পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্র্টার : তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব প্রফেসর আনু মোহাম্মদ বলেছেন, রামপাল প্রকল্পের কাজ যত এগোবে, বাংলাদেশের মানুষের ভারতের প্রতি ক্ষোভ তত বাড়বে। প্রকল্পের নির্মাণকাজ দেখে মনে হচ্ছে, এটা ভারতের স্বার্থে নির্মিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ, এমনকি আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সমর্থক এই প্রকল্পের পক্ষে নয়। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জনগণকে সুন্দরবন রক্ষায় এই প্রকল্প বাতিলের জন্য মাঠে নামার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কার্যালয় মুক্তি ভবনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সংবাদ সম্মেলনে আনু মোহাম্মদ এসব কথা বলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের বেশিরভাগ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে এই প্রকল্প নির্মাণ করবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বাতিলে দুই দফা কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। কর্মসূচি অনুসারে আগামী সোমবার বিকেল চারটায় সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং একই সময়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে। ২৮ জুলাই বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর বিক্ষোভ মিছিল হবে।
কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর আনু মুহাম্মদ বলেন, ঠিকঠাকভাবে গণভোট হলে সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ সমর্থন দেবে না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের মতো নয়, সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারলে জনগণ সুন্দরবন ধ্বংসে কোনো প্রকল্পকে সমর্থন করবে না। কারণ সরকারের সুন্দরবন বিনাশী একগুঁয়ে তৎপরতার কারণে দেশের ভয়াবহ ক্ষতি হবে। তাই অবিলম্বে সরকারকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে আসতে হবে।
তিনি বলেন, সুন্দরবন বিনাশে সরকার তার একগুঁয়ে বিবেচনাহীন জনবিরোধী তৎপরতা অব্যহত রেখেছে। এই কারণে সুন্দরবন বিনাশী বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও অন্যান্য অপতৎপরতা বেড়েছে। কতিপয় দেশি-বিদেশি গোষ্ঠীর মুনাফা উন্মাদনা সরকারকে বধির করেছে। রামপাল প্রকল্প সামনে রেখে একে একে ওরিয়নের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিপইয়ার্ড, সাইলো, সিমেন্ট কারখানাসহ নানা বাণিজ্যিক ও দখলদারি অপৎতরতা বেড়েছে। তিনি সরকারকে মুনাফার অন্ধত্ব থেকে মুক্ত হয়ে চোখ খুলে সুন্দরবনের দিকে তাকাতে অনুরোধ জানান।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বিশ্বের এবং বাংলাদেশের একজনও বিশেষজ্ঞ পাওয়া যাবে না, যিনি মনে করেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না। তিনি আরো বলেন, এটা প্রকৃতির বিশাল সম্পদ। সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কমিটির সদস্য প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা বলেন, রামপাল প্রকল্পের নির্মাণ কাজে ভারতীয় অংশীদার জাতীয় তাপবিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠান (ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি-এনটিপিসি) নিজ দেশে যত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে, সব কয়টিতে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী হয়েছে। সে দেশেরই এক প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় সবচেয়ে বেশি দূষণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এনটিপিসি। রামপাল প্রকল্পে ভূমি উন্নয়ন ও অন্যান্য কাজ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে সুন্দরবনসংলগ্ন নদীগুলোতে দূষণ ঘটানো হচ্ছে। এ ছাড়া আরেকটি পরিবেশ–বিষয়ক তদারকি সংস্থা পরিবেশ ও ভৌগোলিক তথ্যসেবাকেন্দ্রের (সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস-সিইজিআইএস) পর্যবেক্ষণে দূষণের বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ প্রকল্প নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ভারতমৈত্রী বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সেই দূষণ বন্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি।
রামপাল প্রকল্প বাতিলের আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হওয়ার পর সেখানে পরিবেশগত ক্ষতি শুরু হয়ে গেছে। সুন্দরবনসংলগ্ন নদীগুলোতে দূষণ দেখা যাচ্ছে। এতে এটা পরিষ্কার যে মূল নির্মাণ কাজ শুরু হলে দূষণ আরও বাড়বে। তাই সুন্দরবন রক্ষা করতে চাইলে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, হায়দার আকবর খান রনো, সাইফুল হক, মোশাররফ হোসেন নান্নু, বজলুর রশীদ ফিরোজ, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, প্রফেসর মোশাহীদা সুলতানা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।