পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহসিন রাজু , বগুড়া থেকে : গত রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বগুড়ার যমুনা নদী তীরবর্তী সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার দুর্গম চর ও গ্রামাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের পরিচালিত জঙ্গি বিরোধী অভিযানের সমাপ্তি ৬টি জেহাদী বই, ৩টি ছুরি, ৩টি চাপাতি, ১ কয়েল ইলেকক্ট্রিক তার এবং ১টি ব্যাগ উদ্ধারের ঘটনার বিষয়টি নিয়ে নানামুখী আলোচনা পর্যালোচনা চলছে। কারণ, খুব গোপনে পরিচালিত এই অভিযান সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার জন্য যখন বগুড়া র্যাব ক্যাম্পের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়, তখনই বিষয়টি সাংবাদিকদের গোচরীভূত হয়। সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের শুধু জানানো হয় ‘সারিয়াকান্দির চর কাজলায় নেয়া হবে এবং সেখানেই র্যাবের ডিজি বেনজীর আহম্মেদ তাদেরকে রাতের অভিযান সম্পর্কে ব্রিফ করবেন ।’
সংগত কারণেই বগুড়ায় কর্মরত ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা তাদের অথরিটিকে এই গুরুত্বপূর্ণ যৌথবাহিনীর অভিযান সম্পর্কে অবহিত করলে উভয় প্রকার মিডিয়ার ন্যাশনাল ডেস্ক বিরাট কিছু একটা প্রচারের অপেক্ষায় প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে জঙ্গি ঘাঁটি আবিষ্কার, জঙ্গি দলের আত্মসমর্পণ বা অস্ত্রের বিরাট মজুদ উদ্ধারের খবর। কিন্তু বিকাল ৪টায় যখন র্যাব ডিজির ব্রিফিং শুরু হয় আর জানানো হয় যে কোন জঙ্গি আটক হয়নি, কেউ আত্মসমর্পণ করেনি বা বিপুল অস্ত্রশস্ত্র বা বিস্ফোরকের মজুদ পাওয়া যায়নি। তখন উপস্থিত সাংবাদিক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন সংবাদ সংস্থাগুলোর ন্যাশনাল ডেস্কের দায়িত্ব প্রাপ্তদের কাছে বিষয়টি ‘বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া, পর্বতের মূষিক প্রসব বা বার হাত কাঁকুড়ের ১৩ হাত বিচি’র মতোই মনে হয়।
তবে ব্রিফিংকালে র্যাবের ডিজি কর্তৃক জঙ্গির ধ্বংসাত্মক জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পাশাপাশি জঙ্গিদের গোপন তৎপরতা, গোপন ঘাঁটি অথবা তাদের সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রদান করলে তাকে ১০ লক্ষ টাকার প্রণোদনাসহ স্বাভাবিক জীবন যাপনে নিরাপত্তা দেয়ার ঘোষণা অভিযানটির ভিন্ন তাৎপর্য গুরুত্ব ও মাত্রা এনে দেয়। ব্রিফিংকালে র্যাবের ডিজি বেনজীর আহম্মেদ জঙ্গি তৎপরতার সন্ধান দাতাদেরও ৫ লাখ টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্রদানসহ খবরদাতার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা ও তাকে নিরাপত্তা দেয়ারও নিশ্চয়তা দেন।
মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এবং অভিজ্ঞ সংবাদ কর্মীদের কাছে বিষয়টির ভিন্ন আঙ্গিক বহুমাত্রিকতা ও দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়। পরে অনুসন্ধান করে জানা যায়, এত বড় অভিযানের তথাকথিত সাফল্য প্রদর্শন বা প্রেস কাভারেজের জন্য অভিযানকারীরা লোভাতুর ছিলেন না, যা এদেশের প্রেক্ষাপটে বিরল ঘটনা। সন্দিগ্ধদের বাড়িঘরে ঢুঁকে কারো সাথে দুর্ব্যবহার করেছে এমন একটা অভিযোগও পাওয়া যায়নি। বেছে বেছে বিএনপি বা জামায়াতের লোকদের হয়রানিও করা হয়নি। বরং সকাল বেলা থেকে গ্রামে গ্রামে উপস্থিত শত শত গ্রামবাসীর উদ্দেশে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিয়ে জঙ্গি, জঙ্গি দল, তাদের বিভ্রান্তিমূলক কর্মকা- সম্পর্কে সহজ বোধ্য ভাষায় বোঝানো হয়। তাদের আশ্বস্ত করা হয়, দেশের সরকার, সরকারের আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত সকল বাহিনীই দুর্গম এলাকাতেও তাদের ডাকে সাড়া দিতে প্রস্তুত। সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার বেশ কয়েকজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জনপ্রতিনিধি এই অভিযান সম্পর্কে প্রতিক্রিয়ায় ইনকিলাবকে বলেন, দুর্গমতার কারণে ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই এলাকাগুলো ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অভয়ারণ্য, কারণ পাক বাহিনী এখানে আসতে চাইতোনা। ’৭৫-এর আগে জাসদের গণবাহিনী, সর্বহারার দলও এই দুর্গম অঞ্চলকে নিরাপদ ভাবতো। ’৭৫-এর পরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের প্রতিবাদে যারা অস্ত্র হাতে নিয়েছিল তাদের কোন কোন গ্রুপ এখান থেকেই তাদের তৎপরতা পরিচালনা করতো। সংগত কারণেই আইন শৃংখলা বাহিনী এই দুর্গম চরে আসবে না এমন বোধ-বিশ্বাসে আচ্ছন্ন হয়ে এখানে ঘাঁটি যেন না গড়ে মূলত সেই বোধ বিশ্বাস চূর্ণ করতেই যৌথ বাহিনীর এই অভিযান বলে তারা মনে করছেন। বেশ কয়েকজন কলেজ ছাত্র বলেন, এত বিরাট মাপের অভিযানকালে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের হাতে কেউ নাজেহাল হয়নি যেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিস্ময়করই বটে। কেউ আবার বলেন, অভিযানকালে যৌথ বাহিনীর কিছু অফিসারের বন্ধুসুলভ আচরণে বুঝতে পেরেছি কেন বাংলাদেশী শান্তি রক্ষীরা বিদেশের মাটিতে এতা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে !
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।