Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থবছরের শেষ দিকে সরকারের ঋণ নেয়ার হিড়িক

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার চাহিদা ছিল খুবই কম। জুনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ঋণ নেয়ার চেয়ে ৭ হাজার ২১৩ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করে সরকার। তবে শেষ সময়ে হঠাৎ করে ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। এতে অর্থবছরের শেষে নিট ঋণ বেড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বেশ কিছু বড় প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় ব্যাপক সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরও ঋণ নিতে হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেষে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ কমেছিল ৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। 

এদিকে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও ঋণপ্রবাহ সা¤প্রতিক সময়ে বাড়ছে। সর্বশেষ হিসাবে গত মে পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ১৭ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময় শেষে যা পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা ছিল। এতে এক বছরের ব্যবধানে বেসরকারি খাতে ঋণ বেড়েছে ৯২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা বা ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত কয়েক বছরের মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির এ হার সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে প্রাক্কলিত ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশের তুলনায়ও যা বেশি।
গত অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৩১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা করা হয়। শেষ সময়ে ব্যাপক ঋণ নিলেও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও যেতে হয়নি সরকারকে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় জুন শেষে ব্যাংকে নিট ঋণ ৪ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা বেড়ে মোট স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা নেয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে গত অর্থবছর সরকার নিট তিন হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকে মোট ঋণ কমে হয়েছে ৮৯ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর ব্যাংক থেকে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
ব্যাংকের সঙ্গে সুদহারে অনেক বেশি পার্থক্য থাকায় সা¤প্রতিক বছরগুলোতে অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে গড়ে ১১ শতাংশের বেশি সুদ পাওয়া গেলেও ব্যাংকে টাকা খাটিয়ে পাওয়া যাচ্ছে ৬ শতাংশের কম। 
এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্রে বেশি টাকা খাটাচ্ছেন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ১১ মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ৩০ হাজার ৯৩ কোটি টাকা পেয়েছে সরকার। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে নির্ধারিত ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পরিমাণ ঋণ এসেছে। 
অবশ্য সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২৮ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রাও এরই মধ্যে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ২৬ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। 
এতে একই সময়ের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে তিন হাজার ৫৩১ কোটি টাকা, যা ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থবছরের শেষ দিকে সরকারের ঋণ নেয়ার হিড়িক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ