পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক : নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে গতকাল খোলা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের টেন্ডারবাক্স। অনেকটা গোপনীয়তার মধ্যদিয়ে সাংবাদিকদের না জানিয়েই সম্পন্ন কারা হয়েছে প্রথম দফার এই টেন্ডার প্রক্রিয়া। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বিঘেœ পছন্দের প্রার্থীকে ও নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে কোরবানির অস্থায়ী হাট ইজারার কাজ সম্পন্ন করতেই এমন ব্যবস্থা।
এ বছরও ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১২টি কোরবানির পশুরহাট। আর এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলর, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও। অভিযোগ উঠেছে, এ সিন্ডিকেট এতই শক্তিশালী যে, তাদের সুবিধার জন্য এ বছর পূর্বের ১০টি হাটের সাথে নতুন করে আরও ২টি হাট যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাইদ দুটি হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে প্রথম ধাপে এগিয়ে রয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, সিন্ডিকেটের বাইরে কারও পক্ষে সিডিউল সংগ্রহ ও জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। ডিএসসিসি’র অস্থায়ী গরুর হাটগুলোর ইজারা ক্ষমতাসীনদের আয়ত্বে রাখতে নেয়া হয়েছে নানা কৌশল। এর মধ্যে একই ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামে-বেনামে নাম মাত্র মূল্য দিয়ে দরপত্র জমা দেয়। যে কারণে নিজেদের কাক্সিক্ষত দামে ইজারা পেতে সহজ হয়ে যায়। এতে সিটি কর্পোরেশন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে যাচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী হাটগুলোর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে একই ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে একাধিক হাট। দরদাতাদের সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে দরদাতাদের উপস্থিতিতে প্রথম দফার দরপত্র উন্মুক্ত করেন ডিএসসিসি’র প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ আহম্মদ। ডিএসসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এ বছর ডিএসসিসি’র আওতাধীন ১২টি কোরবানী পশুরহাটে বিপরীতে ১৪৪ সিডিউল বিক্রি হয়েছে। অথচ জমা পড়েছে মাত্র ৩৯টি। গত বছর ১০টি হাটের বিপরীতে সিডিউল বিক্রি হয়েছিল ৯৪টি। জমা পড়েছিল ৩১টি। এ বছর জন সাধারণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে পুরান ঢাকার আরমানিটোলা পশুরহাট ইজারা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসসিসি।
জমা পড়া সিডিউলগুলোর মধ্যে- রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা হলেন রহমতগঞ্জ মুসলিম সোসাইটি। যার দরপত্রের মূল্য ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিলো ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৮ টাকা।
খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাজারের সর্বোচ্চ দরদাতা হাজি শাহ আলম। যার দরপত্রের মূল্য ৫১ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা। যা গত বছর ছিল ২৪ লাখ টাকা।
সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠ ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা ফরহাদ ভূইয়া বাবু (বাবু ভুইয়া)। যার দরপত্রের মূল্য ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিলো ৫৮ লাখ ৫ হাজার টাকা।
উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার সংলগ্ন মৈত্রীসংগের মাঠ ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা হলেন- হাজি আবদুল লতিফ। যার দরপত্রের মূল্য ৭ লাখ ২০ হাজার। যা গত বছর ছিলো ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ধুপখোলার ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা হলেন একেএম মোরশেদ আহম্মেদ চৌধুরী। যার দরপত্রের মূল্য ৯৩ লাখ টাকা। যা গত বছর ছিলো ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
পোস্তগোলা শশ্মানঘাট সংলগ্ন খালী জায়গা ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা হলেন আসাদুজ্জামান রুবেল (হাজী মোহাম্মদ রুবেল)। তিনি এ হাটের ইজারা দর দিয়েছেন ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিলো ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় হতে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন জায়গা ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা হাজি মোহাম্মদ আবুল হোসেন সরদার। যার দরপত্রের মূল্য ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিলো ৩ লাখ টাকা।
লালবাগস্থ মরহুম হাজী দেলোয়ার হোসেন খেলার মাঠ ও তৎসংলগ্ন বেড়ি বাঁধের খালি জায়গা ও আশপাশের এলাকা ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি এ হাটের দর দিয়েছেন ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যা গত বছর ছিলো ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠের জন্য সর্বোচ্চ দরদাতা মনিরুল হক বাবু। তিনি দর দিয়েছেন ৬৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিলো ৪৫ লাখ টাকা।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ, (গোপীবাগ, কমলাপুর) ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা একেএম মমিনুল হক সাইদ। তিনি এ হাটের দর দিয়েছেন ৭০ লাখ টাকা। যা গত বছর ছিলো ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
কমলাপুর স্টেডিয়ামের আশে পাশে খালী জায়গা রাস্তার পূর্ব পাশ ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা হলেন একেএম মমিনুল হক সাইদ। যার দরপত্রের মূল্য ২০ লাখ টাকা। এ হাটটি এবছর নতুন করে ইজারা দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারের ভেতরের জায়গার ইজারার জন্য সর্বোচ্চ দরদাতা আবু বকর সিদ্দিক বাকের। তিনি এ হাটের দর দিয়েছেন ৭৫ লাখ টাকা। এ হাটটি এবছর নতুন করে ইজারা দেয়া হচ্ছে।
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ আহমেদ বলেন, পর্যাপ্ত দর পাওয়া না গেলে আমরা তা পুনরায় দরপত্র আহ্বান করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।