Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোজার হালতে ক্ষমা প্রার্থনা করা

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৩ এএম

রোজার হালতে ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি উত্তম আমল। মহান রাব্বুল আলামীন পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)কে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করার তাগিদ করেছেন। একই সাথে অন্যান্য বান্দাহদেরকেও ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এতদসম্পর্কে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : (ক) ‘(হে নবী!) আপনি নিজের জন্য এবং মুমিন নারী ও পুরুষের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’ (সূরা মোহাম্মাদ : আয়াত ১৯)। (খ) একমাত্র আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াময়। (সূরা নিসা : আয়াত ১০৬)। (গ) তোমার পরওয়ারদিগারের প্রশংসা সহকারে তার তাসবিহ পাঠ কর, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অবশ্যই তিনি অধিক পরিমাণে তাওবাহ গ্রহণকারী। (সূরা নাসর : আয়াত ৩)। (ঘ) যারা তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করে, তাদের জন্য আল্লাহর নিকট জান্নাত রয়েছে, যার নিম্নদেশে ঝর্ণা ধারা প্রবাহিত হয়, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঙ্গিণী এবং আল্লাহর পক্ষ হতে রেজামন্দি, অবশ্যই আল্লাহ তার দ্রষ্টা; যারা বলে হে আমাদের পরওয়ারদিগার! আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন, তারাই ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, বিনয়ী ও আল্লাহর পথে দানকারী এবং শেষ রাত্রে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১৫-১৭)। (ঙ) যদি কেউ কোনো অপরাধের কাজ কিংবা নিজের ওপর জুলুম করে বসে এবং পরে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, তবে সে আল্লাহকে ক্ষমাকারীও অনুগ্রহশীল পাবে। (সূরা নিসা : আয়াত ১১০-১১২)। (চ) আল্লাহ এমন নন যে, আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ এমনও নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন। (সূরা আনফাল : আয়াত ৩৩)। (ছ) ঐ সকল লোক, তাদের দ্বারা যদি কোনো খারাপ কাজ হয়ে যায় অথবা নিজের ওপর জুলুম করে বসে, তবে যেন সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া গোনাহ মাফ কে করবে? আর তারা যা করে থাকে, জ্ঞাতসারে তাই করতে থাকে। (সূরা আল ইমরান : আয়াত ১৩৫)। উল্লিখিত আয়াতে কারীমার আলোকে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে, ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা বান্দাহদের জন্য একান্ত আবশ্যক। বিশেষ করে মাহে রমজানে ক্ষমা করা খুবই উপযোগী আমল।

ক্ষমা প্রার্থনা সম্পর্কে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যেমন- (ক) হযরত আগার আল খুযানী (রা:) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : (মাঝে মধ্যে) আমার অন্তরের ওপর পর্দা ফেলা হয়। তখন আমি আল্লাহপাকের নিকট একশত বার ক্ষমা প্রার্থনা করি। (সহীহ মুসলিম)। (খ) হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা:)কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর শপথ আমি দৈনিক সত্তর বারের অধিক আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তওবাহ করি। (সহীহ বুখারী)। (গ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমরা গণনা করে দেখেছি, একই বৈঠকে রাসূলুল্লাহ (সা:) একশত বার এই দোয়াটি পড়েছেন- হে আমার পরওয়ারদিগার! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার তাওবাহ কবুল করুন, নিশ্চয়ই আপনি তাওবাহ কুবলকারী ও দয়াময়। (জামে তিরমিজী ও সুনানে আবু দাউদ)। (ঘ) হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) মৃত্যুর পূর্বে বেশি করে এ দোয়া পড়তেন- আল্লাহ পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা তার জন্য। আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তার নিকট তাওবাহ করি। (সহীহ বুখারী)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ