Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রোজা ফরজ করার হেকমত ও উদ্দেশ্য

এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে রোজা একটি অপরিহার্য ইবাদত। ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন ও তাকওয়ার প্রশিক্ষণ গ্রহণের নিমিত্ত হিজরী দ্বিতীয় মাসে মহান আল্লাহপাক ইসলামি শরিয়তে রোজার বিধান প্রবর্তন করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে করে তোমরা মোত্তাকী হতে পার। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৮৩)।

রোজা শব্দটির মূল আরবী প্রতি শব্দ হচ্ছে সাওম। সাওম অর্থে রোজা শব্দটি ফার্সী, উর্দু, হিন্দি ও বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়। সাওম শব্দটি আল কোরআনে এক বচনে মাত্র একবার ব্যবহৃত হয়েছে। সাওম শব্দের বহু বচন হলো সিয়াম। এই সিয়াম শব্দটি কুরআনুল কারীমে আটবার ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং সাওম ও সিয়াম শব্দটির ব্যবহার আল কোরআনে নয় বার হয়েছে। নয় ব্যহত্তর সংখ্যা ও পরিপূর্ণ শক্তির প্রতীক। তাই, আশা করা যায় যে, সিয়াম সাধনার বিনিময় আল্লাহপাক পুরোপুরিই প্রদান করবেন। আর সাওম শব্দের অভিধানিক অর্থ হচ্ছে : (ক) ইমসাক বা বিরত থাকা, (খ) কঠোর সাধনা করা, (গ) অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া, (ঘ) আত্মসংযম অবলম্বন করা, (ঙ) খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকা। আর ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় সাওম তথা রোজা হলো- সুবহে সাদেক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সঙ্গম থেকে বিরত থাকা। মোট কথা- পানাহার, কামাচার, পাপাচার ও মিথ্যাচার বর্জন করাই হলো রোজা বা সিয়াম সাধনার মর্ম কথা।

ইসলামি শরিয়তে রোজার বিধান প্রবর্তনের পেছনে রয়েছে অগণিত হেকমত, উপকারিতা ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য। এতদপ্রসঙ্গে শায়খুল মুহাদ্দেসীন ওয়াল ফুকাহা আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (রহ:) তাঁর জনদ্বিখ্যাত গ্রন্থ উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীতে যা উল্লেখ করেছে, তার সংক্ষিপ্ত নির্যাস নিম্নরূপ। (ক) রোজার সাধনে রোজাদার ব্যক্তি কুবৃত্তি ও প্রলোভনের ওপর জয়ী হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সক্ষম হয়। (খ) রোজা বিশ্ব মুসলিম সমাজে সাক্ষ্য, ভ্রাতৃত্ব, স্নেহমমতা ও ভালোবাসার সৃষ্টি করে। (গ) রোজা মানুষকে আল্লাহ ও বান্দার অধিকার আদায়ে যোগ্য করে তোলে। (ঘ) রোজার মাধ্যমে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জিত হয়। (ঙ) রোজা শয়তানের আক্রমণ প্রতিহত করার শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। হাদীস শরীফে এসেছে রোজা ঢালস্বরূপ। (চ) রোজার মাধ্যমে ক্ষুধার তীব্র জ্বালায় জর্জরিত গরিবদের প্রতি ধনীদের অন্তরে বেদনার অনুভূতি জাগ্রত হয়। (ছ) রোজা দ্বারা রোজাদার ব্যক্তির চক্ষু, কর্ণ, জিহব্বা ও লজ্জাস্থান প্রভৃতি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অতিরিক্ত চাহিদা অবদমিত ও প্রশমিত হয়। (জ) রোজার মাধ্যমে অফুরন্ত রহমত লাভ করা যায়। হাদীস শরীফে এসেছে- রমজানের আগমনে রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৫ মে, ২০২০, ১১:১৩ এএম says : 0
    সোবহানআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ