পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটিতে রিপাবলিকান দলের টেড ক্রুজ জয়ী হয়েছেন। তিনি বর্তমানে টেক্সাসের সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আইওয়া ককাসে তিনি বিতর্কিত-সমালোচিত মনোয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চরম ধরাশায়ী করেছেন। ট্রাম্প প্রচার-প্রচারণায় বেশ এগিয়ে থাকলেও ক্রুজের কাছে তার শোচনীয় পরাজয় অনেকের কাছেই বিস্ময় মনে হয়। আইওয়ার প্রাইমারিতে ভোটের দৌড়ে তিনি দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও তৃতীয় অবস্থানের প্রার্থীর সঙ্গে তার ব্যাবধান যৎসামান্যই। ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিও রয়েছেন তৃতীয় অবস্থানে।
আইওয়াতে বরাবরের মতোই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে ভোটাভুটিতে অংশ নেন ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দলীয় সমর্থকরা।
ডেমোক্রেটিক দলে হিলারি ক্লিনটনের সাথে বার্নি স্যান্ডার্সের তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতা হয়। এতে দুই জনেরই ভোট সমান-সমান হয়। তাদের মধ্যে অচলাবস্থা ভাঙতে মুদ্রা দিয়ে টসের ব্যবস্থা করা হয়। এতে হিলারি জেতেন।
যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আইওয়াতে প্রথম ভোটাভুটি হলো। এতে সুপরিচিত কট্রর রক্ষণশীল টেড ক্রুজ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক ট্রাম্পকে বিপুলভাবে পরাজিত করেন।
ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের ভোট হিলারি ও স্যান্ডার্সের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ হয়ে যায়। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ও তার সমাজতন্ত্রী প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের মধ্যে অচলাবস্থা দেখা দেয়। রাজ্যের প্রাইমারিতে হিলারি পান ৫০ দশমিক এক ভাগ ভোট এবং স্যান্ডার্স পান ৪৯ দশমিক তিন ভাগ ভোট। এই অচলাবস্থা ভাঙতে দুইজনের মধ্যে টসের ব্যবস্থা করা হয়। তাদের মধ্যে ভোটের ব্যবধান এতই কম ছিল যাতে কারো জয়লাভই সুস্পষ্ট ছিল না। এই অবস্থা নিরসনেই টসের ব্যবস্থা করা হয়। দলের নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবধান এক ভাগের কম হলে টসের ব্যবস্থা করতে হয়।
দি ডেস ময়েনস রেজিস্টার জানায়, ডেভেনপোর্ট এবং ডেস ময়েনস প্রিসিন্ট-এ হিলারি টসে জয়লাভ করেন। পত্রিকাটি আরো জানায়, এরপর দলের নেতারা এমেস প্রিসিন্ট’র মধ্যে আরেকটি টসের নির্দেশ দিলে তাতেও হিলারিই জেতেন।
রিপাবলিকান ককাসে টেড ক্রুজ ২৮ শতাংশ ভোট পান। ট্রাম্প পেয়েছেন ২৪ শতাংশ এবং মার্কো রুবিও পেয়েছেন ২৩ শতাংশ ভোট।
আইওয়াতে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী বাছাইয়ে জিতে ক্রুজ তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমেরিকার এখন নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। কয়েকশ’ উৎফুল্ল সমর্থকের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় তিনি বলেন, এটা তৃণমূলের বিজয়। তিনি বলেন, ঈশ্বরের আশির্বাদধন্য আইওয়া। এখানকার জনগণ কথা বলেছে। আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট মিডিয়া, ওয়াশিংটনের ক্ষমতাশালী মহল বা লবিস্টরা নির্বাচিত করবে না। আমেরিকার সাধারণ জনগণ তদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবেন। জনগণই হচ্ছে অসম্ভব শক্তিশালী। তাদের মধ্যেই নিহিত রয়েছে এই জাতির সকল সার্বভৌম ক্ষমতা।
সমাজতন্ত্রীদের সম্পর্কে বৃটেনের সাবেক রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের একটি উক্তি উল্লেখ করে ক্রুজ বলেন, সমাজতন্ত্রের সমস্যা সম্পর্কে থ্যাচারের পর্যবেক্ষণ ছিল শেষ পর্যন্ত আপনি অন্যের অর্থ শেষ করে ফেলবেন। ক্রুজ অভিযোগ করেন যে, হিলারিও একজন সমাজতন্ত্রী যদিও তিনি তা স্বীকার করেন না। ক্রুজ ‘ওয়ার্শিংটন চক্রের’ বিরুদ্ধেও কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজধানী ওয়াশিংটনে একটি ‘দুর্নীতিবাজ শ্রেণী’ আমেরিকান জনগণকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে।
এভেনজেলিকাল খ্রিস্টান টেড ক্রুজ আইওয়াতে তার প্রচারণায় ধর্মের উপর সবচেয়ে জোর দেন এবং সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় বাইবেল থেকে উদ্ধৃতি দেন। তিনি সমর্থকদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, একটা রাতের জন্য কান্না সহ্য করা হতে পারে তবে সকালে আনন্দ আসবেই। ক্রুজ বলেন, আইওয়ার জনগণ এখন গোটা আমেরিকা ও বিশ্বের কাছে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে নতুন সকাল আসছে।
অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় নির্বাচনের জন্য এখনো রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে সামনের সারিতেই রয়েছেন। আইওয়া ককাসের ফলাফল সাহসের সঙ্গে গ্রহণ করে তিনি টেড ক্রুজকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, আইওয়ার প্রাইমারিতে ভোটাররা যেভাবে আমাকে গ্রহণ করেছে তাতে আমি নিজেকে সত্যি সম্মানিত বোধ করছি। তিনি বলেন, আইওয়াতে না আসার জন্য অনেকেই আমাকে পরামর্শ দিয়েছিল কিন্তু আমি এখানে এসেছি এবং ভোটের এ ফল আমি আনন্দের সঙ্গে মেনে নিচ্ছি।
টস নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে নানা মন্তব্য
আইওয়া ককাসে ৬টি প্রিসিন্ট-এ হিলারি ক্লিনটন না বার্নি স্যান্ডার্স জিতেছেন তা নির্ধারণের জন্য মুদ্রার টসের ব্যবস্থা করা হয়। হিলারি ক্লিনটন ডেস ময়েনস’র দুইটিসহ নিউটন, এমেস, ওয়েস্ট ব্রাঞ্চ ও ডেভেনপোর্ট’-এর ভোট টসে জিতে যান। আইওয়ার ডেমোক্র্যাট ককাসের নীতিমালা অনুযায়ী দুই বা ততোধিক প্রার্থীর মধ্যে টাই হলে তা ভাঙতে টসের ব্যবস্থা করা হয়।
এই টস নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে অনেকেই নানারকম মন্তব্য করেছেন। স্যাগ রোজেনফেলস বলে একজন মন্তব্য করেছেন যে, ডেস ময়েনস’র একটি মুদ্রার টস হারা মানে প্রার্থীর মাথা নত হয়ে যাওয়া। এখানে জিতেছেন হিলারি। এড্রিউ টেডলক লিখেছেন, ওয়েস্ট ডেভেনপোর্টে মুদ্রা টস করে প্রার্থীর জন্য হারা-জেতা অবিশ্বাস্য। এখানেও টসে হিলারি জিতেছেন। ফার্নান্ডো পেইনাডো লিখেছেন, আইওয়া ককাস কীভাবে কাজ করে এটা হচ্ছে তাই। টাই-এর সমাধান টস। ডিন লেন বলছেন, নিউটন প্রিসিন্ট’এ হিলারি ও স্যান্ডার্স দুইজনেই ৩৪টি ভোট করে পান। তাদের টাই ভাঙতে টস করা হয় এবং হিলারিই জেতেন। জুলিয়া লাবুয়া লিখছেন, ওয়েস্ট ব্রাঞ্চেও একই পরিস্থিতি, একই ফল। লিন্ডসে জেনি বলছেন, টসে প্রার্থীরও ভাগ্য নির্ধারণের এই ধারণার বিরোধী আমি। পরিস্থিতি দুইজনের জন্যই সমান এই অবস্থায় টসের মাধ্যমে একজনকে পেছনে ঠেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।
একটি ভোট নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিলে স্যান্ডার্সেরও প্রচারণা টিম তা চ্যালেঞ্জ করলে প্রিসিন্ট লিডাররা ডেমোক্রেটিক পার্টির হেল্প লাইনে পরামর্শ চায়। পার্টি নেতারা তখন সেখানে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মুদ্রা দিয়ে টস করার পরামর্শ দেন।
আগামী কয়েক মাস পুরো দেশজুড়ে এ ধরনের ভোটাভুটি চলবে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে। আগামী নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জুলাইয়ে উভয় দলের জাতীয় কনভেনশনে দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে। সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ, নিউজ রিপাবলিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।