Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিমাসে কেরোসিনে ব্যয় হচ্ছে ২ কোটি ৪০ লক্ষাধিক টাকা

প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা নগরী ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গ্যাস সঙ্কটে ভুগছে ১০ হাজারেরও বেশি আবাসিক গ্রাহক। প্রতিদিন কেরোসিনের চুলার পেছনে এসব গ্রাহকের বাড়তি ব্যয় হচ্ছে ৮ লাখের বেশি টাকা। যা প্রতিমাসে দাঁড়ায় ২ কোটি ৪০ লাখের বেশি টাকা।
আবার গ্যাস সঙ্কটে ভুক্তভোগী এসব গ্রাহকরা প্রতি মাসে গ্যাস বিল জমা দিচ্ছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। নগরীর কিছু কিছু এলাকায় গ্যাসের প্রেসার স্বাভাবিক থাকলেও এসব এলাকা ঘেঁষা অন্যান্য গ্রাহকরা দিন-রাত গ্যাস সঙ্কটে ভুগছে। কিন্তু এর কোন ব্যাখ্যা নেই বিজিডিসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে।
টানা আড়াই মাস ধরে গ্যাস সঙ্কটের কারণে কুমিল্লা নগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অন্তত ১০ হাজার আবাসিক গ্রাহকের বাসা-বাড়িতে গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বলে না উঠায় সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গৃহিণীদের। রাতে যে সময়ে চুলায় গ্যাস আসে তখন তো রান্না করার সুযোগ ও মানসিকতা থাকে না। পরিপূর্ণভাবে গ্যাস পাবার দাবীতে ইতিমধ্যে গ্রাহকরা রাস্তায় নেমেছেন। কিন্তু বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লি. (বিজিডিসিএল) বর্তমানে গ্যাসের প্রেসার কমে যাওয়ার যে সঙ্কট শুরু হয়েছে তা সমাধানের কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। বিজিডিসিএল’র কর্তৃপক্ষ বলছেন চাহিদা অনুযায়ি গ্যাস না পাওয়ায় এবং শীতে গ্যাসের অপব্যবহার না কমায় সঙ্কট কাটিয়ে উঠা যাচ্ছে না।
কুমিল্লা নগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অন্তত ১০ হাজার গ্রাহকের প্রতিদিনের সকাল শুরু হয় গ্যাস দুর্ভোগের মধ্যদিয়ে। আর এ দুর্ভোগ চলে রাতের বিছানায় যাওয়া পর্যন্ত। গ্যাসের চুলায় কখনো আগুনের তিব্রতা মিটমিট, কখনো একেবারে না জ্বলায় সকালের নাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে দুপুর ও রাতের খাবার রান্নাও গ্যাসের চুলায় উঠে না। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে গ্যাস সঙ্কটে আক্রান্ত ১০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক উপায় না থাকায় কেরোসিনের স্টোভ ব্যবহার করে বাড়তি খরচ লাগিয়ে খাবার রান্নার কাজ সারছেন। আবার ১০ হাজারের বাইরে আরো ২/৩ হাজার গ্রাহক রয়েছেন যারা বিকল্প ব্যবস্থায় সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করছেন। বর্তমান বাজারে এক লিটার কেরোসিনের দাম ৮০ টাকা। প্রতিটি পরিবারে তিন বেলা রান্নার জন্য কম করে হলেও এক লিটার কেরোসিন জ্বলে। সেই হিসেবে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের প্রতিদিন কেরোসিনে ব্যয় হচ্ছে ৮ লাখ টাকা। প্রতিমাসে ২ কোটি ৪০ টাকার কেরোসিন খরচ করেও নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রতি মাসে গ্যাসের বিল জমা দেয়া হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। গ্যাসের জন্য ভোগান্তি ও বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কেরোসিনের পেছনের প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা খরচে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ইতিমধ্যে নগরীর দক্ষিণাঞ্চলের গ্রাহকরা গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহের দাবীতে রাস্তায় নেমেছেন। এসব গ্রাহকরা দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের চলমান সঙ্কট সমাধান না করলে মহাসড়ক অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
গ্যাস সঙ্কট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লি. (বিজিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী নিজামুল হাসান শেরিফ বলেন, ‘কুমিল্লা জেলায় আগের তুলনায় আবাসিক গ্রাহক বেড়ে প্রায় এক লাখে দাঁড়িয়েছে। যাদের অধিকাংশই শীতের মৌসুম শুরু হতেই গৃহস্থলি কাজে ব্যবহারের জন্য গ্যাসের অধিক মাত্রার প্রেসার পান না। ফলে রান্না-বান্নার সমস্যা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরেই এখানে এধরনের সমস্যা চলে আসছে। এধরনের সমস্যা সমাধানের কোন উপায় নেই। চাহিদার বিপরীতে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন তা মেটানো যাচ্ছে না’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতিমাসে কেরোসিনে ব্যয় হচ্ছে ২ কোটি ৪০ লক্ষাধিক টাকা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ