পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রমজানের উৎসব ও উচ্ছাস ঢাকাবাসীর ঐতিহ্য। শত শত বছরের এই আনন্দ ও উচ্ছাস এবার বিলীন। মরণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে গতকাল শনিবার প্রথম রমজানে এই দৃশ্যপটের দেখা মেলেনি কোথাও। অথচ প্রতি বছর রমজান মাস এলেই বদলে যায় ঢাকার রাজপথ। দুপুরের পর থেকেই ইফতারকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠে পুরো রাজধানী। রাস্তা, ফুটপাথ, বিভিন্ন তারকা হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সামনে বিক্রি হয় বাহারি ইফতার। এমনকি পাড়ার অলিতে-গলিতেও বসে ইফতারের দোকান। করোনার সংক্রমণ এড়াতে রাজধানীর রাস্তায়, ফুটপাথে ইফতারসামগ্রী বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজার গতকাল প্রথম রোজায় বসেনি। প্রতিবছর রোজা শুরুর আগে থেকে চকবাজারের সড়ক বন্ধ করে চলে ইফতারের দোকান বসানোর নানা কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এবার সে চিত্র ভিন্ন। বসানো হয়নি কোনো দোকান, নেই বিক্রেতাদের ব্যস্ততা। কেউ কেউ বসার চেষ্টা করলেও পুলিশ দ্রæত তাদের চলে যাওয়ার জন্য বলেন এবং দোকানদাররা বাধ্য হয়ে চলে যান।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজার যেন না বসে সে জন্য মাইকিং করা হয়েছে গতকাল। এ সময় বলা হয় করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর চকবাজার শাহী মসজিদ রোড ও চক সার্কুলার রোডে ইফতারের বাজার বসবে না। আপনারা ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন। তবে চকবাজারের বিভিন্ন গলির মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ইফতার নিয়ে দোকান বসতে দেখা গেছে।
রাজধানীর চকবাজারের ওসি মওদুদ হাওলাদার বলেন, এবার চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য সচেতনতার অংশ হিসেবে মাইকিং করা হচ্ছে যেন কেউ ইফতার নিয়ে না বসেন। যদিও গতকাল গুলিস্তানের নবাবপুর রোডে, কাপ্তানবাজারে, যাত্রবাড়ির শহীদ ফারুক রোডে, বিবির বাগিচায়, শ্যামপুরে হাতেগুণা কয়েক ইফতারির দোকান বসেছিলো।
বিভিন্ন এলাকা ঘোরে দেখা গেছে, সেই পুরাতন দৃশ্য এখন কোথাও নেই। নেই মানুষের ভিড়। বিভিন্ন রঙের সামিয়ানা, বাঁশ আর টেবিল বসিয়ে ফুটপাথ দখল করে অন্যান্যবারের মতো কোনো দোকান বসেনি। রাজধানীর বিভিন্নস্থান থেকে কেউ ছুটে যাননি বেইলী রোড, চকবাজার ও হাতিরপুর এলাকায়। নবাবী ঘিয়ে ভাজা বোম্বে জিলাপী, রেশমী জিলাপী, নবাবী স্পেশাল ফির্নি, নবাবী ক্ষিরসা, ফালুদা, নবাবী টানা পরোটা, কাশ্মিরী নবাবী পরোটা, চিকেন রেশমী কাবাবসহ চকবাজারের ‘বড় বাপের পোলাই খায়’ কিনতে যাননি কেউ।
মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার আলমগীর ক্যাটারিকের মালিক আলমগীর জানান, প্রতিবছর জমজমাট আযোজন থাকতো রমজানে। ইফতার কেনার জন্য এলাকার বাইরের লোকজনও ছুটে আসতেন। এবার রমজানটা একদম ফ্যাকাশে। মানুষের মনে শান্তি নেই। করোনার ভয়ে কেউ বাইরে আসেনা। আমরাও কোনো আয়োজন করিনি। সরকারের নিষেধাজ্ঞাও আছে।
ডিএমপির ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগরীর রাস্তা বা ফুটপাতে কোনো ধরনের ইফতারসামগ্রী বসতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ও সুপারশপে ডিএমপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নগরবাসীর সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।