Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমার ‘বাড়ির পাশে গণতন্ত্র’

প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টালিন সরকার : বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে বাংলাদেশের অনেক মানুষ জীবিকার সন্ধানে বার্মায় যাতায়াত করতেন। তখন থেকেই মিয়ানমারের সাথে এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক। ইংরেজ শাসনের যাঁতাকল থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয় ১৯৪৭ সালে। অতঃপর পাকিস্তানের দুর্বিষহ শাসন। সে সময় দুই দেশের মানুষের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন বাণিজ্য হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার কাঠের দোকানের একটি দোকানও খুঁজে পাওয়া যাবে না যে, যেখানে মিয়ানমারের কাঠের তৈরি আসবাব বিক্রি হচ্ছে না। অর্ধশত বছর পর সেই দেশের জনগণের ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র ফিরে আসায় বাংলাদেশের মানুষ দারুণ খুশি। প্রতিবেশী দেশে গণতন্ত্র এসেছে; জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত অং সান সুচির দলীয় সরকার এখন ক্ষমতায়। কিন্তু আমরা?
পৌরসভা নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে গিয়েছিলেন। সেখানে এক সভায় তিনি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের ‘নৌকা’র প্রার্থীকে জেতানোর অপতৎপরতা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রশাসন ও দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী পরাজিত হলে কি আকাশ ভেঙে পড়ত? আমাদের সরকারের কি পতন হয়ে যেত? দেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত সৈয়দ আশরাফের অসন্তোষ প্রমাণ দেয় জনগণের ভোটের অধিকারের নামে সেখানে পৌর নির্বাচনে কী ঘটেছে। ব্যক্তিগত জীবনে ধীরস্থির ব্যক্তিত্বসম্পন্ন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত সৈয়দ আশরাফের ওই বক্তব্য নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে উপসম্পাদকীয় লিখেছেন বাম রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো। বাম রাজনীতির মুক্তচিন্তক রনো ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা সৈয়দ আশরাফের বক্তব্য, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার হারানো নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। শুধু সৈয়দ আশরাফ আর হায়দার আকবর খান রনো নয়; দেশের শত শত রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, কর্মজীবী দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ ভোটের অধিকার হলো গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে লড়াই করেছেন। সেই বঙ্গবন্ধুর দেশে তারই দল যখন ক্ষমতায় তখন গণতন্ত্রের এ কি হাল! ভোটের নামে ছেলেখেলা! মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের নামে ভোটের অধিকার নির্বাসনে পাঠিয়ে জনগণকে উন্নয়নের ‘হাওয়াই মিঠাই’ খাওয়ানো হচ্ছে। কিন্তু গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন কি টেকসই হয়? মিয়ানমারের শাসকরা গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে উন্নয়নের চেষ্টা করেছে; কিন্তু সফলতা আসেনি। যখন রেললাইনের সমান্তরাল রেখার মতো উন্নয়ন ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চালানোর কৌশল গ্রহণ করা হয় তখন মিয়ানমারে নতুন সূর্যের উদয় ঘটে। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ ও সম্পদশালী ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি এখন আদিকালের ব্রহ্মদেশ নামের ওই দেশটির দিকে। নতুন নতুন বিনিয়োগ করতে তারা মিয়ানমারমুখী হচ্ছেন। কারণ ওই গণতন্ত্র।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। সেই গণতন্ত্র এখন নিভু নিভু। মানুষের ভোটের অধিকার ‘চাপা’ দিয়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি শোনানো হচ্ছে। অথচ বাড়ির পাশে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের উৎসব চলছে। বাংলাদেশের দুই কাছের প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমার। ভারতে গণতন্ত্র দীর্ঘজীবী হলেও মিয়ানমারে সেটা ছিল না। সেখানে গণতন্ত্র নিয়ে এসেছেন বর্মী জাতির পিতা এবং স্বাধীনতার স্থপতি অং সানের নোবেল জয়ী কন্যা অং সান সুচি। রোহিঙ্গা মুসলমানদের সম্পর্কে সুচির ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও গণতন্ত্রের জন্য লড়াকু জীবন, দীর্ঘ কারাবাসে তার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অনুরাগ বহু পুরনো। তার প্রতি রয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিক ও জনগণের অপরিসীম শ্রদ্ধা। এক সময় চট্টগ্রাম-নোয়াখালীর মানুষ রেঙ্গুনকেন্দ্রিক ব্যবসার পত্তন করলেও অনেকেরই ধারণা, দেশটির সঙ্গে বুঝি বহুকাল আগ থেকেই এদেশের বিরোধ-বিসংবাদের সম্পর্ক। এই ধারণার অন্যতম কারণ রোহিঙ্গা ইস্যু। কিন্তু গত কয়েকশ’ বছরের ইতিহাসে দেখা যায়, বার্মা নামের দেশটির রাজাদের সঙ্গে বাংলার শাসনকর্তাদের মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। অর্ধশত বছর পর সেই মিয়ানমারে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হওয়া এবং গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু করায় প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশীরা নিবিড়ভাবে নজর রাখছেন। অং সান সুচি কিভাবে তার দলকে নেতৃত্ব দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মিয়ানমারে গণতন্ত্র এনেছেন তা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। বিশেষ করে যেসব দেশে জনগণের ভোটের অধিকার ছিন্নভিন্ন এবং গণতন্ত্রের ঘাটতি চলছে তাদের কাছে বিরাট একটা শিক্ষণীয় বিষয় মিয়ানমার। অং সান সুচি অনুসরণীয় হচ্ছেন পরাজিত প্রার্থীদের প্রতি তার পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল আচরণ প্রদর্শন করার জন্য। নির্বাচনে বিজয় এবং ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশবাসীকে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, পরাজিত প্রার্থীও একই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শ্রদ্ধাভাজন অংশীদার। যারা বিরোধী দলে বসেছেন তারাও অভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শুধু তাই নয়, তার দলের এমপিরা যাতে সংসদে শুদ্ধাচারণ করেন সে জন্য তাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সভ্য-ভব্য আচরণ শেখানো হয়।
মিয়ানমার কার্যত বিশ্ব থেকে ছিল বিচ্ছিন্ন। দেশটির শাসকরা ধরেই নিয়েছিলেন ভোট ও ব্যালটের শক্তিকে অস্বীকার করে জনগণকে ‘উন্নয়নের হাওয়াই মিঠাই’ খাইয়ে আর বেয়ারাদের জুলুম-নির্যাতন করে গদিতে টিকে থাকা যাবে। তারা সব চেষ্টাই করেছেন। ক্ষমতা ধরে রাখতে এমন ফন্দিফিকির নেই যে, সেটা তারা প্রয়োগ করেননি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। অতঃপর তারা গণতন্ত্রে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। মিয়ানমার গণতন্ত্র ও উন্নয়নে একসঙ্গে হেঁটেছে। এতে করে অর্থনৈতিক সাফল্যের মুখও দেখেছে। দেশটি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। খনিজ, আকরিক, তেল, গ্যাস, মূল্যবান পাথর সবই আছে। মিয়ানমার প্রাকৃতিক কাঠ সারাবিশ্বে সরবরাহ করে। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ তেল ও গ্যাস খাতে সীমাবদ্ধ থাকলেও দেশটি উৎপাদনভিত্তিক বিনিয়োগ আকর্ষণে মনোযোগী হয়েছে। পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিদেশী বিনিয়োগ হওয়ায় দেশটি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে। পর্যটন শিল্পও দেশটির একটি সম্ভাবনাময় খাত। মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরে আসায় ধারণা করা হয় দেশটি কয়েক বছরের মধ্যেই দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশে পরিণত হবে। দেশটির বড় অর্থনৈতিক সুবিধা হচ্ছে মিয়ানমার দশ-জাতির আশিয়ানের সদস্য। বিশ্বের সফল তিনটি বাণিজ্য বলয়ের মধ্যে অন্যতম আশিয়ান। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিনস, ব্রুনাই, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস ও মিয়ানমারকে নিয়ে গঠিত এ বাণিজ্য সংস্থা। বিশ্ববাণিজ্যের প্রায় ২৪ শতাংশ এ জোটের নিয়ন্ত্রণে। শুধু তাই নয়, প্রতি বছরই বিশ্ববাণিজ্যে তাদের শেয়ার বাড়ছে। বাণিজ্য বৃদ্ধির কারণে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে মিয়ানমারের বাণিজ্য সম্পর্ক এখন গভীর থেকে গভীরতর। উন্নয়ন আর গণতন্ত্র পাশাপাশি চলায় অর্থনৈতিক সাফল্য এসেছে; গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। শেষ হাসি গণতন্ত্রহীন শাসকের নয়; হাসি দেখা গেল গণতন্ত্রের নেত্রী অং সান সুচির মুখে। মূলত এই বিজয়ের হাসি আসলে গণতন্ত্রের। ২৫ বছর আগে ’৯০ দশকে নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিজয় লাভ করে সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু তাদের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। বরং ১৯৮৯ সালে গৃহবন্দী করা হয় সুচিকে। ১৫ বছর গৃহবন্দী থেকে ২০১০ সালের শেষ দিকে মুক্তি পান তিনি। মাঝে অল্প সময়ের জন্য মুক্তি পেলেও দেশে ফিরতে দেয়া হবে না এ শংকায় দেশ ছাড়েননি। এমনকি বিদেশে স্বামী-সন্তানদের কাছেও। ২৫ বছর পর ২০১৫ সালে ৮ নভেম্বর নির্বাচনে জিতে সুচি প্রমাণ করেছেন রাজনীতিকদের আত্মবিশ্বাস, সৎ সাহস, দৃঢ় মনোবল থাকলে সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। মিয়ানমার নতুন সূর্যের আলোয় আলোকিত হচ্ছে, প্রতিষ্ঠা পেয়েছে গণতন্ত্র। শুরু হয়ে গেছে সংসদ অধিবেশন।
এখন সুচির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা মুসলমানদের অধিকার নিশ্চিত করা। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ১৬৬৫ খ্রিষ্টাব্দে শায়েস্তা খানের ছেলে বুজর্গ উমেদ আলী খান চট্টগ্রাম দখল করে নিলে আরাকান রাজা দুর্বল হয়ে পড়েন। অতঃপর আরাকান রাজ্যের কিছু অংশ ব্রক্ষদেশে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। স্বাধীন আরাকান রাজ্যে মুসলমান রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান বার্মা আক্রমণ করলে আরাকানে বসবাসরত রোহিঙ্গারা বৃটিশদের পক্ষাবলম্বন করে। আর রাখাইনরা জাপানিদের পক্ষ নেয়। যুদ্ধে বৃটিশদের প্রাথমিক পরাজয় ঘটলে তারা আরাকান থেকে বিতাড়িত হন এবং জাপানি সৈন্য ও রাখাইনদের হাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের শিকার হন। ১৯৪২ সালের ২৮ মার্চ এক দিনে প্রায় ৫ হাজার মুসলিম রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। রোহিঙ্গা মুসলমানদের সঙ্গে ওই যে বিরোধ শুরু হয় সেটা এখনো চলছে। ১৯৬২ সালে জেনারেল নি উইন ক্ষমতা গ্রহণ করলে নাগরিক হিসেবে রোহিঙ্গা মুসলমানরা চরম বঞ্চনার মুখে পড়েন। সামরিক বাহিনী থেকে সকল মুসলমান রোহিঙ্গাদের বাদ দেয়া হয় এবং সরকারের অন্যান্য অংশ থেকেও তাদের অপসারণ করা হয়। ফলে তারা নিজ দেশে পরবাসী এবং সমাজের নিচু শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হয়। অতঃপর ১৯৮২ সালে সামরিক সরকার প্রবর্তিত নাগরিক আইনের মাধ্যমে মুসলিম রোহিঙ্গাদের সর্বনাশ করা হয়। ওই আইনে বলা হয় যারা ১৮২৩ সালের পরে মিয়ানমারে এসেছেন তারা মিয়ানমারের নাগরিক হতে পারবে না। চরম বঞ্চনার মুখে মুসলিম রোহিঙ্গারা বাধ্য হয়েই আরাকান রাজ্যের স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। মুসলিম রোহিঙ্গা ছাড়াও মিয়ানমারের অন্য অংশে কাচিন জাতিগোষ্ঠী স্বাধীনতার দাবিতে এ সময় সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। ১৯৭৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সরকার আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা বিদ্রোহ দমনে অপারেশন ‘কিং ড্রাগন’ পরিচালনা করে। সামরিক বাহিনীর হাতে এসময় মুসলিম রোহিঙ্গারা হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের মুখে পড়ে। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়। প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মুসলিম রোহিঙ্গা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। যারা বাংলাদেশে আসতে পারেনি তারা থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেয়। লাখ লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা যাত্রাপথে গভীর সমুদ্রেই হারিয়ে যায়। ১৯৯১-১৯৯২ সালেও রোহিঙ্গাদের ওপর একই রাষ্ট্রীয় বর্বরতা। এ সময়ও হাজার হাজার মুসলিম রোহিঙ্গা দেশান্তরিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩ লক্ষাধিক, থাইল্যা-ের শরণার্থী শিবিরে এক লাখ ১০ হাজার ও মালয়েশিয়ায় ৩০ হাজার মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থী মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় সুচির জন্য রাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ যেমন চ্যালেঞ্জ তেমনি মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরে দেয়াও চ্যালেঞ্জ। কারণ নোবেল পুরস্কার তার ঝুলিতে। বিশ্ববাসীর দৃষ্টি তার দিকে। এ অবস্থায় শুধু ধর্মীয় কারণে দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করা কঠিন হবে। মুসলিম রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সুচির কর্মপন্থা ভবিষ্যৎ বোঝা যাবে; তবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন জাতির পাশের দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসায় হাসলেও আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখলে মন বেদনাহত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার ‘বাড়ির পাশে গণতন্ত্র’
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ