Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আবাসিক এলাকায় ১৩ হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : শহর এলাকার আবাসিক প্লট ও ভবনে থাকা ১২ হাজার ৯৫৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিস দিয়েছে সরকার। নোটিসের জবাব পর্যালোচনা করে সেসব প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে আবাসিক এলাকায় থাকা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন না করার এবং এসব এলাকায় নতুন করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ট্রেড লাইসেন্স না দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে ‘নগর এলাকার রাস্তার পাশে আবাসিক প্লট ও ভবনে রেস্তোরাঁ-বারসহ নানাবিধ বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনাজনিত সমস্যা নিরসনে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিষয়ক’ কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় জানানো হয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আবাসিক এলাকায় থাকা তিন হাজার ১৫টি, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এক হাজার ১৩৭টি এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) দুই হাজার ৪০০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিস করেছে। এছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশন ২৬টি, গাজীপুর ৩৭৬টি, কুমিল্লা ৪০টি, চট্টগ্রাম ১৫০টি, বরিশাল ৫৮টি, সিলেট ২৬টি এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন পাঁচটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিস পাঠিয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আবাসিক প্লট ও ভবনে থাকা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে এই সিটি করপোরেশনের একজন প্রতিনিধি জানান।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) পাঁচ হাজার ৫৩৪টি, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ১১২টি এবং ফায়ার সার্ভিস ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে নোটিস করেছে।
সভায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি জানান, তারা ৫১টি বার, ক্লাব ও রেস্তোরাঁকে নোটিস পাঠিয়েছেন। ঢাকার ৩৪টি চার ও পাঁচতারকা হোটেলের বিষয়ে রাজউকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সভায় জানান বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। সভার শুরুতে স্থানীয় সরকার সচিব মালেক বলেন, শুধু গুলশান নয়, সবগুলো বিষয়ই আমরা অ্যাড্রেস করব। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অপরিহার্য ও কর্তব্য। উল্লেখ্য, শহর এলাকায় আবাসিক প্লট ও ভবন থেকে সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরাতে গত ৪ এপ্রিল ছয় মাস সময় বেঁধে দেয় মন্ত্রিসভা। এই সময়ে বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো না সরালে সেগুলো উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় বারের লাইসেন্স বাতিল করে সেগুলো অপসারণ করতে হবে; নতুন করে কোনো বারের লাইসেন্স দেওয়া যাবে না। সব গেস্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেল বন্ধ করতে হবে।
মন্ত্রিসভা এসব সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে প্রধান করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়।
সচিব মালেক বলেন, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করতে চাই। তবে এখনই ভাংচুর শুরু করতে চাই না। নোটিসের জবাবে তারা কী বলছেন, তা শুনতে হবে, শুনানির প্রয়োজন আছে কি না তাও দেখতে হবে। এসময় আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার অনুরোধও জানান তিনি।
সভায় ঢাকা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) প্রতিনিধি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সচিব আবদুল মালেক দ্রুত ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপর কে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে সচিব মালেক ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে বের হয়ে যান।
সভা শেষে স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন শাখার অতিরক্তি সচিব জ্যোতির্ময় দত্ত জানান, সবগুলো সিটি করপোরেশনের আবাসিক এলাকায় থাকা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ট্রেড লাইসেন্স আর নবায়ন করা হবে না, এসব ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এসব এলাকায় নতুন করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে কাউকেই ট্রেড লাইসেন্স না দেওয়ার এবং নোটিসের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারিরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গুলশানসহ ঢাকার উত্তরের অভিজাত আবাসিক এলাকাগুলোতে এরকম ৫৫২টি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রেস্তোরাঁ, হোটেল, স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালও রয়েছে বলে রাউজকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবাসিক এলাকায় ১৩ হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ