পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা : নির্দোষ স্বামীকে অস্ত্র চোরাচালানি সাজিয়ে পায়ে গুলি করেছে পুলিশ। আর এই ষড়যন্ত্রের পেছনে যারা তারাই অস্ত্রের কারবার করে। এখন তার স্বামীর পায়ে পচন ধরেছে। যথাযথ চিকিৎসা না পেলে তার পা কেটে ফেলতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।
বৃহস্পতিবার গতকাল দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কথিত বন্দুকযুদ্ধের শিকার সাতক্ষীরার ঘরচালা গ্রামের পুলিশিং কমিটির সদস্য ও যুবলীগ নেতা রমজান আলির স্ত্রী বুলবুলি খাতুন। নিজের দুই শিশু রাব্বি ও রাখিসহ তার জা (রমজানের ভাবী) সুফিয়া খাতুনকে সাথে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, তার স্বামীর নামে কখনও কোথাও অপরাধের মামলা ছিল না, নেইও। দিনভর ভ্যান চালিয়ে গত ১৩ জুলাই রাতে বাড়ি ফেরার কিছু সময় পর কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কলারোয়া থানা পুলিশ তার পায়ে গুলি করে।
বুলবুলি খাতুন বলেন, তার স্বামী রমজান আলি একজন দিনমজুর। অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ ও মাছের চাষ করতেন তিনি। ২০১৫ সালে মাছ চাষ করতে রায়পুর গ্রামের শফিকুলের ফিডের দোকান থেকে মাছের খাদ্য কিনে ৩০ হাজার টাকা দেনা হয়ে পড়েন। এই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় শফিকুল তাকে নানাভাবে গালাগাল করত ও হুমকি দিয়ে বলত, পুলিশ দিয়ে তোকে শায়েস্তা করা হবে। তিনি বলেন, রমজান আলি বেসরকারি সংস্থা সুশীলনের কাছ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা ঋণ নেন। এই টাকা নিয়ে বাড়ি আসার পথে পাওনাদার শফিকুল ও তার সহযোগী একড়া গ্রামের শহিদুল, রায়পুরের শাহেদ হোসেন রাশেদ ও তাজউদ্দিন কেড়ে নিয়ে অবশিষ্ট টাকার জন্য তাকে ঘরে আটকে রাখে। স্থানীয় ইউপি সদস্য সাজ্জাদ হোসেন টাকা পরে পরিশোধের কথা বলে তাকে মুক্ত করিয়ে দেন। তিনি আরও জানান, এই টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন রমজান। এবার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে আবার ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান কেনেন তিনি। এই ভ্যান চালিয়ে তিনি সংসার নির্বাহ করেন বলে জানান বুলবুলি।
তার স্বামী একজন নিরপরাধ ব্যক্তি এবং তিনি পুলিশিং কমিটির সদস্য ছাড়াও ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৩ জুলাই রাত ১০টার দিকে শাহেদ হোসেন রাশেদ, শফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও তাজউদ্দিনকে পুলিশ একটি রিভলবারসহ আটক করে। পরে ঘরচালা গ্রামের কবির হোসেন ও শাহিন হোসেনকেও একই কারণে আটক করে। তাদেরকে দিয়ে তার স্বামীকে মোবাইল করে প্যাসেঞ্জার আছে বলে বাড়ি থেকে ডেকে আনায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত কলারোয়া থানার এসআই পিন্টু লাল তাকে ধরে ফেলেন। মধ্যরাতে তাকে নিয়ে আসেন কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের একড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। এ সময় তাকে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে ও কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে পায়ের মাংসপেশীতে কাঁচের টুকরো রেখে গুলি করে। এসআই পিন্টু লাল কবির হোসেন ও শাহিনকে এ ঘটনার সাক্ষি বানিয়ে সবাইকে ছেড়ে দেন। স্বামী রমজানকে প্রথমে সাতক্ষীরা হাসপাতাল ও পরে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় জানিয়ে বুলবুলি বলেন তার পায়ে এখন পচন ধরেছে। কেউ ওষুধপত্র দিচ্ছে না। ধার দেনা করে সাত হাজার টাকা দিয়েছি অপারেশনের জন্য বলে জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে বুলবুলি বলেন, একড়া গ্রামের শহিদুল অস্ত্র চোরাচালান মামলায় জেল খেটে জামিনে বাড়ি এসেছে। তার বিরুদ্ধ চাঁদাবাজি ও অন্যান্য মামলা আছে। কয়েকবার জেলও খেটেছে। তার বাড়িতে নিত্য উঠাবসা কলারোয়া থানার এসআই পিন্টু লালের। সেখানে খাওয়া-দাওয়াও করেন। তার সাথে বেশ দহরম মহরম। এই সুযোগে পুলিশকে ম্যানেজ করে ভুল তথ্য দিয়ে শহিদুল তার সহযোগী শফিকুল, শাহেদ হোসেন রাশেদ ও তাজউদ্দিন তার স্বামীকে গ্রেফতার করায় বলে জানান তিনি। রমজানের বিরুদ্ধে কোথাওকোনা মামলা দুরে থাক জিডিওনেই বলে জানান তিনি ।
স্বামী রমজানকে অস্ত্র চোরাকারবারি সাজিয়ে পায়ে গুলি করার বিষয়ে তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন প্রমাণ মিলবে যে শহিদুলসহ চোরাচালানিরা তার স্বামীকে চোরাকারবারি সাজিয়ে পুলিশ দিয়ে গুলি করিয়েছে। অথচ যারা এ ঘটনা ঘটালো তারাই অস্ত্র চোরাকারবারী। এ বিষয়ে এসআই পিন্টু সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
খুলনায় স্বামীর সাথে দেখা করতে গেলে পুলিশ খালি টাকা চায়। না দিলে আবারও গুলি করার ভয় দেখায়। যথাযথ তদন্ত করে দায়ী পুলিশ সদস্য ও অন্যদের শাস্তি দাবি ছাড়াও রমজানের চিকিৎসার অনুরোধ জানান বুলবুলি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।