Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পূর্ণ সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ‘অপূর্ণাঙ্গ জোড়া’ শিশু মোহাম্মদ আলী

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : পূর্ণ সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ফিরেছে অপূর্ণাঙ্গ জোড়া শিশু মোহাম্মদ আলী। টানা চার মাস চিকিৎসা শেষে গতকাল শিশুটিকে মায়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মা হিরামণির হাতে ছেলে মোহাম্মদ আলীকে তুলে দেন বিএসএমএমইউ’র ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান।
শিশু মোহাম্মদ আলীকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় কোলে ফিরে পেয়ে মা হিরামণি বলেন, আমি যে কি খুশী তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আমি গর্বিত ও আনন্দিত। অস্ত্রোপচারের আগে পর্যন্ত ভাবিনি ছেলেটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। তিনি সুস্থ ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি শিশু মোহাম্মদ আলীর জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন যেন বড় হয়ে আপনাদের (ডাক্তার) মতো হতে পারে।
অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলীর চিকিৎসাকালীন সময়ের বিস্তারিত তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. রুহুল আমিন। তার নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের চিকিৎসক দল শিশুটিকে সুস্থ করে তোলেন।
ডা. রুহুল আমিন বলেন, ৭ মার্চ অপূর্ণাঙ্গ জমজ দেহ নিয়ে জন্মগ্রহণের ৩ দিন পর থেকে বিএসএমএমইউর শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয় মোহাম্মদ আলীর। সে একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু হলেও তার উপর ভর করে ছিল আরেকটি শিশুর পেটের নিচের অর্ধেকসহ শরীরের নিম্নাঙ্গ। উর্ধাঙ্গের মাথা, বুক ও দুই হাত নেই অর্থাৎ আংশিক বা অপূর্ণাঙ্গ শিশুটি তার আংশিক অস্তিত্ব নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ শিশুর উপর ভর করে বেঁচে ছিল। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয়, প্যারাসাইটিক টুইন বা অপূর্ণাঙ্গ যমজ। শিশুটিকে ভর্তি করানোর পর থেকে নিবিড় তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকরা। তারা শিশুটিকে ভারমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। এক মাস আগে অপূর্ণাঙ্গ জোড়ার শিশুটির অস্ত্রোপচার করে ভারমুক্ত করা হয়। প্রফেসর রুহুল আমিন বলেন, বাংলাদেশে এই রকম আরও অনেক জোড়া শিশু আছে। কিন্তু বাবা-মা তাদের অবহেলা করেন বা লুকিয়ে রাখেন। আমাদের কাছে আনলে আমরা তাদের চিকিৎসা দিতে পারি।
অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ’র ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল অস্ত্রোপচার শেষে আমরা সুস্থ মোহাম্মদ আলীকে তার মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছি। এর পেছনে যারা কাজ করেছেন সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। রোগীদের বিদেশমুখী না হয়ে দেশে চিকিৎসা করানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এখানে অনেক আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা হয়, ভারত-আমেরিকাসহ নানা দেশ থেকে আমাদের এখানে চিকিৎসার জন্য মানুষ আসে। অপূর্ণাঙ্গ জোড়া শিশু মোহাম্মদ আলীর সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নতুন মাইলফলক রচনা করেছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএসএমএমইউ’র প্রো-ভিসি ডা. শহিদুল্লাহ সিকদার, প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ডা. জাকারিয়া স্বপন, কোষাধ্যক্ষ আলী আসগর মোড়লসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পূর্ণ সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ‘অপূর্ণাঙ্গ জোড়া’ শিশু মোহাম্মদ আলী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ