Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ

মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদফতরে চিঠি চালাচালি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০১ এএম

সরকারি ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ। এতেকরে প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে বিপাকে পড়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদফতর। এদিকে আইনের বেড়াজালে নতুন টেন্ডার আহ্বান করতে পারছে না গণপূর্ত অধিদফতর। এর আগে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে জিকে শামীমের সকল কাজ বাতিল করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এ নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদফতরের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
এ প্রসঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ইনকিলাবকে বলেন, নিয়মানুযায়ী প্রকল্পগুলোর চুক্তি বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে। কি কারণে বাতিল করতে পারে নাই তা আমার জানা নেই।

যুবলীগের নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের বাস্তবায়নাধীন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। মূলত শামীম গ্রেফতার হওয়ার পর তার এবং ব্যবসায়িক শরিকদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়ায় কাজ চালু রাখার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আর এ কারণে এই প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী হঠাৎ করে বেকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবন, পঙ্গু হাসপাতাল, নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল, এনজিও ভবন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ভবন, বিজ্ঞান জাদুঘর, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, রাজধানীর আশকোনায় র‌্যাবের সদর দফতর, গাজীপুরের পোড়াবাড়িতে র‌্যাব ট্রেনিং সেন্টার, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবন, ক্যাবিনেট ভবন প্রকল্পের কাজসহ গণপূর্তের একাধিক কাজে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় কাজগুলো। এতে একদিকে যেমন যথাসময় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের শঙ্কা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে প্রকল্পগুলোতে সরকারের বেশি অর্থব্যয়ের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। যে কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে গণপূর্ত অধিদফতর। বিষয়টি নিয়ে একনেক বৈঠকেও আলোচনা হয়। কিভাবে একটি কোম্পানি এতগুলো বড় প্রকল্পের কাজ পায়, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে জবাবে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই শামীম সর্বনিম্ন দরপত্র দাতা হিসেবে ইজিপির মাধ্যমে কাজগুলো পেয়েছেন।

এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, আমি যোগদান করার আগে এসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। এখন সব বন্ধ। আমি কিছু করতে পারব না। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা না দিলে কিছু করা যাবে না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। যে কারণে কোনো সিদ্ধান্তই নেয়া যাচ্ছে না।

গোলাম কিবরিয়া শামীমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শওকত ওসমান বলেন, শামীমের বিরুদ্ধে কোনো ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির অভিযোগ নেই। তিনি একজন ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী। তিনি যেসব সরকারি কাজ সম্পন্ন করার মাধ্যমে বিল পেয়েছেন, সেই টাকা থেকে ১৬৫ কোটি টাকা এফডিআর করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রকল্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ