Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশু জিহাদ সাব্বির সানজিদার একই পরিণতি আর কত?

প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : শিশু সানজিদা ও সাব্বিরের নিয়তি যেন একই। অতি সম্প্রতি রাজধানীর মহাখালীর পয়ঃনিষ্কাশন নালার পানিতে ডুবে প্রাণ হারায় ছয় বছরের শিশু সানজিদা আক্তার। আর গতকাল শুক্রবার সানজিদার মতোই স্যুয়ারেজ লাইন থেকে লাশ হয়ে ফিরল শিশু জুনায়েদ হোসেন সাব্বির। ১৯ ঘণ্টা পর মিরপুরের কমার্স কলেজের পেছনে পয়ঃনিষ্কাশন নালা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার করেছে চার বছরের শিশু জুনায়েদ হোসেন ওরফে সাব্বিরের লাশ। সানজিদার মতোই প্রতিবেশী সমবয়সীদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খেলতে গিয়ে স্যুয়ারেজ লাইনের নর্দমার মধ্যে পড়ে যায় শিশু জুনায়েদ।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা স্যুয়ারেজ নালা ও আশপাশের ময়লার স্তূপে উদ্ধার অভিযান চালায়। রাতে শিশুটির সন্ধান পাননি তারা। দ্বিতীয় দফায় গতকাল শুক্রবার ভোরে ফের অভিযান শুরু করে তারা। গতকাল বেলা ১০ টা ৫০ মিনিটে নালার মাথায় ময়লার মধ্যে লাশ পাওয়া যায় সাব্বিরের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিরপুর-১ নম্বর কমার্স কলেজের পেছনে ৬ নম্বর সড়কের পেছনে সিটি করপোরেশনের পয়ঃনিষ্কাশন নালা রয়েছে। ওই নালা কনক্রিটের ঢালাই। নালার কোল ঘেঁষে ছোট ছোট টিনের ঘর তৈরী করে বস্তির মত বসবাস করে জুনায়েদের পরিবারসহ আরো অনেকে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জুনায়েদ অন্য শিশুদের সাথে ওই নালার পাশে একটি সাঁকোর কাছে খেলা করছিলো। এরপর অন্য শিশুরা যার যার ঘরে ফিরলেও জুনায়েদকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। জুনায়েদের গাড়ি চালক বাবা আমির হোসেনসহ নানা ও মামারা তাকে খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিলো না। এক পর্র্যায়ে পরিবারের সদস্যরা ধারণা করেন জুনায়েদ ওই নালার নর্দমার মধ্যে পড়ে গেছে। তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। রাত ১১ টায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরির তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশী শুরু করেন। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা খোঁজার পরও জুনায়েদের কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে রাত ৩ টার দিকে ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করে। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে ৮ সদস্যের ডুবুরি ইউনিট পুনরায় উদ্ধার কাজ শুরু করেন। এসময় তাদের সাথে যোগ দেয় সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মী ও এলাকার কয়েকজন যুবক। তারা ঘটনাস্থলের আশপাশের এক কিলোমিটার পর্যন্ত নতুন করে তল্লাশী শুরু করেন। বেলা ১০ টা ৫০ মিনিটে ঘটনাস্থলের কয়েক গজ দূরে ভাটির দিকে একটি ময়লার স্তূপের মধ্যে তল্লাশী করে শিশুটির লাশ পায়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বলেন, নালায় খুব বেশি পানি ছিলো না। সেখানে হাঁটু পানি থাকলেও পানিতে স্রোত ছিলো। যার কারণে শিশুটি পড়ে যাওয়ার পর এক জায়গায় থাকেনি। স্রোতে তাকে দূরে নিয়ে গেছে। শাহ আলী থানার এসআই খোকন চন্দ্র দেবনাথ জানান, জুনায়েদের লাশ উদ্ধারের পর তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের অনুরোধে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। অনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ জুলাই রাজধানীর মহাখালীর পয়ঃনিষ্কাশন নালার পানিতে পড়ে যায় ছয় বছরের শিশু সানজিদা আক্তার। পরের দিন সকালে তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এছাড়াও ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুরে গ্যাস লাইনের পাইপের মধ্যে পড়ে মারা যায় শিশু জিহাদ। ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর দোলাইখালে নর্দমায় পড়ে মৃত্যু হয় শিশু নিরবের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশু জিহাদ সাব্বির সানজিদার একই পরিণতি আর কত?
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ