Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভিবাসন বন্ধ ঘোষণা ট্রাম্পের ইতালিতে প্রথম কমল সংক্রমণ

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু হচ্ছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫২ পিএম

করোনা মহামারির জেরে বিশে^র মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। পাশাপাশি টালমাটাল অর্থনীতি ও বেকার সমস্য ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। এর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যর্থ ও অযোগ্য নেতৃত্বই দায়ী বলে মনে করেন সমালোচকরা। দেশটিতে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণে না এলেও আসন্ন নির্বাচনের আগে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বেশিরভাগ রাজ্যেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, চাকরির বাজার, নাগরিকদের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে অভিবাসন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে, ইতালিতে এই প্রথমবারের মতো কমেছে সংক্রমণের সংখ্যা। ওয়ার্ল্ডমিটারের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন ২৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫৫ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে পরিবারে ফিরেছেন ৬ লাখ ৬৫ হাজার ২২০ জন।

গতকাল অভিবাসন বন্ধ রাখার বিষয়ে একটি নির্দেশনামায় সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরে এক ট্যুইট বার্তায় তিনি জানান, ‘যে অদৃশ্য শত্রæ আমাদের আক্রমণ করেছে, তার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আমাদের এখন দেশের চাকরি, মার্কিনিদের জন্য বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। সেই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আপাতত বন্ধ রাখতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করলাম।’ লকডাউনের জেরেই যে পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে সে কথা মেনে নিলেও, ট্রাম্প এখনও মনে করেন যে, কিছু কিছু এলাকা থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া দরকার। টেক্সাস, মিনেসোটার মতো রাজ্যে যে বিক্ষোভ চলছে, তাতে যে তার প্রচ্ছন্ন মদদ রয়েছে, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

দক্ষিণ ক্যারোলিনা সোমবার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে শুরু করে ফ্লাই মার্কেটের খুচরা দোকানগুলিকে পুনরায় চালু করার অনুমতি দেয়। সোমবার থেকে জর্জিয়ার বাসিন্দাদের সীমিত আকারে চলাফেরার অনুমতি দেয়ার কথা শুক্রবারই জানিয়েছিলেন গভর্নর ব্রায়ান কেম্প। টেনেসির লকডাউন ৩০ এপ্রিল শেষ হবে, সেখানে বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠার ১ মে থেকে পুনরায় চালু হতে পারে বলে গভর্নর বিল লি জানিয়েছেন। দক্ষিণের এই তিন রাজ্যেরই গভর্নররা হচ্ছেন রিপাবলিকান।

ম্যাসাচুসেটস মহামারিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং সোমবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউজের ব্রিফিংয়ে করোনাভাইরাস প্রতিক্রিয়া সমন্বয়কারী ডক্টর দেবোরাহ এল ব্রিকস উল্লেখ জানিয়েছেন, ‘বোস্টন অঞ্চল এবং ম্যাসাচুসেটস ও শিকাগো জুড়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

তবে সংক্রমণের চ‚ড়ান্ত পর্যায় পেরিয়ে আসা গেছে বলে নিশ্চিত নয় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্য নিউ ইয়র্ক। তাই এখনো সতর্ক অবস্থানেই আছে নিউইয়র্ক প্রশাসন। কিন্তু লকডাউন ভাঙতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন খোদ প্রেসিডেন্ট। নানা জায়গায় নানা বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছেন, যা ভালোভাবে নিচ্ছেন না নিজ দলের নেতাকর্মী থেকে বিরোধীরাও। নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেছেন, ‘এটা সবে হাফ টাইম! কিন্তু এর পর কী হবে, সেটা নির্ভর করছে এরপর আমরা কী করছি তার ওপর।’

গতকাল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরো মারা গেছে- যুক্তরাষ্ট্রে ৯৮১, যুক্তরাজ্যে ৮২৮, ইকালিতে ৫৩৪, স্পেনে ৪৩০, সুইডেনে ১৮৫, বেলজিয়ামে ১৭০, হল্যান্ডে ১৬৫, তুরস্কে ১১৯, ইরানে ৮৮, জার্মানিতে ৭২, রাশিয়ায় ৫১, ফিনল্যান্ডে ৪৩, কানাডায় ৩৮, পর্তুগালে ২৭, ইন্দোনেশিয়া ও মেক্সিকোতে ২৬, পাকিস্তানে ২৫, পোল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায় ২১ এবং রোমানিয়ায় ২০ জন।

এদিকে, সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথমবারের মতো ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল বা বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন এক লাখ ৮ হাজার ২৩৭ জন। যা আগের দিনের তুলনায় ২০ জন কম। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই পার্থক্য খুব সামান্য হলেও এটা খুবই ‘ইতিবাচক অগ্রগতি’। ইতালির লকডাউন আগামী ৩ মে পর্যন্ত চলবে। কিন্তু এরইমধ্যে কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। জার্মানিতে এক মাস আগে জারি করা লকডাউন শিথিল করতে শুরু করেছে। যার অংশ হিসেবে ছোট ছোট দোকান-পাট, গাড়ির ডিলারশিপ এবং বাইসাইকেলের দোকান খুলে দেয়া হয়েছে।
এশিয়ার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে সর্বাধিক মৃত্যু হল ৪৭ জনের। এর ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৯০। আরও ১ হাজার ৩৩৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। তার জেরে আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৬০১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় পাকিস্তানে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ৭০৫ জন। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ২১৬। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। ফলে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯২। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি।

 



 

Show all comments
  • ShahJalal ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৩৪ এএম says : 0
    Who went to depending on software & IT, entertainment media, wine & weed industries, they are jobless across the world, not only in America. Bangladesh job seeker would must ignored from such as industries as well.
    Total Reply(0) Reply
  • তানিয়া ২২ এপ্রিল, ২০২০, ৩:৫৭ এএম says : 0
    সবাই সতর্ক থাকতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তুষার আহমেদ ২২ এপ্রিল, ২০২০, ৩:৫৮ এএম says : 0
    আমার মতে সারাবিশ্বের যেসব দেশে এখনও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে সেসব দেশে আরও কিছু দিন লকডাউন রাখা উচিত
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ