পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ও ইমাম খতিব ঐক্যপরিষদের নেতৃবৃন্দ ‘ইফার ডিজি প্রণীত খুতবা অনুসরণ না করলে ব্যবস্থা’Ñ খাদ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তারা বলেন, ইফার খুতবা চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা ইমাম খতিবগণ মানতে বাধ্য নয়।
ইসলামী আন্দোলন
“ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রণীত জুমার খুতবা যারা অনুসরণ করে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে” বলে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের হুশিয়ারির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বিবৃতির মাধ্যমে বলা হয়েছিল এই খুতবা বাধ্যতামূলক নয় বরং নমুনাস্বরূপ। এখন আবার সরকারের খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, তাদের খুতবা অনুসরণ না করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, সরকার যদি তাদের খুতবা নির্দিষ্ট ও নির্ধারণসহ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে তাহলে দেশের ইমামগণ তা মানতে বাধ্য নয়। বিবৃতিতে মহাসচিব আরও বলেন, উপমহাদেশের সর্বজনশ্রদ্ধেয় বুজুর্গ আল্লামা আশরাফ আলী থানবী (রহ.)সহ হাক্বানী উলামা মাশায়েখ প্রণীত খুতবা অনুসরণ করে আসছেন দেশের অধিকাংশ ইমাম। তাঁদের প্রণীত খুবা সার্বজনীন। কাজেই একতরফা খুতবা সারা দেশের ইমামদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা ঈমানদার জনতা রুখে দাঁড়াবে। খুতবা চাপিয়ে দেয়ার পরিণাম কারো জন্যই সুখকর হবে না। তিনি খুতবা সম্পর্কে খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেন, এমন বক্তব্যের জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামিম মোহাম্মদ আফজাল সমালোচিত একজন ব্যক্তি, তার খুতবা নিয়ন্ত্রণ-এর উদ্যোগ কোনো ভালো আলামত নয়। ইমাম সম্মেলনে ব্যালে ড্যান্স মঞ্চায়নকারী ইফা ডিজির ওপর এ দেশের আলেমদের কোনো আস্থা নেই। কাজেই খুতবা চাপিয়ে দেয়ার অপরিণামদর্শী খেলায় মেতে উঠলে কারো জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।
ইমাম খতিব ঐক্যপরিষদ
সরকার জাতীয় ঐক্য গঠনের চেষ্টা করলেও এক শ্রেণির নেতা-মন্ত্রী ও আমলা কেবল হিংসা ও অনৈক্যই ছড়িয়ে যাচ্ছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন খুতবা প্রেরণ করে তা পাঠ করা বাধ্যতামূলক করেনি, তারা এটি অনুসরণ করার অনুরোধ করছে আর কোনো কোনো নেতা, মন্ত্রী এটি না পড়লে ইমামদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে হুমকি দিচ্ছেন। এরা সরকার ও ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে সচেষ্ট এবং বিদেশি শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত। গতকাল এক বিবৃতিতে ইমাম খতিব ঐক্যপরিষদের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুফতি আহমদুল হক স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ইমামদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে দেশের প্রায় ৫ লাখ মসজিদের ইমামকে অপমান করেছেন। এ জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। যে ইমামের পেছনে তিনি নামাজ পড়েন, ঈদ ও জুমার নামাজ পড়েন, যে ইমাম মৃত্যুর পর তার জানাজা পড়াবেন তাদের সম্পর্কে এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা কোনো স্বাভাবিক মানুষ বলতে পারে না। মন্ত্রী দাম্ভিকতার চরমে পৌঁছে গেছেন। ইফা ডিজির মুখেও ইমামদের ভবিষ্যত ভালো নয় এমন কথা শোনা গেছে। ভবিষ্যৎ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। কখন কার ভাগ্যে কী ঘটবে তা যেমন কেউ জানে না, তেমনই অন্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করার আগে প্রত্যেকেরই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করা উচিত।
ইমাম খতিব ঐক্যপরিষদ নেতৃবৃন্দ জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণ ও ইমামদের ধর্মীয় দায়িত্ব পালনে হস্তক্ষেপের যে কোনো উদ্যোগের নিন্দা জানান। তারা বলেন, খুতবা জুমার নামাজের অংশ। এটি আল্লাহ ও রাসূল (সা.) কর্তৃক নির্দেশিত। এতে সরকারের কিছু করণীয় নেই। বাংলা বয়ানে যে কেউ কিছু বলার অনুরোধ করতে পারে, ইসলামসম্মত হলে তা ইমামগণ রক্ষাও করতে পারেন। কিন্তু ইমামদের উপর বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেয়ার অধিকার কারো নেই।
নেতৃবৃন্দ খাদ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রী ও আমলাদের নিজেদের দায়িত্ব ও অধিকারের আওতায় থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশিত ইবাদত-বন্দেগীর উপর হস্তক্ষেপ খোদার উপর খোদকারীর শামিল। তাছাড়া সীমালঙ্ঘনকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।