীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক বাহিনী গঠন এই ৬-দফা প্রস্তাব পেশের মধ্যদিয়েই তিনি (বঙ্গবন্ধু) পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থকে তুলে ধরেন,যার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালির স্বাধিকার ও স্বায়ত্বশাসনের রূপরেখা।
প্রেসিডেন্ট বলেন,ঐতিহাসিক ৬-দফা ঘোষণার পর শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে বারবার গ্রেফতার করে এবং তাঁর উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। তা সত্ত্বেও তিনি (বঙ্গবন্ধু) ৬-দফার দাবি থেকে পিছপা হননি। তাঁর নেতৃত্বে দাবি আদায়ের আন্দোলন বেগবান হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে এ আন্দোলন সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। আবদুল হামিদ উল্লেখ করেন, ৬-দফার আন্দোলন স্তিমিত করতে শাসকগোষ্ঠি গ্রেফতার,নির্যাতনসহ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬-দফা দাবির সমর্থনে আওয়ামী লীগের আহ্বানে প্রদেশব্যাপি (তৎকালিন পূর্বপকিস্তান) সাধারণ ধর্মঘট চলাকালে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর মদদে পুলিশের গুলিতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১১ ব্যক্তি নিহত এবং অনেকে আহত ও গ্রেফতার হন।
সূত্র: বাসস