পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বিগত ২৬ বছরে কোনো নতুন জাহাজ যোগ হয়নি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে। বর্তমানে তিনটি জাহাজ নিয়ে কোনো রকমে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মুনাফার ওপর শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে বিএসসির পরিচালনা পর্ষদ। ওই অর্থবছরে ৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মুনাফা করে বিএসসি। গতকাল (বুধবার) চট্টগ্রামে বিএসসি ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। আগামী শনিবার বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বিএসসির মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ২৫ থেকে ৩০টি মাদার ট্যাংকার ও সেলুলার কন্টেইনার জাহাজ দরকার হলেও বিগত ২৬ বছরে কোন জাহাজ কেনা হয়নি। সর্বশেষ ১৯৯১ সালে এমভি বাংলার শিখা নামে একটি জাহাজ কেনা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে বিএসসির বহরে ১৩টি জাহাজ ছিল। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পাঁচটি জাহাজ নিলামে বিক্রির ফলে সংস্থার বহরে জাহাজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল আটটিতে। এরপর আরও পাঁচটি জাহাজ বিক্রি করা হয়। ফলে এখন বিএসসির বহরে মাত্র তিনটি জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজের গড় বয়স ৩০ বছর হওয়ায় সীমাবদ্ধ পরিসরে এগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জিটুজি ভিত্তিতে চীন সরকারের ঋণের টাকায় ৩টি নতুন প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার ও ৩টি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার ক্রয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চীনা ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের সঙ্গে জাহাজ নির্মাণে চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছে।
প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে খসড়া ঋণ চুক্তির প্রস্তাব বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এরপর জাহাজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ৬টি জাহাজের মধ্যে প্রত্যেকটির ধারণ ক্ষমতা ৩৯ হাজার মেট্রিক টন জানিয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে জাহাজগুলো বিএসসির বহরে যুক্ত হবে বলে আশা করছেন তিনি।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ডিডব্লিউটি সম্পন্ন নতুন দুটি ক্রুড অয়েল ট্যাংকার এবং ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার ডিডব্লিউটি সম্পন্ন দুটি নতুন মাদার ট্যাংকার ক্রয়ে চীনের ভিন্ন দুইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে। এছাড়া আরপিও’র মাধ্যমে শেয়ার বিক্রির অর্থ দিয়ে ৩৪ হাজার ডিডব্লিউটি ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ক্যামিকেল বা ক্রুড অয়েল ট্যাংকার কাজ মূল্যায়নাধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
আগামী ১ বছরের মধ্যে বিএসসির বহরে জাহাজটি যুক্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে আমরা পুরনো দুটি জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়েছিল। কিন্তু সরকার তা বাতিল করে নতুন জাহাজ কেনার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়েছে। জাহাজগুলো বিএসসির বহরে যুক্ত হলে পরিবহন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে প্রতি মাসে সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন কয়লা লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ কয়লা বিএসসির জাহাজের মাধ্যমে পরিবহনের জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে। বিদেশ থেকে কয়লা পরিবহনের জন্য ৬টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ও ১০টি লাইটারেজ বাল্ক ক্যারিয়ার কেনার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে নির্বাহী পরিচালক (টেকনিক্যাল) মো. সাঈদ উল্লাহ, সচিব মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।