Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শাহজাহান ফের রিমান্ডে এখনও আড়ালে মুছা

‘বাবুল চাকরিতে বহাল আছেন’

প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় গ্রেফতার মো. শাহজাহানকে আবারও তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) মহানগর হাকিম হারুন অর রশিদ তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী বলেন, শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তিনদিন মঞ্জুর করেছেন। একই মামলায় গত ১৭ জুলাই শাহজাহানসহ তিনজনকে প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান বলেন, শাহজাহান, এহতেশামুল হক ভোলা ও সাঈদুল ইসলাম সাকুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। আমরা শুধু শাহজাহানকে তিনদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আরও তথ্য পাওয়ার জন্য তাকে আবারও রিমান্ডে চেয়েছি। তিনি বলেন এর আগে গ্রেফতার ওয়াসিম ও আনোয়ার স্বীকার করে শাহজাহান খুনের সময় সেখানে ছিল। আমরা আশা করছি তার কাছে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
মিতু হত্যাকা-ে ব্যবহৃত অস্ত্র এহতেশামুল হক ভোলা সরবরাহ করেছিল বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে। শাহজাহান কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল এবং সাকু হত্যাকা-ে জড়িত মুছার ভাই হিসেবে মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ পুলিশের। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি সাকু সরবরাহ করেছিল। ২৮ জুন ভোলাকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। এর আগে ২৪ জুন শাহজাহান ও সাকুকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। ৬ জুলাই এই মামলার সন্দেহভাজন আসামি নবী ও রাশেদ ক্রসফায়ারে মারা যায়।
গত ৫ জুন সকালে নগরীর ও আর নিজাম রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে ও আর নিজাম রোডে মিতুকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বেশ কয়েকজন আসামি ধরা পড়লেও খুনের মূল রহস্য কি তা বলছেনা  পুলিশ।
পুলিশ বলছে খুনের মূলহোতা আবু মুছা ধরা পড়লে খুনের রহস্য জানা যাবে। পুলিশ তাকে খুঁজছে। তবে মুছার স্ত্রীর দাবি পুলিশ তাকে গত ২২জুন বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে নিয়ে পুলিশ ঢাকায় যায়, সেখানে মুছাকে বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করে মুছার স্ত্রী পান্না তার স্বামীকে জীবিত ফেরত দেওয়ার দাবিও করেন। তবে পুলিশ এসব অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না।
বাবুল আক্তার চাকরিতে  বহাল আছেন -আইজিপি
পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার এখনো চাকরিতে বহাল রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরির্দশক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে নগরীর নাসিরাবাদে সিএমপির অফিসার্স মেসের উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান।
আইজিপি বলেন, সে (বাবুল আক্তার) চাকরিতে বহাল আছে। তবে সে অফিস করেনা। আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেনা। কোনো অফিসারের সাথেও যোগাযোগ রাখছে না। সে বলছে সে মানসিকভাবে হতাশায় আছে, চাকরি করার মানসিক অবস্থায় নেই। সে তো আমাদের সাথে কথাও বলছেনা। পুলিশ সদর দপ্তরেও যাচ্ছে না। এভাবে ছুটিতে না থাকার পরও সে যদি অফিস না করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আইজিপি।
গত ২৪ জুন নাটকীয়ভাবে এসপি বাবুল আক্তারকে ঢাকার শ্বশুরবাড়ির থেকে মধ্যরাতে ডেকে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় ডিবি কার্যালয়ে। পরে তাকে বাসায় ফিরেয়ে দেওয়া হলেও পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত এসপি বাবুল আক্তার আর স্বপদে যোগদান করেননি।
গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছিল, বাবুল আক্তার চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন ওই রাতেই। তবে এনিয়ে নানা খবর বের হলেও সরকার কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি এ নিয়ে মুখ খুলেননি বাবুল আক্তার নিজেও। এরই মধ্যেই পুলিশের মহাপরিদর্শক জানালেন বাবুল আক্তার এখনো চাকরিতে আছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাহজাহান ফের রিমান্ডে এখনও আড়ালে মুছা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ