পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীসহ সারা দেশে এ বছরের প্রথম মাসেই শিশুসহ ২৫৯২ জন নারী-পুরুষ আহত ও নিহত হয়েছেন। এক মাসে দেশে সন্ত্রাসী কর্তৃক নিহত ৬৭ জন ও আহত হয় ৭৩ জন। র্যাব-পুলিশের সাথে ক্রস ফায়ারে নিহত হয়েছেন ৭ জন।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬৪ জন। একই পরিবারের ২ বোনসহ ৭ জন শিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে একই পরিবারে ৫ জনকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এছাড়া গত মাসে তুচ্ছ ঘটনায় খুনের ঘটনা বেড়েছে অনেক। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি গত জানুয়ারি মাসের মনিটরিংয়ের পরিসংখ্যানে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংস্থার জরিপে বলা হয়েছে, বেড়ে গেছে শিশু অপহরণ, যৌতুকের কারণে নারী নির্যাতন, হত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনাও। রাজনৈতিক ও সামাজিক কোন্দলের কারণে বেড়েছে এ হতাহতের সংখ্যা। দেশের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয় বলে মনে করে দেশের অন্যতম মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা।
জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারির পুরো মাসজুড়েই ছিল পারিবারিক কোন্দলে আহত ও নিহতের নানা ন্যক্কারজনক ঘটনা। গৃহকর্মী নির্যাতন ও খুন, নারী নির্যাতন, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সহিংসতা, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কর্তৃক নিরীহ মানুষ হত্যা। দেশের রাজনৈতিক অবক্ষয়ের সঙ্গে মানুষের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়েরও স্খলন ঘটেছে মারাত্মক। গত মাসে যৌতুকের জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে ৫ জন নারীকে এবং মারাত্মক আহত হয় ৯ জন নারী। মুন্সিগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে বোতল দিয়ে পিটিয়ে জখম করে এক স্বামী। এর মধ্যে যৌতুকের জন্য আহত ও নিহতের সংখ্যা বেশি ঘটে ঢাকায়, মোট ৬ জন, আহত ৩, নিহত ৩। তাছাড়া রাজশাহীতে নিহত হয় ২ জন। পারিবারিক কলহে চলতি মাসে নিহত হয় ২৫ জন ও আহত হয় ১২ জন। পারিবারিক কলহের জের ধরে ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিজের ভাই-বোনের তিন সন্তানকে পুড়িয়ে মারে। নারায়ণগঞ্জে পারিবারিক কলহের কারণে একই পরিবারের পাঁচ জনকে গলা কেটে হত্যা করে এক ব্যক্তি।
গত মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮ জন নারী, গণধর্ষণের শিকার হয় ৪ জন ও ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ১ জনকে। এই মাসে ১ জন শিশু ধর্ষিত হয়। নোয়াখালীতে একই সঙ্গে ২ বোন গণধর্ষণের শিকার হয়। নান্দাইলে বাসের চালক দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় এক নারী। এ ছাড়া, গত মাসে কথিত ক্রস ফায়ারের নামে মৃত্যু হয় ৬ জনের, এর মধ্যে পুলিশের ক্রস ফায়ারে নিহত হয় ৪ জন, র্যাব কর্তৃক ১ জন ও অন্যান্য বাহিনী কর্তৃক ১ জন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু হয় ১ জনের। আর আত্মহত্যা করেছে ৭ জন পুরুষ ও ২৬ জন নারী। এর মধ্যে ঢাকাতেই আত্মহত্যা করে ১৪ জন নারী। বাকি ঘটনাগুলো ঘটে বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা ও রংপুরে। পারিবারিক দ্বন্দ্ব, প্রেমে ব্যর্থতা ও যৌন হয়রানির কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
১১ জানুয়ারি প্রাইভেটকার ভাড়া করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে টাকা না দিয়ে চালককে হত্যা করে পালায় তিন যুবক। কেরানীগঞ্জে হিন্দুদের এক মেলায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে ঝনাটুদাস নামে এক যুবক নিহত হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কর্তৃক হতাহতের সংখ্যা বেশি। সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি, অদক্ষ চালক, পরিবহন ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ১৬৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে, আহত হয়েছে ৫৬৮ জন।
গত ১০ জানুয়ারি ঘন কুয়াশার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলেসহ নিহত হয় সাতজন। আহত হয় সাংবাদিকসহ ৪৬ জন। তাছাড়া মাদকের প্রভাবে বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে ১২ জন ও নিহতের সংখ্যা ৯ জন। তাছাড়া পানিতে ডুবে, অসাবধানবশত, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৫৪ জন। এ মাসেও চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয় ২ জনের। চলতি মাসে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজনৈতিক অজুহাতে গণগ্রেফতার হয়েছে ৬৩২ জনেরও বেশি। বিদ্যমান মানবাধিকার লংঘন অব্যাহত থাকলে একদিকে যেমন দেশের অগ্রগতি ব্যাহত হবে অন্যদিকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হবে। সংস্থা আরো মনে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লংঘন হয়। আইনশৃংখলা বাহিনীকে আরো মানবিক আচরণ করার অনুরোধ জানানো হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।