Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৮৩ দিন পর মুক্তি পেলেন নিরাপরাধ রুবেল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

অবশেষে ৮৩ দিন পর নিঃশর্ত মুক্তি পেলেন কারাগারে থাকা নিরাপরাধ মো. রুবেল (২৩)। হাইকোর্টের নির্দেশ ও শিবগঞ্জ থানা পুলিশের আবেদনে গতকাল নির্দোষ রুবেলকে নিঃশর্ত মুক্তির আদেশ দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবু কাহার। এরপর সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ছাড়া পান রুবেল। রুবেল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের ছোপাক গ্রামের মো. মন্টুর ছেলে।
নিজ এবং পিতার নামে মিল থাকায় সাজা খাটছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত নিরপরাধ রুবেল। ঘটনা তদন্ত করে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে চাপাই নবাবগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। ওই আদালতের ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার জানান, ‘এক রুবেলের বদলে জেলে আরেক রুবেল’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট শিশির মনির। শুনানি শেষে আদালত উপরোক্ত নির্দেশ দেন। অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান,আদালত প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে স্ব-প্রণোদিত হয়ে চাপাইনবাবগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেন। সেই সঙ্গে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেন। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয, ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর সেতুর কাছ থেকে গাঁজা সেবনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় পাঁকা ইউনিয়নের চরপাঁকা কদমতলা গ্রামের মন্টু আলীর ছেলে রুবেল আলী ওরফে রুবেল বাবুলকে (২৬)। ওইদিনই এসআই আবদুস সালাম রুবেল বাবুলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৬ ধারায় মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে তাকে জেলে পাঠানো হয়। ৫ দিন পর রুবেল মুক্তি পান। তিন দফা আদালতে হাজিরাও দেন। পরে হঠাৎ তিনি উধাও হয়ে যান। একই বছর ১০ জুলাই এসআই আব্দুস সালাম আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুবেল বাবুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর পরোয়ানাটি দীর্ঘসময় পড়ে ছিল শিবগঞ্জ থানায়। চলতিবছর ১০ মার্চ রাতে ওই পরোয়ানামূলে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ পাশের জামাইপাড়া গ্রামের মো. মন্টুর ছেলে মো. রুবেলকে (২৩) সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। গ্রামের নাম ভিন্ন হলেও আসামি ও তার বাবার নামে মিল থাকায় একজন নিরপরাধ অসুস্থ ব্যক্তিকে আড়াই মাস ধরে জেল খাটতে হচ্ছে।
নিরপরাধ রুবেলের বাবা মো. মন্টু এবং এলাকাবাসী জানান, রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে ভবন থেকে পড়ে কয়েক বছর আগে বন্দী রুবেলের দুই পা ভেঙে যায়। দুই বছর বিছানায়ই ছিলেন তিনি। দীর্ঘ চিকিৎসার পর কিছুটা হাঁটতে পারলেও বাম পায়ে শক্তি ফিরে পাননি। অভাবের তাড়নায় তিনি জামাইপাড়ায় পাঁকা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আতাউর রহমানের গ্রামের ফাঁকা বাড়িটি দেখাশোনা করতেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।অপরদিকে মামলার মূল আসামি রুবেল আলী বছরখানেক আগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তি-পেলেন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ