পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : আবারও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মতৈক্য গড়ে তুলতে জনগণকে সম্পৃক্ত করতেও তাগিদ দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার একপর্যায়ে মন্ত্রী ও দলীয় নেতাকর্মীদের আবারো জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান জঙ্গিবাদ বৈশ্বিক সমস্যা। আমরা এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছি। জঙ্গি হামলার কারণে আমাদের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে। এ কারণে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের এ নিয়ে জনগণের সঙ্গে কথা বলতে হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক মঙ্গোলিয়া সফর সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় তিনি জানান, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ঐকমত্যের সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু জনগণই ক্ষমতার উৎস, সেহেতু জনগণকে এ কাজে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।
অন্যদিকে, বৈঠক শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবারের মঙ্গোলিয়া সফর খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ে তিনি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা হলেই ভারত-বাংলাদেশ আসামি হস্তান্তর
কারো বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে প্রমাণ উপস্থাপন না করেও বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে আসামি বিনিময় করতে পারবে। ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দ-প্রাপ্ত আসামি বিনিময়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান বহিঃসমর্পণ চুক্তির একটি ধারা সংশোধন করে ওই সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতের সঙ্গে করা এই ‘বহিঃসমর্পণ চুক্তি’ সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন পায়।
ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দ-প্রাপ্ত আসামি বিনিময়ে ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে ‘বহিঃসমর্পণ চুক্তি’ করে বাংলাদেশ। ওই বছরের ৭ অক্টোবর এই চুক্তিতে অনুসমর্থন দেয় মন্ত্রিসভা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে। চুক্তির একটি ‘জটিল’ ধারা ভারত সরকার ‘সহজ’ করার অনুরোধ করেছিল। যদি আমাদের দেশে কোনো জজ, ম্যাজিস্ট্রেট, ট্রাইব্যুনাল বা এ ধরনের অথরিটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু করে থাকে আর সে যদি ভারতের লোক হয় তাহলে আমরা তার জন্য বহিঃসমর্পণের সুপারিশ করতে পারব।
বাংলাদেশের কেউ ভারতে আছে, কিন্তু বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়ে গেছে, ট্রায়াল করার জন্য ভারত সরকার তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে। অনুরূপভাবে ভারত সরকার যদি ওয়ারেন্ট থাকা কাউকে চায় আমরা তাকে হ্যান্ডওভার করে দেব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা কাউকে বিচারের সম্মুখীন করতে বহিঃসমর্পণের জন্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে হতো। চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা সায় দেওয়ায় এখন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেই যে কাউকে বহিঃসমর্পণের সুপারিশ করা যাবে বলে শফিউল আলম জানান।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৮ বছর কারাবন্দী থাকার পর উত্তর-পূর্ব ভারতের উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার সাজার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে হস্তান্তরের বিষয়টি বহুদিন আটকে ছিল। বলা হচ্ছিল, আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় তাকে ফেরানো যাচ্ছে না।শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বহিঃসমর্পণ চুক্তি হলেও প্রমাণ দাখিলের বাধ্যবাধকতার কারণে ওই আইনে তাকে ফেরানো যায়নি। একই জটিলতা ছিল নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের প্রধান আসামী নূর হোসেনের ক্ষেত্রেও।
শেষ পর্যন্ত তাদের হন্তান্তর করা হলেও তা বহিঃসমর্পণ চুক্তির আওতায় হয়নি বলে সে সময় জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কীভাবে হস্তান্তর হয়েছে সেই ব্যাখ্যায় তিনি সে সময় বলেছিলেন, এটা বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে হয়নি। তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার আগে সেদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে। এখন ছেড়ে দেওয়ার পর তারা নিয়ে গেছেন।
নার্স নিয়োগে শূন্যপদে কোটা শিথিল
শূন্যপদে প্রায় ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগে কোটা শিথিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিসভার বৈঠকে নয় হাজার ৬১৬ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স সরাসরি নিয়োগে কোটা শিথিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই প্রস্তাব অনুমোদনের ফলে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে জাতীয় মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দিয়ে তা পূরণ করা যাবে।
কেন কোটা পদ্ধতি শিথিল করা হলÑএমন প্রশ্নে শফিউল বলেন, এখন মহিলাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা পাবেন কই? মুক্তিযোদ্ধাতো নাইই আসলে এখন। যাদের জন্ম একাত্তর সালের পরে, এরাই হল ক্যান্ডিডেট। (মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থী) পাওয়া যাচ্ছে না, সন্তান, নাতি-পুতিসহ পাচ্ছি না কাউকে।
সচিব বলেন, লোক পাওয়া যাচ্ছে না, কিন্তু পদ ফাঁকা থাকবে কেন? নয় হাজার ৬১৬টি শূন্য পদ পূরণের জন্য কোটা শিথিল করা হয়েছে। নয় হাজার ৬১৬ টি শূন্য পদ পূরণ হয়ে গেলে ভবিষ্যতে আবার কোটা শিথিলের জন্য নতুন করে মন্ত্রিসভার অনুমতি নিতে হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান। তিনি বলেন, তিন হাজার ৬১৬টি সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগে যাদের মৌখিক পরীক্ষা চলছে তারাও এই সুযোগ পাবেন।
এর আগে ৩৪তম ও ৩৫তম বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে শূন্যপদে কোটা শিথিলের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট আইনের খসড়াতেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগে থেকেই আইনটি ছিল জানিয়ে শফিউল বলেন, আইনের কতগুলো সংশোধনী হয় সামরিক শাসনামলে। এ কারণে এটাকে নতুনভাবে সাজিয়ে আনা হয়েছে। সবগুলো মিলিয়ে কম্পোজিট ল’ আকারে আনা হয়েছে। আগের তুলনায় পরিসর বেড়েছে।নতুন আইন হলে সরকারের অনুমোদন নিয়ে পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশের যে কোনো স্থানে নতুন শাখা খুলতে পারবে।
আইনের অন্য বিষয়গুলো আগের মতোই রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের আলোকে আঁশজাতীয় ফসল উৎপাদন ও গবেষণা; পাটবীজ উৎপাদন, সরবারহ, সংগ্রহ ও বিতরণ ছাড়াও পাটজাত পণ্য নিয়ে গবেষণায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কৃষকদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা যাবে।মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব জানান, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালনার জন্য একজন খ্যাতনামা পাটজাত পণ্য প্রযুক্তিবিদ মহাপরিচালক থাকবেন। এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প ও বণিক সমিতি, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রতিনিধি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রতিনিধি, ইনস্টিটউটের পরিচালকরা, পাট গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত দু’জন বিজ্ঞানী, একজন কৃষক, একই ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, কৃষি, অর্থ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় মনোনীত উপ-সচিব মর্যাদার ৪ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় মনোনীত বাংলাদেশ শিল্প গবেষণা পরিষদের প্রতিনিধি, পাট অধিদফতরের পরিচালক, ইনস্টিটউটের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) প্রতিনিধিরা সদস্য থাকবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।