পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘুমের মধ্যেই ইন্তেকাল করেছেন দেশের খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযিুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। গত সোমবার রাতে ঘুমের মধ্যেই তিনি ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক করেন। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নোবেল বিজয়ী ড.মুহম্মদ ইউনূস, কয়েকজনমন্ত্রীসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্টজনেরা।
গতকালই ধানমন্ডি ঈদগা ময়দানে নামাজে জানাজার পর বনানী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। নামাজে জানাজায় দেশের বরেণ্য ব্যাক্তিরা ছাড়াও বিভিন্ন দলের রাজনীতিক, শিক্ষাবিদসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিরা অংশ গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে যেসব বড় বড় ভৌত অবকাঠামো হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোতেই কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। ১৯৯৩ সালে যাদের হাত দিয়ে বাংলাদেশের ইমারত বিধি তৈরি হয়, তিনি তাদের অন্যমত একজন। দেশের প্রথম মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধু সেতু (তখন নাম ছিল যমুন সেতু) নির্মাণে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের তিনি ছিলেন চেয়ারম্যান। আর এখন পদ্মা সেতু প্রকল্পের আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্যানেলেরও নেতৃত্বে ছিলেন। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলসহ চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পেও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের নেতৃত্ব দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। ২০১৮ সালের ১৯ জুন সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি ১৯৯৬ সালে বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন।
জামিলুর রেজা চৌধুরী ১৯৪২ সালের ১৫ নভেম্বর সিলেট শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী এবং মা হায়াতুন নেছা চৌধুরী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তার স্ত্রীর নাম সেলিনা নওরোজ চৌধুরী। ব্যক্তিজীবনে তিনি কারিশমা ফারহিন চৌধুরী, কাশিফ রেজা চৌধুরী নামের দুই সন্তানের জনক।
বাবার বদলির চাকরির কারণে জমিলুর রেজার শৈশব কেটেছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। তিনি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল, ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সেইন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল ও ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ১৯৫৯ সালে তিনি ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তখনকার আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ)। ১৯৬৩ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাস করে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৬৮ সালে সেখানেই পিএইচডি করেন। পিএইচডি শেষে দেশে ফিরে আবার বুয়েটে শিক্ষকতা শুরু করেন। পদোন্নতির ধারায় ১৯৭৬ সালে হন অধ্যাপক। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) অধ্যাপনা শেষে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন। সর্বশেষ এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। ##
জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
এক শোকবার্তায় তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
জাতীয় অধ্যাপক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। সালমান এফ রহমান বলেন, তিনি একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তি ছিলেন এবং আমার সাথে তাঁর হৃদ্যতাপূর্ণ ও আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর আকস্মিক মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি হলো। শোক বার্তায় তিনি বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ড. চৌধুরী ছিলেন একজন কর্মপ্রাণ মানুষ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব। সারাজীবন তিনি মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।