Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাগরে মাছের জরিপ

প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১৬৫ কোটি টাকায় গবেষণা জাহাজ সংগ্রহ মজুদ ও আহরণের গাইডলাইন দেয়া হবে
শফিউল আলম : বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একান্ত পানিসীমায় বিচরণশীল মৎস্য সম্পদ জরিপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসে সাগরে মাছের জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হবে। এই লক্ষ্যে আনুষঙ্গিক কারিগরি প্রস্তুতিও গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া থেকে একটি জরিপ জাহাজ ক্রয় করা হয়েছে। অত্যাধুনিক কারিগরি প্রযুক্তির সমন্বিত জরিপ ও গবেষণা জাহাজ ‘আরভি মীন সন্ধানী’ সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) ও মালয়েশীয় সরকারের যৌথ অর্থায়নে ১৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশেষায়িত জাহাজটি সংগ্রহ করা হয়েছে। ‘আরভি মীন সন্ধানী’র দৈর্ঘ্য ৩৭.৮০ মিটার, জাহাজে কাজ করতে পারেন ২৮ জন গবেষক ও নাবিক। মূল ইঞ্জিনের ক্ষমতা ১৪০০ হর্স পাওয়ার, ১৮০০ আরএমপি। আগামী অক্টোবর অথবা নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙররত জরিপ ও গবেষণা জাহাজ ‘আরভি মীন সন্ধানী’র সামুদ্রিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই জাহাজের সাহায্যে জরিপ কার্যক্রমে বঙ্গোপসাগরে বিচরণশীল সামুদ্রিক বিশেষত অর্থকরী মাছের সম্ভাব্য মজুদ বা স্থিতি নিরূপণ করা হবে। সেই সাথে নির্ণয় করা হবে মাছের সর্বোচ্চ টেকসই বা সহনশীল আহরণসীমা (ম্যাক্সিমাম সাসটেইনএবল ইয়েল্ডিংÑএমএসওয়াই)। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞগণ প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা ও দিক-নির্দেশনা প্রদান করবেন। এর ফলে সামুদ্রিক মাছ আহরণ ব্যবস্থা হবে ভারসাম্যপূর্ণ ও সুষম। দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর পর বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক সীমায় (ইইজেড) মৎস্য সম্পদ জরিপ ও মজুদ নিরূপণের এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক জোনে মৎস্য সম্পদের জরিপ এবং মজুদ-স্থিতি নিরূপণের লক্ষ্যে কারিগরি বা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ষাটের দশকে বঙ্গোপসাগরে সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। সংস্থাটির জরিপে বঙ্গোপসাগরকে অভিহিত করা হয় ‘মৎস্য খনি’ হিসেবে। এবারের জরিপে কার্যক্রমেও এফএও’র বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানায় দায়িত্বশীল সূত্র। এফএও’র বিশেষজ্ঞ দল এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।
এদিকে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের সীমানার বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার প্রেক্ষাপটে বর্তমানে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র সীমা ও ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ইইজেড) উপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলভাগের ৭১৫ কিলোমিটার ব্যাপী তটরেখা থেকে ৪০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ৩২ হাজার ৪৪০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৬৮ হাজার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ছোট আকৃতির দেশীয় ট্রলার-নৌযান এবং জেলে নৌকা মাছ শিকার করে থাকে। তবে উপরোক্ত সমুদ্র অংশে সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোন বাণিজ্যিক বৃহাদাকারের ট্রলার (ট্রলার-জাহাজ) মৎস্য সম্পদ আহরণ করতে পারে না। সাগরে মৎস্য আহরণের দ্বিতীয় স্তরটি হলো ৪০ মিটারের পর থেকে ২০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত এলাকা। আর ২০০ মিটার গভীরতার এলাকা থেকে একান্ত অর্থনৈতিক জোনের সীমানা পর্যন্ত তৃতীয় স্তর। এই দু’টি স্তরে সরকার অনুমোদিত প্রায় ২৫০টি বাণিজ্যিক ট্রলার মাছ শিকারে নিয়োজিত রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে দেশীয় এবং বিদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ট্রলার-নৌযানের মাধ্যমে নির্বিচারে ও বেপরোয়াভাবে মাছ নিধন করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যুগোপযোগী ব্যবস্থাপনার অভাবে তা অনেকাংশেই রোধ করা যাচ্ছে না। এতে করে বঙ্গোপসাগরের মূল্যবান মৎস্য সম্পদ নির্বংশ হচ্ছে। মাছের খাদ্য-শৃঙ্খল প্রক্রিয়াও ব্যাহত হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে মাছের অধিকতর বিচরণশীল এলাকাসমূহ। বর্তমানে বাংলাদেশের ট্রলার-জাহাজবহর কত গভীরতায় মাছ ধরছে মৎস্য অধিদপ্তর তা স্থলভাগ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে না। এ বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতায় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩৩টি ট্রলারে ‘ভেসেল মনিটরিং সিস্টেম ডিভাইস’ সংযোজন করা হয়েছে। ২০০ মিটার গভীরতার বাইরে এবং আন্তর্জাতিক নৌসীমায় টুনা জাতীয় মাছ ধরার জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে সাগরের অগভীর অংশে মাছ বেশিহারে ধরা হলেও গভীর সমুদ্রের দিকে তুলনামূলক মাছ (টুনা জাতীয়) কম আহরণ করা হচ্ছে। এরফলে সাগরের মাছ শিকারে প্রতিনিয়ত ভারসাম্যহানি ঘটছে।
বিশেষায়িত জরিপ ও গবেষণা জাহাজ ‘আরভি মীন সন্ধানী’র সাহায্যে বঙ্গোপসাগরের মৎস্য সম্পদ জরিপের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আজম খান গতকাল (শনিবার) দৈনিক ইনকিলাব প্রতিবেদককে বলেছেন, এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দীর্ঘদিন পর সমুদ্রে আমাদের মৎস্য সম্পদের জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর মধ্যদিয়ে সাগরে মৎস্য সম্পদের নতুন দিক উন্মোচিত হবে। আমাদের সমুদ্র সীমায় মৎস্য সম্পদের মজুদ স্থিতি বা স্টক সম্পর্কে আমরা জানতে পারবো। বিভিন্ন অর্থকরী মাছের মাছের মজুদ অতীতের তুলনায় কতটা হারে বেড়েছে নাকি কমেছে তার ধারণা পাবো। বিশেষ করে সমুদ্রে কম গভীরতার ও সুগভীরের (ডিমারশাল ও পেলাজিক) মাছের মজুদ সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে। জরিপের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে মাছের ৪টি গ্রাউন্ডজুড়ে মাছের বিচরণশীলতা বা বংশ বিস্তারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যাবে। অর্থকরী মৎস্য সম্পর্কে অনেক অজানা দিকও বেরিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের সমুদ্র সীমার গভীরের দিকে বিচরণশীল মৎস্য সম্পদ সম্পর্কে অতীতে যথেষ্ট নিবিড়ভাবে গবেষণা করা হয়নি। এবার সেই আলোকে গবেষণা পরিচালনা করা হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা। সর্বোপরি এই জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য সম্পদের সর্বোচ্চ আহরণসীমা সম্পর্কে একটা গাইড লাইন বেরিয়ে আসবে। সাগরে মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য জরিপ পরিচালনা অপরিহার্য একটি দিক।
বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে মূল্যবান মৎস্য সম্পদ চরম অব্যবস্থাপনার শিকার। বিশ্বের সাগর-উপসাগর সমৃদ্ধ দেশসমূহের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সামুদ্রিক অর্থনীতির (ব্লুু-ইকোনমি) অন্যতম সম্পদের দিক হিসেবে বিবেচিত বিস্তীর্ণ বঙ্গোপসাগরের মৎস্য সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। জরিপের মাধ্যমে মজুদ নিরূপণ ছাড়া সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কখনোই সম্ভব নয়। জরিপ কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে বঙ্গোপসাগরে উপকূলভাগে মৎস্য শিকারের (কোস্টাল ফিশিং) ক্ষেত্রে মাছ ধরার নির্দিষ্ট জালের ফাঁস অনুমোদন, কারেন্ট জাল বন্ধসহ মাত্রাতিরিক্ত আহরণ কঠোরভাবে রোধ (ওভার ফিশিং রেগুলেট) করা জরুরী। সেই সাথে গভীর সমুদ্র (ডীপ সী ফিশিং) এলাকায় উন্নত প্রযুক্তির ট্রলারবহরের সাহায্যে ‘টুনা’ জাতীয় পেলাজিক (তলদেশীয়) মৎস্য শিকার করে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হতে পারে। ‘টুনা’ বা এ জাতীয় পেলাজিক মাছ গভীর সমুদ্রে প্রচুর মজুদ থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে শিকার করা যাচ্ছে মাত্র ৫ শতাংশেরও নিচে। অনাহরিত থাকায় গভীর সাগরের তলদেশীয় বিপুল পরিমাণ মাছ প্রকৃতির আপন নিয়মেই আপনা-আপনি বিরাণ হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া মিয়ানমার, ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডের অবৈধ ট্রলারবহরের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই দেশের মূল্যবান মৎস্য সম্পদ লোপাট হয়ে যাচ্ছে। এ অপতৎপরতা কঠোর হাতে দমন করা প্রয়োজন। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সামুদ্রিক মৎস্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞ সূত্র মতে, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক সীমা হরেক ধরনের মাছসহ সামুদ্রিক সম্পদে সুসমৃদ্ধ। এখানকার মূল ৩টি মৎস্য বিচরণ এলাকা ‘সাউথ প্যাসেচ’, ‘মিডলিং’ বা ‘মিডল গ্রাউন্ড’ এবং ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড’ হিসেবে পরিচিত। সেখানে মজুদ ও বিচরণশীল রয়েছে রূপচান্দা, কালাচান্দা, কোরাল, ইলিশ, লাক্ষা, ছুরি, পোয়া, লইট্টা, মাইট্টা, চিংড়ি, সুন্দরী, ফাসিয়া, টুনাসহ হরেক প্রজাতির অর্থকরী মাছ। সমুদ্র সীমা নিষ্পত্তির ফলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ কিলোমিটার এলাকায় সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু সেখানে কি পরিমাণ এবং কোন কোন প্রজাতির মাছের প্রধানত অর্থকরী মৎস্যের মজুদ ও বিচরণ রয়েছে, মাছের ঘনত্ব কেমন, মাছের প্রজনন অঞ্চল কোন জায়গাগুলোতে তা নিরূপণের জন্য জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। কেননা দীর্ঘদিন যাবত বলা হলেও গত ২৮ বছরে এ জরিপ পরিচালিত হয়নি। সাগরে মাছ শিকার করা হচ্ছে যথেচ্ছ ও অপরিকল্পিতভাবে।
অপার সম্ভাবনার খনি বঙ্গোপসাগর। সমুদ্রের অপরিমেয় পানিরাশির মাঝে প্রধান প্রধান যে সম্পদ বঙ্গোপসাগর তার বুকে ধারণ করে আছে তাতে রয়েছে হরেক জাত-প্রজাতির মাছ। সাগরে রয়েছে ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি। অর্থকরী ৪৭৬ প্রজাতির মাছ। প্রাণিজ প্রোটিনের বিরাট অংশের যোগান আসে সামুদ্রিক মাছ থেকেই। সাগরের বুকে, তলদেশে আর সুবিশাল আয়তনের উপকূলভাগ জুড়ে অমূল্য মৎস্য ভা-ার। যার আর্থিক মূল্য বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক পানিসীমায় (ইইজেড) মাছ শিকার করা হচ্ছে ভারসাম্যহীনভাবে। সাগর-উপকূলে ইলিশ, চিংড়িসহ সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণ, প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ, দেশীয় জেলেদের নিরাপত্তা প্রদান, বিদেশি ট্রলারের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাছ লুটপাট রোধসহ মৎস্য বিচরণ এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা টহল বজায় রাখা অপরিহার্য। এতে করে সৃষ্টি করা সম্ভব মাছের অভয়াশ্রম। এখন বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বেড়েছে। অনুরূপভাবে ফিশিং জোনও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের তুলনায় ৫ থেকে ৭ গুণ ফিশিং জোনের আয়তন বেড়ে গেছে। সাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে মাছ আহরণ করে রফতানি ও দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। সামুদ্রিক মৎস্যখাতে বিনিয়োগ অদূর ভবিষ্যতে আরও লাভজনক বিবেচিত হবে। কেননা গভীর সমুদ্রে ট্রলারবহর যোগে বিশেষ করে পেলাজিক মাছের বিশাল ভা-ার থেকে অনেক বেশি হারে মাছ শিকার করা কঠিন নয়।
আন্তর্জাতিক সমুদ্রসম্পদ বিজ্ঞানীরা বঙ্গোপসাগরকে অতীতকাল থেকেই ‘সুসমৃদ্ধ খনি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ষাটের দশকের জরিপে বঙ্গোপসাগরকে বলা হয় ‘মৎস্য খনি’। ১৯৫৮ সালে জাপানি গবেষণা ও সমুদ্র অনুসন্ধানী জাহাজ ‘খুশি মারো’ যোগে প্রথম জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এরপর ১৯৬০ সালে ‘কাগাওয়া মারো’ থেকে শুরু করে ১৯৮৪-৮৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আর্থিক সহায়তায় ‘অনুসন্ধানী’ নামক জরিপ জাহাজে বাংলাদেশের সন্নিহিত বঙ্গোপসাগরে বিশাল মৎস্য ভা-ারের মজুদ, স্থিতি ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নিরূপন করা হয়। বিশেষায়িত জাহাজের এসব জরিপে বেরিয়ে এসেছে, চিংড়ি, ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছে ভরপুর বঙ্গোপসাগর। এটি মাছের বংশ বৃদ্ধি ও দ্রুত বর্ধনের জন্য উর্বর ক্ষেত্র। বেপরোয়া মাছ শিকার নিয়ন্ত্রণ, পোনা নিধন বন্ধ, পরিবেশ দূষণ রোধ, মাছের বিচরণ এলাকা বা অভয়াশ্রম সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ তার সামুদ্রিক মাছ দিয়ে সবল অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • মেহেদি হাছান ১৯ জুন, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
    very informative.Thanks.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাগরে মাছের জরিপ

২৪ জুলাই, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ