Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঋণখেলাপিদের নাম বিলবোর্ডে!

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সাংহাই রেলস্টেশনের ব্যস্ত সড়কের পাশে চারটি বড় বিলবোর্ড টাঙানো রয়েছে। ট্রেন এলেই বিলবোর্ডগুলোয় একযোগে জ্বলে ওঠা ফ্লাশের আলোয় একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রধানের ছবি প্রায়ই দেখা যায়। যদিও এর মাধ্যমে নিজের কোম্পানি বা পণ্যের প্রচারণা করছেন না তিনি।
এ মাসের শুরুর দিক থেকেই সাংহাই রেলওয়ে ট্রান্সপোর্টেশন কোর্ট ওই ব্যক্তির ছবি ও ব্যক্তিগত অন্যান্য তথ্যাদি বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রকাশ করতে থাকেন। কারণ তার কোম্পানি পাওনা ২৯ লাখ ইউয়ান (৪ লাখ ৩২ হাজার ৯৪৫ ডলার) পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে। চায়না কন্সস্ট্রাকশন ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ করতে না পারায় চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশের আরেকটি আদালত দুই বছর আগে এ কোম্পানির সম্পদ জব্দ করার আদেশ দেন। এতে কাজ না হওয়ায় এবার তাকে লজ্জায় ফেলতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
চীনে অর্থনীতি শ্লথ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঋণগ্রহীতাদের পক্ষে তাদের ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে উঠছে; যার প্রভাবে চীনের ব্যাংকগুলোয় অনাদায়ী ঋণের আকার ২৯ হজার ৯৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণের প্রকৃত আকার আরো বেশি হবে। এমন পরিস্থিতিতে পাওনা অর্থ আদায়ে অভিনব উপায় বের করেছেন চীনের আদালতগুলো। ঋণ পরিশোধ না করে গা-ঢাকা দিয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের নামধাম বিলবোর্ডের মাধ্যমে জনসমক্ষে আনছেন তারা।
মার্চে চীনের সুপ্রিম পিপলস কোর্টের প্রেসিডেন্ট ঝৌ কিয়াং এক ঘোষণায় জানান, ঋণখেলাপি দেশের অন্যতম বড় সমস্যা। যারা ঋণ পরিশোধ না করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ দিন ধরে সাংহাইয়ের প্রধান দু’টি রেলস্টেশনে ১০ মিনিটের বিরতিতে ২০ জন ব্যক্তির কাছে পাওনা অর্থের পরিমাণ, তাদের নাম, ঠিকানা ও মামলার নম্বরের তথ্যাদি বিলবোর্ডের পর্দায় প্রকাশিত হতে থাকে। এদের মধ্যে কেউ ব্যক্তিগতভাবে ঋণখেলাপি, কেউ আবার কোম্পানির হয়ে। অনেকের কাছে খুব সামান্য অর্থ পাওনা থাকলেও শুধু লজ্জা দেয়ার জন্যই তাদের নাম, ঠিকানা ও ছবি প্রচার করা হচ্ছে। সম্পদ জব্দ ও বিক্রি করতে বাধ্য করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।
সাংহাই রেলওয়ে ট্রান্সপোর্ট কোর্টের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অসৎ ঋণদাতাদের নিবৃত্ত করার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ। যেসব লোকের তথ্যাদি প্রকাশ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের ফোন নম্বর ও ঠিকানা বদলে উধাও হয়ে গেছেন। গত বছরের শেষ দিকে চীনের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমার্সের ইস্যুকৃত ডিক্রিতে কোন ধরনের ঋণখেলাপির জন্য লজ্জা দিতে কোম্পানির তথ্য প্রকাশ করা যাবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে তা সম্প্রসারিত করে ঋণখেলাপি ব্যক্তির নাম সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটে প্রকাশের অনুমোদন দেয়া হয়। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঋণখেলাপিদের নাম বিলবোর্ডে!
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ