পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলা হতে পারে এমন তথ্য ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছিল। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও মালিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (ইউজিসি) অধ্যাপক আবদুল মান্নান, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, উপাচার্য, ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এক সময় স্কলাস্টিকা স্কুল ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা শুনলে মাথা উঁচু হয়ে যেত। এখন মাথা হেঁট হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, জঙ্গিবাদে যুক্ত তরুণের সংখ্যা কম। যারা নিখোঁজ আছেন তারা কে কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে তথ্য আছে। আমরা কঠোর হতে চাই না। আমরা বিপদগামীদের বলব তোমরা ফিরে এসো। গুলশানে হামলা হতে পারে এমন তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে ছিল। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছিল। ঘটনার তিন মিনিটের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক সেখানে পৌঁছায়। পুলিশ তৈরি ছিল। আধা ঘণ্টার মধ্যে সেখানে পৌঁছাতে পারত। কিন্তু রেস্তোরাঁর ভেতরে কে কি অবস্থায় আছে সে সম্পর্কে চিন্তা করতে হয়েছে। যারা সেখানে হামলা করেছিল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সব চেষ্টাই করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর অভিযানে ১৩ মিনিটের মধ্যে জিম্মি সংকটের সমাধান হয়েছে। শোলাকিয়ার ঘটনায়ও আগাম তথ্য ছিল বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
একই অনুষ্ঠানে আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেন, কুরআনের কিছু সূরার অংশ বিকৃত করে জিহাদের নামে তরুণদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। বেহেস্তের আশায় তারা জীবন বিসর্জন দেয়। তারা মানবতার বিরুদ্ধে হামলা করছে। এসব হামলা করে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। দেশের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতিকে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছে। আগে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ প্রবণতা দেখা গেলেও এখন ভালো ভালো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেরাও জঙ্গি কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের যার যার অবস্থান থেকে এই সঙ্কট মোকাবেলা করা উচিত। তিনি আরো বলেন, একটি নির্দিষ্ট মহলের ষড়যন্ত্রে দেশে জঙ্গি হামলা হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জঙ্গিবাদকে না বলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জঙ্গিবাদ আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা নয়, সামাজিক-বৈশ্বিক সমস্যা। তিনি বলেন, আমাদের আত্মসমালোচনা দরকার। যারা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে দেশকে ভিন্ন পথে নিয়ে যেতে চায় তাদের মোকাবেলা করতে হবে। এক সময় শোনা যেত মাদ্রাসায় জঙ্গি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জঙ্গি তৈরি হচ্ছে। এটা বাস্তবতা। এটাকে অস্বীকার করা যাবে না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে দেশজ সংস্কৃতির চর্চা বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, যারা বিপথে গেছেন তারা ফিরে আসুন। দানব নিয়ে খেলবেন না। আমরা জানি কারা এই খেলা খেলছেন। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে শান্তিরর পথে নিয়ে যাই। তিনি আরো বলেন, গুলশানের ঘটনায় যেসব জঙ্গি মারা গেছে তাদের মরদেহ নিতেও কেউ আসেনি। শোলাকিয়ায় যে মারা গেছে তার জানাযায়ও কেউ আসেনি। এটাই প্রমাণ করে এই সমস্ত মানুষকে কেউ পছন্দ করে না, কেউ চায় না। তাই যারা বিপথে গেছেন তারা ফিরে আসুন। যারা শান্তির ধর্মকে নষ্ট করছে, তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে নির্মূল করা হবে। সুফি, নজরুল, রবীন্দ্রনাথের দেশে কোনো জঙ্গির ঠাঁই নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।