পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মামলা ও গ্রেফতার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য স্পষ্ট হুমকি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট ও লেখকের মুক্তি চেয়েছে সম্পাদক পরিষদ। একই সঙ্গে এই আইন বাতিলের দাবিও জানিয়েছে দেশের সম্পাদকদের এ সংগঠন।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামে একটি সংগঠনের ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভুইয়া, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে ভিন্ন মামলায় গ্রেফতার করা হয় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে। এরও আগে অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগো নিউজের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট ও লেখকের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মামলা ও তাদের গ্রেফতার আমরা উদ্বেগের সাথে পর্যবেক্ষণ করছি। গ্রেফতার করার আগে অভিযোগের বিষয়গুলোকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করা’, ‘গুজব ছড়াতে’ বা ‘সরকারের সমালোচনা’ করার কারণ দেখিয়ে সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে যে কোনো অভিযোগে প্রায়শই স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেফতার পরিচালিত হচ্ছে। সম্প্রতি ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আদালতে হাজির করার সময় হাতকড়া পরানো হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ মামলার কারণ ক্ষমতাসীন, জেলা প্রশাসন এবং ক্ষমতায় থাকা লোকদের সম্পর্কে সমালোচনা।
‘আইন প্রণেতারা ঐতিহ্যগতভাবে সর্বদা মুক্ত গণমাধ্যম, চিন্তার স্বাধীনতা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার পক্ষে ছিলেন। দুঃখজনকভাবে তাদের কেউ কেউ এখন মিডিয়ার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করছেন। তারা বিদ্যমান মানহানির আইনের পরিবর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা করছেন। এটি সুস্পষ্ট যে, সাংবাদিকদের ভয় দেখানো ও হয়রানির জন্যই এই আইনে মামলা করা হচ্ছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রকাশ করা এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা তুলে ধরা মিডিয়ার সহজাত কর্তব্য ও দায়িত্ব। মহামারি এবং এর বিপর্যয়কর পরিণতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সরকার যখন হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে, তখন এটি আরও প্রয়োজনীয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমনে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে, এই ভয়ে সম্পাদক পরিষদ শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছে। গণমাধ্যমের জন্য আমাদের সেই ভয় এখন দুঃস্বপ্নের মতো বাস্তবতা।
সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মামলা ও গ্রেফতারকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য স্পষ্ট হুমকি হিসেবে বিবেচনা করি। আমরা অবিলম্বে সব সাংবাদিকের মুক্তি এবং তাদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। আমরা মিডিয়া এবং সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ঘন ঘন এবং নির্বিচার ব্যবহারের নিন্দা জানাই এবং এই আইনটি বাতিলের দাবি জানাই।
বিবৃতিতে বলা হয়, মহামারি ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার জন্য পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সাংবাদিকদের ঘন ঘন গ্রেফতারই সেই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়াসকে বাধা দেয়। এই জাতীয় গ্রেফতার মুক্তচিন্তা ও মুক্ত গণমাধ্যমবিরোধী কাজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।