Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল-মারকাজুল ইসলামীর অভাবনীয় সাফল্য

করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২০, ৮:৫৩ পিএম | আপডেট : ৮:৫৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে প্রথম দিকে আত্মীয়-স্বজনরাও এগিয়ে আসেনি। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেকায়দায় পড়ে। লাশ দাফনের বৃহৎ সংস্থা আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে ডেকে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে সহায়তা চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু মহামারীর এ বিপদের সময়ে কেউ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আহবানে সাড়া দেয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামী এনজিও আল-মারকাজুল ইসলামী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ও সন্দেহভাজন মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতি বছর লাশ দাফনের জন্য মোটা অঙ্কের অনুদান বা চাঁদা আদায় করলেও জাতির এ ভয়াবহ দুর্যোগকালে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এতে দেশের সাধারণ জনগণ হতবাক হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর নিরুপায় হয়ে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে ইসলামী এনজিও আল-মারকাজুল ইসলামীর সহায়তা চায়। আল-মারকাজুল ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হামযা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক সম্মত হন। তিনি করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে এ কার্যক্রম শুরু করেন।
গত ২৯ মার্চ প্রথম রাজধানীর খিলগাঁও-তালতলায় মহামারী করোনায় মৃত সন্দেহভাজন এক মহিলার লাশ দাফনের মাধ্যমে আল-মারকাজুল ইসলামী যাত্রা শুরু হয়। সংস্থাটি বর্তমানে ৩ জন মহিলাসহ ১৮ জন কর্মী এবং ৪টি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে করোনায় মৃত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের লাশ দাফনের কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত এ এনজিওটি করোনা পজেটিভ ১১৫টি লাশ এবং সন্দেহভাজনসহ সর্বমোট ১৬০টি লাশ দাফন কাজ সম্পন্ন করেছে। পরিস্থিতি বেশি অবনতি হলে আরো ২২টি অ্যাম্বুলেন্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে প্রথম আল-মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ নামে এনজিও প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থাটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। জাতির এ ভয়াবহ দুর্যোগকালে আল-মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ-এর মানবতাবাদী কার্যক্রমে বিভিন্ন সংস্থা, দু’টি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ অনেকেই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এনজিও’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হামযা বলেন, সংস্থাটি সরকারের সহযোগিতার মধ্য দিয়েই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজনদের দাফন কাজে যুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের পরামর্শ নিয়েই আমরা করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনসহ অন্যান্য সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আমাদের সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমান করোনায় মৃত ব্যক্তিদের কাফনের কাপড়, অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি ও কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
মোহাম্মদ হামযা জানান, করোনায় মৃত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃতদের লাশ দাফনের সক্রিয় ভূমিকা রাখায় এনটিভি, চ্যানেল-৯, আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস আল-মারকাজুল ইসলামীর প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশে এ এনজিওটি সম্প্রতি রাজধানীর ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে তিন দিন ১৫০ জন পুলিশকে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের কার্যক্রম ট্রেনিং দিয়েও পুলিশ কর্তৃপক্ষের ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হামযা বলেন, সরকার যদি আল-মারকাজুল ইসলামীকে আইসিইউ স্থাপন করে আর্থিক সহায়তা দেয় তাহলে দেড়শ’ জনবল নিয়ে সার্বক্ষণিক করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট সেবা দিতে প্রস্তুত আছেন। এতে মহাসঙ্কটকালে সরকারের ভাবমর্যাদা রক্ষা করতে পারবেন বলেও হামযা দাবি করেন।

 



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৫ এপ্রিল, ২০২০, ৯:২৮ পিএম says : 0
    আমি প্রথামেই দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক ও তার সহযোগীদের জানাই আমাদের উপার্জিত লাল সবুজের সালাম। আজ একটা সত্য ঘটনা এনারা আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। সেটা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ও জনগণের উপর তার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করে যাচ্ছেন তারই দৃষ্টান এখানে দিয়েছেন। প্রথম দিকে যখন দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রুগীরা মৃতবরন করেছিল তাদের লাশ দাফনে আত্মীয়-স্বজনরাও এগিয়ে আসেনি। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেকায়দায় পড়ে লাশ দাফনের বৃহৎ সংস্থা আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে ডেকে লাশ দাফনে সহায়তা চায় কিন্তু মহামারীর এ বিপদের সময়ে কেউ সাড়া দেয়নি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামী এনজিও আল-মারকাজুল ইসলামী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ও সন্দেহভাজন মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতি বছর লাশ দাফনের জন্য মোটা অঙ্কের অনুদান বা চাঁদা আদায় করে এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোনও নিয়মিত চাঁদা দেয় (প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্যে পত্রিকায় এসেছিল তিনি ও তার বোন আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামকে চাঁদা দেন) তারপরও জাতির এ ভয়াবহ দুর্যোগকালে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এতে দেশের সাধারণ জনগণ হতবাক হয়েছেন এটাই মহা সত্য। আমরা সালমান এফ রহমান সম্পর্কে কতরকম কথা শুনে থাকি কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তিনি যে একজন জনদরদী এটা আমরা ফলাও ভাবে জানিনা। তিনি ইতিপূর্বে ওনার বাবার নামে একটা ফাউন্ডেশন করে ওনার উপজেলা দোহারে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে প্রচুর জনহিত মূলক কাজ করেছেন। আর এবার তিনি যে কাজটা করলেন সেটা সারা দেশের জন্যে এই মহা বিপদকালে মানুষের পাশে দাড়িয়ে এক বিড়ল মানবিক দৃষ্টান্ত রেখেছেন। আমার নিজের গ্রাম নবাবগঞ্জ থানা আর সালমান এফ রহমান আমার এলাকার এমপি সেজন্যে আমি নিজেও আজ এই সংবাদে গর্ভিত। আল্লাহ্‌ সালমান এফ রহমানকে জনহিতকর কাজ করার তৌফিক দান করুন সাথে সাথে ওনাকে দীর্ঘজীবি ও সুস্বাস্থ দান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল-মারকাজুল-ইসলামী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ