Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইএসের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে চীনা মুসলিমদের

প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞার ফলে শতাধিক চীনা নাগরিক আইএসে যোগ দিয়ে থাকতে পারে বলে গতকাল জানিয়েছে মার্কিন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। বেইজিং অনেক দিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, আইএস জিনজিয়াংয়ের মুসলিম প্রধান এলাকা থেকে উইঘুরদের তাদের দলে ভেড়াচ্ছে। চীনের আরো অভিযোগ বহিঃশক্তি সেই এলাকাসহ চীনের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার বিস্তার ঘটাচ্ছে যার ফলে ইতোমধ্যেই শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। একই সাথে কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কিছু ইসলামী নিয়মকানুন পালনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। যেমন লম্বা দাড়ি রাখা, রমজানে রোযা পালন। তাদের বক্তব্য, এগুলো ‘ইসলামিক চরমপন্থা’র প্রতীক।
আইএস যোদ্ধাদের ফাঁস হয়ে যাওয়া তালিকা বিশ্লেষণ করে ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা নিউ আমেরিকা ফাউন্ডেশন লিখেছে, ‘এই নীতি মানুষকে সেদেশ ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় খুঁজে নিতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে কাজ করেছে’।
জিহাদী গ্রুপ থেকে দলত্যাগীদের নিয়ে আসা সাড়ে তিন হাজার যোদ্ধার তালিকা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ১১৪ জন এসেছে জিনজিয়াং থেকে। জিহাদী সরবরাহ তালিকায় তাদের অবস্থান পঞ্চম এবং সউদী আরবের তিনটি ও তিউনিসিয়ার ১টি স্থানের পরেই রয়েছে সেই এলাকা।
বেইজিং নিয়মিত অভিযোগ করে আসছে যে, পূর্ব তুর্কমেনিস্তান ইসলামিক আন্দোলন (ইটিআইএস) জিনজিয়াংয়ে বিভিন্ন সময়ের সহিংসতার পেছনে রয়েছে। ব্রিটেনের উচ্চ কক্ষ গত সপ্তাহে এই সংগঠনকে সন্ত্রাসী তালিকায় স্থান দিয়ে একটি বিল পাস করেছে। কিন্তু বহু নিরপেক্ষ বিশ্লেষক সন্দেহ পোষণ করেন যে, প্রবাসী উইঘুর গ্রুপগুলো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাথে মিলে শক্তি অর্জন করছে। কেউ কেউ সম্পদে ভরপুর এই অঞ্চলের ওপর চীনা দমন নীতিকে এই কারণেই সমর্থন করে থাকেন।
আইএস তালিকায় উল্লেখিত জিংজিয়াং থেকে নিয়োগকৃত ব্যক্তিদের সবার নাম যুক্ত রয়েছে তুর্কমেনিস্তান বা পূর্ব তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে। সাধারণতঃ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনরত উইঘুর মুসলিমরা তাদের অঞ্চলকে তুর্কমেনিস্তান বলে থাকে।
যদিও গবেষণা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নিয়োজিত ব্যক্তিদের জিহাদের ক্ষেত্রে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। জিনজিয়াং থেকে যারা আইএসে যোগ দিয়েছে তাদের অধিকাংশই কম শিক্ষিত, ভ্রমণের তেমন কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই এমনকি সম্ভবত বিবাহিতও নয়। তাদের অত্যন্ত নিম্নমানের ধর্মীয় প্রশিক্ষণ রয়েছে বলে মনে হয়।
তালিকায় শিশুদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাদের একজনের বয়স মাত্র ১০ বছর। তারা তাদের পরিবারের সাথে আইএসে যোগ দিয়েছে বলে কাগজপত্র বিশ্লেষণে জানা যায়।
২০১৪ সালের মার্চে দক্ষিণপশ্চিমের শহর কুনমিনের রেলস্টেশনে ছুরিকাঘাতে ৩১ জন মারা যায়। এসময় ৪ জন হামলাকারীকে হত্যা করা হয়। এর জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করা হয় এবং চীনের মিডিয়া একে চীনা নাইন/ইলেভেন বলে আখ্যায়িত করে। দু’মাস পর জিনজিয়াং অঞ্চলের রাজধানী উরুমকির প্রধান রেলস্টেশনে একটি বোমা হামলা চালানো হয়। সে সময় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সে অঞ্চল সফর করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই বছরই আরো পরের দিকে উরুমকির একটি মার্কেটে এক হামলায় ৩৯ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বহু মানুষকে বিচারের সম্মুখিন করা হয় এবং দেখা যায় ব্যাপক মৃত্যুদ-। সূত্র : এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইএসের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে চীনা মুসলিমদের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ