পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : বায়ুম-লের ওপরের দিকে আছে এমন এক স্তর যা সূর্যের রশ্মি সরাসরি আমাদের পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয়। এটাই ওজোন স্তর। বায়ুম-লের ওপরের দিকের এই ওজোন স্তর সূর্য থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মিকে এই পৃথিবীতে আসতে দিচ্ছে না। এই রশ্মিটি হচ্ছে আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন বা অতিবেগুনী তেজস্ক্রিয় রশ্মি। এর কারণে মানুষের ত্বকের ক্যান্সার থেকে শুরু করে চোখেরও বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে। অর্থাৎ ওজোন স্তর যদি না থাকে তাহলে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি এই পৃথিবীতে সরাসরি এসে পৌঁছাবে যা মানুষ, প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্যে ক্ষতিকর। নানা ধরনের কেমিকেল বা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই ওজোন স্তর, সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি হচ্ছে যা গলে পৃথিবীতে ঢুকে পড়ছে ক্ষতিকর রশ্মি।
এখন বিজ্ঞানীরা একটি সুখবর দিচ্ছেন। আর সেটি হলো: এসব গর্ত ক্রমশই ছোট হয়ে আসছে। গবেষকরা বলছেন, দক্ষিণ মেরুতে এন্টার্কটিকার ওপরে ওজোন স্তরের এই গর্তের পরিধি যে কমে আসছে এই দাবির পক্ষে তারা পরিষ্কার তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০০০ সালে ওই গর্তটির আকার ছিলো প্রায় ভারতের আয়তনের সমান। কিন্তু ১৫ বছর পর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে দেখা গেছে ওই গর্তটি প্রায় ৪০ লাখ বর্গ কিলোমিটার ছোট হয়ে গেছে।
মার্কিন প্রফেসর সুজান সলোমন এবং তার সহকর্মীরা মিলে এবিষয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছেন। তাদের সাথে ছিলেন যুক্তরাজ্যের লীডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও।
তারা ২০০০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্ট্র্যাটোসফেয়ারে ওজোনের পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখেছেন। আবহাওয়া বেলুন ও স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য তারা ব্যবহার করেছেন এই গবেষণায়। তারা দেখিয়েছেন, এই ১৫ বছরে এন্টার্কটিকার ওপরে প্রায় চল্লিশ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ওজোন স্তরের পাতলা হয়ে যাওয়াটা কমে এসেছে। এর অর্ধেকটাই হয়েছে পরিবেশে ক্লোরিনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে।
“আমরা জানতাম ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু আমাদের কাছে রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণের কোনো হিসাব ছিলো না যেটা দিয়ে আমরা বলতে পারবো যে ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে,” বলেন বিজ্ঞানী সুজান সলোমন।
তিনি বলেন, “ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এর পেছনে সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে ক্লোরোফ্লোরোকার্বন যা প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছিলো। তখন আমরা এন্টার্কটিকার ওপরে ক্লোরিন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ মেপে দেখি। গবেষণায় দেখেছি যে, অন্যান্য জায়গার তুলনায় সেখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এর কারণেই সেখানকার ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”
এন্টার্কটিকার ওপরে ওজোন স্তর ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণ মূলত ছিলো অতিরিক্ত ঠা-া এবং প্রচুর পরিমাণে আলো। এরকম ঠা-ার পরিবেশে ক্লোরিনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু এখন ওজোন স্তরের গর্ত বুজে আসার কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর পেছনে মূলত কারণ হচ্ছে সিএফসি গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা। ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিয়াল প্রোটোকলে এই সমঝোতা হয়েছিলো। এবং তারপর থেকেই পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে।
তিনি বলেন, “বিশেষ করে চীন ও ভারতের মতো দেশে এসব গ্যাসের ব্যবহারের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।”
বিজ্ঞানী সোলোমন বলছেন, এন্টার্কটিকার প্রায় ১০ কিলোমিটার ওপরে স্ট্র্যাটোসফেয়ারে ওজোন স্তর যে ক্রমশই ক্ষয় হয়ে যাচ্ছিলো ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা সেটি প্রথম লক্ষ্য করেন, ঊনিশশো আশির দশকের মাঝামাঝি।
১৯৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী সুজান সলোমন গবেষণা করে দেখান যে ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর সেটা হচ্ছে ক্লোরিন এবং ব্রোমিন আছে এরকম অণুর উপস্থিতির কারণে।
এই ক্লোরিন ও ব্রোমিন থাকে ক্লোরোফ্লোরোকার্বন গ্যাসগুলোতে, যেগুলোকে সংক্ষেপে বলা হয় সিএফসি।
এসব গ্যাস পাওয়া যায় হেয়ার স্প্রে থেকে শুরু করে রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনিং যন্ত্রগুলোতে। “ওজোন স্তরের পরিস্থিতিতে আপনি যেকোনো অসুস্থ রোগীর সাথে তুলনা করতে পারেন। প্রথম দিকে তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। এই অবস্থাটা হয়েছে আশির দশকে যখন বায়ুম-লে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরিন নির্গত হয়েছিলো। তারপর নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে আমরা যখন এই ক্লোরোফ্লোরোকার্বনের ব্যবহার কমিয়ে দিতে শুরু করি তখন ওজোন স্তর কিছুটা থিতু হয়ে আসে। অর্থাৎ রোগীর অবস্থা আর খারাপ হচ্ছিলো না। কিন্তু যেরকম ছিলো সেরকমই থেকে যায়।”
“এখনও কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ক্লোরিন রয়ে গেছে বায়ুম-লে। এসব ক্লোরিনের আয়ু ৫০ থেকে ১০০ বছর। এখন সেসব ধীরে ধীরে কমে আসতে শুরু করেছে। ফলে ওজোন স্তর যে হালকা হয়ে আসছিলো বা সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছিলো সেগুলোও এখন সেরে উঠতে শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০-৬০ সালের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”
স্ট্র্যাটোসফেয়ারে ওই ওজোন আপনা আপনিই সৃষ্টি হয়। আপনা আপনিই ধ্বংস হয়।
ওজোনের এই ভারসাম্য বজায় রাখে প্রকৃতি। অর্থাৎ এই ওজোন স্তর বহুকাল আগে থেকেই এই পৃথিবীকে ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে আসছে।
মানুষের মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন বহুদিনের। এখনও পর্যন্ত নভোচারীরা শুধু চাঁদে অবতরণ করতে পেরেছেন, কিন্তু তাদের স্বপ্ন আরো বহু দূরে, আপাতত মঙ্গল গ্রহে গিয়ে পৌঁছানো। এজন্যে একটি মহাকাশ যান তৈরিতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সংস্থাটি সম্প্রতি এই যানের বুস্টার পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
এই বুস্টারই স্পেসক্রাফট ওরিয়নকে নিয়ে যাবে মহাকাশে। নাসা বলছে, আজ পর্যন্ত যতো যান তৈরি করেছেন তার মধ্যে এটিই সবচে শক্তিশালী। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, ওরিয়ন এখন তাদের পরীক্ষামূলক ফ্লাইটের জন্যে প্রস্তুত। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।