পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামি আরবি মাসসমূহের মধ্যে অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানীত মাস হলো রমজান। এটি কোরআন নাযিলের মাস। এ মাসে পবিত্র কোরআন নাযিল হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা ও সম্মান অন্যান্য মাসের তুলনায় অত্যধিক। কাজেই এই মাস আসলেই মুমিন মুসলমানদের ওপর যে দায়িত্ব বর্তায় তা হলো অধিকহারে কোরআন তেলাওয়াত করা। পারলৌকিক উন্নতি ও সফলতা লাভের জন্য একান্ত আন্তরিকতার সাথে রোজা পালন করা। আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে রোজা একটি অপরিহার্য ইবাদত। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন এবং তাকওয়ার প্রশিক্ষণ গ্রহণের নিমিত্ত ইসলামি শরিয়তে রোজার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ কারা হয়েছিল, যাতে তোমরা মোত্তাকী হতে পার। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৮৩)।
বস্তুত: মহাগ্রন্থ আল কোরআন মানব রচিত কোনো গ্রন্থের মতো সাধারণ কোনো গ্রন্থ নয়। এটি মহান স্রষ্টা রাব্বুল আলামীনের সুমহান বাণী সমষ্টি। যাতে নিখিল মানব জাতির ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের সকল সমস্যার সমাধান আলোচিত হয়েছে। মানব জীবনের সকল প্রশ্নের জবাব এবং প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তুর মূল কথা বর্ণিত হয়েছে। এটি আল্লাহপাকের পক্ষ হতে মানব জাতির জন্য অবতীর্ণ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। বিশ্ব মানবতার আধ্যাত্মিক ও নৈতিক সংরক্ষণ, প্রতিপালন এবং শিক্ষার একমাত্র উৎস। সৃষ্টির সর্বাঙ্গীন কল্যাণ কামনায় আল্লাহপাকের অনবদ্য অবদান।
এটি আল্লাহ প্রদত্ত পরিপূর্ণ জীবন দর্শন ও জীবন ব্যবস্থামূলক গ্রন্থ। এ গ্রন্থের ভাব, ভাষা, মর্ম ও বিষয়বস্তু সবকিছুই মহান আল্লাহপাকের নিজস্ব। অতীত কালের সকল নবী ও রাসূলের দাওয়াত ও সকল আসমানি কিতাবের সারসংক্ষেপ এ কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। আসমানি মহাগ্রন্থসমূহে বর্ণিত সকল তত্ত¡ ও তথ্যের বিস্ময়কর সমাবেশ ঘটেছে এতে। আল কোরআনের আবির্ভাব ও অবতরণের পর অন্য আসমানি গ্রন্থের কার্যকারিতা অবশিষ্ট নেই। এর দ্বারা একাধারে পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাবই মানসুখ বা রহিত হয়ে গেছে। এখন হতে কেয়ামত পর্যন্ত এ গ্রন্থই মানব জাতির মানবিক কল্যাণ ও মুক্তির দিশারী বা পথপ্রদর্শক।
মহান আল্লাহপাক আল কোরআন সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন : (ক) বিশ্ব মানবতার দিশারী এবং সৎপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও সত্য মিথ্যার প্রার্থক্যকারী রূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত ১৮৫)। (খ) এটি (আল্লাহর) কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই, মোত্তাকীদের জন্য পথপ্রদর্শক ও হিদায়াত। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২)। (গ) এটি এমন কিতাব যা আমি নাযিল করেছি বরকতময় করে, সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ করো এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও। (সূরা আল আনয়াম : আয়াত ১৫৫)। (ঘ) এটা মানুষের জন্য স্পষ্ট বর্ণনা ও হিদায়াত এবং মোত্তাকীদের জন্য উপদেশ। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১৩৮)। (ঙ) নিশ্চয়ই এ কোরআন তোমার জন্য ও তোমার কাওমের জন্য উপদেশ। আর অচিরেই তোমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সূরা যুখরুফ : আয়াত ৪৪)। অতএব, মাহে রমজানে অধিকহারে কোরআন তেলাওয়াত করা সকল মুমিন মুসলমানের উচিৎ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।