Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঐক্যে সাড়া না দেয়া মানে উগ্রবাদে উৎসাহ দেয়া - নজরুল ইসলাম খান

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অপরাধীদের ধরার নামে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করা হচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের চলমান ক্রান্তিকালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া একান্ত জরুরি বলে মনে করে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেছেন, জাতীয় ঐক্যে সাড়া না দিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ দিচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে দেশ ও জনগণের প্রতি কর্তব্যবোধ থেকে যা কিছু করা সম্ভব বিএনপি তাই করবে। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীতে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, সম্প্রতি গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের ধরার নামে সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করছে।
তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, একটি মধ্যপন্থী, উদার, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি সব সময় সন্ত্রাসবাদ-উগ্রবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করেছে। বিগত দিনে বিএনপি সরকারে থাকাকালীন সফলভাবে উগ্রবাদ দমনে ব্যবস্থা নিয়েছিল এবং এর সাথে জড়িত মূল নেতাদের আটক করে বিচার করেছিল এবং সমাজে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে এনেছিল। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন তিনি।
তিনি বলেন, উগ্রবাদ মোকাবিলায় বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের যে ডাক দিয়েছেন তা দেশে-বিদেশে খুবই প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া না দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার জাতিকে বিভক্ত করে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের পক্ষ নিয়েছে। এমনকি সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও নেতা ব্লেইম গেমের আশ্রয় নিয়ে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে দোষারোপ করছেন। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণকে হতাশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী-প্রশাসন দিয়ে সন্ত্রাসবাদ দমন সম্ভব হয়নি, হবেও না। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। কিন্তু সরকার সে ঐক্যের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। আর কার্যত তারা প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ দিচ্ছে।

গুলশানের বিশিষ্ট নাগরিক-বুদ্ধিজীবীদের সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময়ে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়ার যে বিষয় আসে সে প্রসঙ্গ তুলে এক সাংবাদিক জানতে চান এই মুহূর্তে বিএনপির জামায়াত বড় নাকি জাতীয় ঐক্য বড় ইস্যু?
এ প্রশ্নের উত্তরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) একটি আরেকটির অল্টারনেটিভ করছেন কেনো? যখন আলোচনা শুরু হবে তখন এটা দেখা যাবে, যখন দলের যে সিদ্ধান্ত হবে, সেটা হবে। রাজাকার, স্বৈরাচারকে নিয়ে সরকার গঠন করে যখন আরেকজনের বিরুদ্ধে কথা বলে, তখন প্রশ্ন করতে পারেন না আপনারা জানতে চান তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, সন্ত্রাসবাদ-উগ্রবাদ মোকাবিলায় বিএনপি সরকারকে সহযোগিতা করতে চাইছে। সেজন্যই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন খালেদা জিয়া। এখন সরকার নানা শর্তারোপ করে যদি এই সহযোগিতা ফিরিয়ে দিতে চায়, তাহলে দিতে পারে। এই সহযোগিতা ফিরিয়ে দিয়ে যে তারা সমস্যার সমাধান করতে পারছে- তাও তো না। কিন্তু ঘটনার পরিমাণ, সংখ্যা এবং গুণগত অবস্থা তো বাড়ছে ক্রমাগত। প্রথমে একজন-দুইজন করে বিদেশী নিহত হয়েছেন, এবারে একসাথে ১৭ জন বিদেশী নিহত হয়েছেন।
জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএনপির কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে আলোচনা করছেন। দলের সিনিয়র নেতাদের সাথেও আলোচনা হয়েছে। ২০ দলীয় নেতাদের সাথে হয়েছে। আরো আলোচনা করে দেশনেত্রী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। জাতীয় ঐক্য না হলেও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে উগ্রবাদ-সন্ত্রাস দমনে বিএনপির পক্ষে থেকে যা কিছু করা প্রয়োজন, তা করা হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্সের নিস শহরে বাস্তিল দিবসের উৎসবে সন্ত্রাসীদের ট্রাক চাপায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান নজরুল ইসলাম খান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঐক্যে সাড়া না দেয়া মানে উগ্রবাদে উৎসাহ দেয়া - নজরুল ইসলাম খান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ