পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হিজরি দ্বিতীয় সালে ঈদুল ফিতরে দু’দিন পূর্বে ইসলামি সমাজ ব্যবস্থার উপর এই ‘ফিতরা’ সর্ব প্রথম বাধ্যতামূলকভাবে ধার্য করা হয় ও এর প্রচলন শুরু হয়। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে ফিতরা বলা হয় এমন পরিমাণ অর্থ বা সম্পদকে যা বিশেষ পদ্ধতিতে ঐ সকল লোককে দেয়া হয়, যারা যাকাত গ্রহণ করতে পারে। এতদ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) রমজান মাসের রোজার ফিতরা এক সা’ পরিমাণ শুকনা খেজুর কিংবা এক সা’ পরিমাণ যব মুসলিম মিল্লাতের প্রত্যেক স্বাধীন মুক্ত কিংবা দাস পুরুষ কিংবা স্ত্রীলোকগণের ওপর ফরজ করেদিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)।
অপর একটি হাদীসে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মালারাতা ইবনে ছুগাইর স্বীয় পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) তাঁর এক ভাষণে বলেছেন : তোমরা প্রত্যেক স্বাধীন, ক্রীতাদাস, ছোট কিংবা বড় এর তরফ হতে অর্ধ ‘সা’ গম কিংবা এক সা যব কিংবা এক সা খেজুর ফিতরা বাবদ আদায় কর। (সুনানে আবু দাউদ, মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)।
মোট কথা, স্বাধীন-মুক্ত, পুরুষ-স্ত্রী ও ক্রীতদাস নির্বিশেষে সকল মুসলমানের ওপরই সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব। তৎকালীন সময়ে ক্রীতাদাসের প্রচলন ছিল বলেই কৃতদাস কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে এর স্থলে স্থায়ী গৃহ ভৃত্যকে গণ্য করতে হবে এবং তার ফিতরাও মনিবকে আদায় করতে হবে। মহিলারা বিবাহিত হলে স্বামীই তার সদকায়ে ফিতর আদায় করবে। আর অবিবাহিতা হলে এবং নিজের সামর্থ থাকলে নিজেই ফিতরা আদায় করবে। অন্যথায় পিতা বা অভিভাবক তার এবং অন্যান্য নাবালেগ এবং পক্ষদের সদকায়ে ফিতর আদায় করবে। মাহে রমজানের রোজা শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। যে লোক ঈদের দিন তার নিজের ও পরিবারবর্গের সেই দিনের খাদ্য পরিমাণের অধিক সম্পদের মালিক হবে, তার ওপরও সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে। সদকায়ে ফিতর আদায় করা সম্পর্কে কারোও কোনো দ্বিমত নেই। তবে, ঈমাম শাফেয়ী (রহ:) ও ইমাম মালেক (রহ:)-এর মাযহাব অনুযায়ী ইহা সুন্নাত। ওয়াজিব বা ফরজ নয়। তাদের মতে উল্লেখিত হাদীসের শব্দ ফরজ করে দিয়েছেন অর্থ হলো নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন অথবা ধার্য করে দিয়েছেন। আর ইমাম আবু হানিফা (রহ:)-এর মাযহাব মতে ইহা ওয়াজিব। হাদীসের বাণী ফরজ করে দিয়েছেন কথাটির অর্থ ফরজ বলতে যা বুঝায় তা নয়। বরং তা ওয়াজিব। যাকাত ফরজ কিন্তু সদকায়ে ফিতর অনুরূপ ফরজ নয় হেতু তা ওয়াজিব বলে সাব্যস্ত হবে। কোনো কোনো ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, যার পক্ষে যাকাত গ্রহণ করা যায়েজ ও হালাল, তার পক্ষে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : ফকির-গরিবের পক্ষেও ফিতরা দেয়া উচিত, কেননা সে যা দিতে আল্লাহপাক তাকে তার দেয়া পরিমাণের চেয়ে বেশি ফিরিয়ে দিবেন। তবে তা ধনীদের মতো বাধ্যতামূলক নয়, বরং স্বেচ্ছামূলক। এটা অধিক সওয়াব লাভের প্রত্যাশায় বান্দার আত্মোৎসর্গের ব্যাপার মাত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।