পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আরবি ইসলামি বছরের বারো মাসের মধ্যে রমজান একটি মাস। এ মাসের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে রাসূল (সা:) বলেছেন : ‘এটা এমন এক মাস যে, এর প্রথম দশদিন রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ। দ্বিতীয় দশদিন ক্ষমা ও মাগফেরাতের জন্য নির্ধারিত এবং শেষ দশদিন জাহান্নাম হতে মুক্তি ও নিষ্কৃতি লাভের উপায় হিসেবে নির্দিষ্ট। (বায়হাকী : শুয়াবুর ঈমান)। এই হাদিসের আলোকে জানা যায় যে, রমজান মাস তিন ভাগে বিভক্ত, আর তা হলো রহমত, মাগফেরাত ও জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভের জন্য উন্মুক্ত। তবে এক পর্যায়ে মুমিন মুসলমানগণের মনে জিজ্ঞাসা উদয় হয় যে, অন্যান্য এগারটি মাসের মধ্যে এ ধরনের বিভক্তি নেই। কিন্তু রমজান মাসকে ত্রিদা বিভক্তি করার পেছনে কি কোনো হেকমত আছে? এর জবাব একটিই হ্যাঁ আছে। আছে বলেই হাবীবে কিবরিয়া মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:) রহমত, মাগফেরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির কথা ঘোষণা করেছেন। আসুন এবার সে দিকে লক্ষ্য করা যাক।
প্রথমত : এই তিনটি অংশের প্রত্যেকটির পরবর্তী অংশ এর পূর্ববর্তী অংশ হতে অনেক বিস্তৃত ও প্রলম্বিত। রহমত হতে মাগফেরাত পরিবৃদ্ধিতে দীর্ঘ এবং মাগফেরাত হতে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নিষ্কৃতি অধিক দীর্ঘ ও সম্প্রসারিত। এই বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের কোনো কূল-কিনারা নেই।
দ্বিতীয়ত : আরবি রমজান শব্দের মূল ধাতু হচ্ছে ‘রময’ অর্থাৎ রা, মিম, দোয়াদ। রা এর দ্বারা মুরাদ হচ্ছে রহমত; মিম এর দ্বারা মুরাদ হচ্ছে মাগফেরাত এবং দোয়াদ এর দ্বারা মুরাদ হচ্ছে ‘দাওউন’ অর্থাৎ আলোকচ্ছটা, রৌশনী, উজ্জ্বল প্রভা। এতদর্থে প্রত্যেক রোজাদার প্রথম দশদিনের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রহমতের সাগরে অবগাহন করতে করতে মাগফেরাত লাভের উপযোগী হয়ে যায় এবং এর বিস্তীর্ণ পরিমন্ডল অতিক্রম করে আলোকোজ্জ্বল জান্নাতে উন্নীত হতে সক্ষম হয়।
তৃতীয়ত : রোজাদার তিন প্রকারের হয়ে থাকে, সচেতন শ্রেণি, মধ্যম শ্রেণির ও তৃতীয় শ্রেণি। সচেতন শ্রেণির লোকেরা কঠোর সাধনার মাধ্যমে অগ্রসর হয়। দ্বিতীয় শ্রেণির লোকেরা তারও অধিক কঠোর সাধনায় ঝাঁফিয়ে পড়ে এবং তৃতীয় শ্রেণির লোকেরা সাধনার স্রোতের টানে জান্নাতে পাড়ি জমায়।
চতুর্থ : আল কোরআনে রহমত শব্দটি ১১২ বার এসেছে। মাগফেরাত শব্দটি ২৮ বার এসেছে। উভয় সংখ্যার যোগফল ১৪০। এই ১৪০ এর একক (১+৪+০) = ৫। আরবি রমজান শব্দে ৫টি বর্ণই আছে। পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:) এই হাকীকতটি পুরোপুরি জানতেন। তাই তিনি রমজান মাসকে তিন ভাগ করে আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন।
পঞ্চমত : ইত্কুম্ মিনান্নার অর্থাৎ জাহান্নাম হতে মুক্তি কথাটি সরাসরি কোরআনে নেই। তবে সূরা আহযাবের ৩৫ নং আয়াতের শেষাংশে রোজা পালনকারী পুরুষ ও রোজা পালনকারী নারীর জন্য আল্লাহপাক মাগফেরাত ও আজরাল আজিমা অর্থাৎ মহাপ্রতিদান রেখেছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই মহাপ্রতিদানই হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নিষ্কৃতি। আলহামদু লিল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।