পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যোগাযোগ আসলে কোনো দেশ বা জাতির জন্য ‘পছন্দ’ হিসেবে বেছে নেয়ার ব্যাপার নয়, এটা কৌশলগত সুযোগ হিসেবে লুফে নেয়ার ব্যাপার। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার ধরন যেমনই হোক, এটার লক্ষ্য হওয়া উচিত টেকসই ও অংশগ্রহণমূলক প্রবৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন। গতকাল মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরে একাদশ এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় প্লেনারি অধিবেশনে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন বলে বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে। এদিকে আসেম সম্মেলনের সাইডলাইনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে এক সাক্ষাতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের সঙ্গে থাকার দৃঢ়সংকল্প ও সংহতি প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরে আসেন। আসেম ভিলা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে সম্মেলনস্থলে পৌঁছলে মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট সাখিয়াজিন এলবেগদোর্জ তাকে অভ্যর্থনা জানান।
মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে প্রদত্ত ভাষণে বলেন, মঙ্গোলিয়ার সরকার ও জনগণ এই আসেম সম্মেলনকে অত্যাধিক গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে, যে সম্মেলনের দিকে এখন সমগ্র বিশ্বও তাকিয়ে রয়েছে। এই সামিট যেমন একদিকে আসেম-এর ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে তেমনই মঙ্গোলিয়া ঐতিহাসিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৮১০ বছর পূর্তিও উদযাপন করছে। যে কারণে এ বছর আমাদের কাছে এই সম্মেলন আয়োজনটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
উদ্বোধনী অধিবেশনে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট তিন ক্যাও, শ্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো, নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারি ম্যাককিউলী বক্তৃতা করবেন।
‘টু ডিকেডস অব পার্টনারশিপ : টেকিং স্টক অ্যান্ড লুকিং ফরোয়ার্ড’ এবং ‘প্রমোটিং আসেম পার্টনারশিপ ফর গ্রেটার কানেকটিভিটি’ শীর্ষক সম্মেলনে দুটি প্লানারি সেশন ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় প্লানারি সেশনে ভাষণ দেন।
বাসস জানায় ‘টু ডিকেডস অব পার্টনারশিপ : টেকিং স্টক অ্যান্ড লুকিং ফরোয়ার্ড’ বা ‘আসেমের ২০ বছর : যোগাযোগের মাধ্যমে আগামী দিনের অংশীদারিত্ব’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সম্মেলনের এই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কৌশলগত সুযোগ হিসেবে লুফে নেয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা সবার জন্য কৌশলগত সম্ভাবনা ও সুযোগে পরিণত হয়েছে। টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে যোগাযোগ কাঠামোর রূপরেখা কী হবে তা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ আসেমের দেশগুলো নতুন প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র ও সংযোগস্থলে পরিণত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের পরিচিত বাণিজ্য ও শিল্প অংশীদাররা এখন নতুনদের জন্য পথ করে দিচ্ছে। আমাদের অর্থনীতিতে উৎপাদন ও সেবা খাতে ধারাবাহিক ও দায়িত্বশীল বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠছে এবং পারস্পরিক আঞ্চলিক কর্মকা-ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পণ্য বিপণন ব্যবস্থাপনাও (সাপ্লাইচেইন) সম্প্রসারিত হচ্ছে। যথাযথ মান এবং সংহতি, বন্ধুত্ব, পারস্পরিক আস্থা ও সমতার মতো নীতির ভিত্তিতেই সব উন্নয়ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে বহুমুখী যোগাযোগের ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) এবং বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডোর (বিসিআইএম-ইসি) অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যোগাযোগ তৈরিতে বিপুল সুযোগ সৃষ্টি হয়ে জনগণের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন ঘটবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাপানের সংহতি প্রকাশ
বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের সঙ্গে থাকার দৃঢ়সংকল্প ও সংহতি প্রকাশ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানী উলানবাটোরে আসেম সম্মেলনের সাইডলাইনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে এক সাক্ষাতে এ সংহতি প্রকাশ করেন তিনি।
সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার শেঁকড় খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। সন্ত্রাসকে কখনই প্রশ্রয় দেয় না বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বুদ্ধিমান জনগণ এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সক্রিয়। তিনি জাপানকে আশ্বস্ত করেন- অপরাধীরা ছাড় পাবে না। তাদের মূল হোতাদেরও ধরা হবে।
মিটিং থেকে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের সঙ্গে দৃঢ়সংকল্প ও সংহতি প্রকাশ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।
শিনজো আবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকল্পসমূহে সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার তথ্য বিনিময়ের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। গুলশান হামলায় আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি ও সংহতি দেখানোর জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।
বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শিনজো আবে বলেন, আসেম সম্মেলন শক্তিশালী বার্তা দেবে, আমরা সন্ত্রাস সহ্য করবো না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক গুলশান হামলার শিকার জাপানি নাগরিকদের জন্য আবারও শোক প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, গুলশান হামলার ঘটনায় যারা জীবন হারিয়েছেন, জাপান ও বাংলাদেশের মানুষগুলোর পাশাপাশি কয়েকটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সেই মানুষগুলো বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করছিলেন।
জাপান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাপানকে আমরা পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, জাপানি নাগরিকসহ যারা বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, মঙ্গোলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম এবং বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান।
রুশ প্রধানমন্ত্রী ও সুইস প্রেসিডেন্টসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তাঁর পূর্বনির্ধারিত আসেম সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং সাইড লাইনে বেশ কয়েকজন এশিয়া ও ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে মঙ্গোলিয়া সফরের প্রথম দিন অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়েছেন।
সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক ছাড়াও এদিন, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদভ এবং ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো জেন্টেলনি সিলভেরির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক বিকেলে আসেম সম্মেলন এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোর বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এবং তাঁর জনগণের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যায় পর্যন্ত জনগণের গৃহিত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
ইতালীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সন্ত্রাসি হামলায় নিহত ইতালির ভাগ্যহত নাগরিকদের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ সময় বাংলাদেশের সন্ত্রাসি হামলার ঘটনায় ইতালির প্রধানমন্ত্রীর দু:খ প্রকাশের তথ্যও প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
ইতালীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ইতালির সম্পর্ক বহু পুরনো এবং বাংলাদেশের বহু নাগরিকই ইতালিতে বসবাসরত রয়েছে। সেই সাথে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতালির ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উন্নয়নে শক্তিশালী অংশিদারিত্বের কথাও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় উল্লেখ করেন।
শহিদুল হক জানান- ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নয়নে তাঁর সরকারের দৃঢ় সংকল্পের কথা ব্যক্ত করে বলেন, গুলশান হামলার ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলবে না।
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদভের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই নেতাই বৈঠকে রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশে নির্মাণাধীন ‘পারমানিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র’র নির্মাণ কাজের সাফল্যজনক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই প্রকল্পটি যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়নের বিষয়েও ঐক্যমত পোষণ করেন।
একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর সরকারের পূর্ণ সমর্থন এবং প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তাসহ অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়ে রাশিয়ার সরকারের আগ্রহের কথাও জানান।
পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়াকে বন্ধু রাষ্ট্র আখ্যায়িত করে এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন-‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মস্কো থেকে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় যেকোন প্রকার সহযোগিতা গ্রহনে কখনও পিছ পা হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের সাইড লাইন বৈঠকে সুইস প্রেসিডেন্ট জোহান ¯œাইডার আম্মানসহ আরও কয়েকজন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও কথা বলেন।
আজ প্রধানমন্ত্রীর আসেম সম্মেলনের অবকাশকালিন বৈঠকে অংশগ্রহণ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিকেলে অন্যান্য সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানগগণের সঙ্গে শহরতলীতে অবস্থিত টুরিষ্ট কমপ্লেক্স ‘চেঙ্গিস খান খুরে’তে মঙ্গোলিয়ার ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল নাদাম’ উৎসবে যোগ দেন।
নাদাম উৎসবের দিনটি মঙ্গোলিয়ার ছুটির দিন, এটি একটি চমাৎকার জাতীয় উৎসব। যেখানে মঙ্গোলীয় সংস্কৃতি এবং জনগণ সম্পর্কে ধারনা মেলে। এই উৎসবের শেকড় রয়েছে যাযাবরদের বিয়ের আয়োজনে এবং মঙ্গল সেনাবাহিনীর শিকার ধরার কৌশল প্রয়োগে।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসেম সম্মেলনের নেতৃবৃন্দের সন্মানে মঙ্গোলীয় প্রেসিডেন্ট প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় ভোজে যোগদান করেন।
শহিদুল হক বলেন, আসেম সম্মেলনের ‘স্টক টেকিং’ সেশনে বিশ্বনেতৃবৃন্দ বিগত দুই দশকে আসেম’র মূল তিন স্তম্ভের অর্জন বিষয়ে পর্যালোচনা করেন। যারমধ্যে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগের মত বিষয়গুলো রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসেম নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে ফোরাম সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং আগামী দশকে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোর বিষয়েও দৃষ্টিúাত করেন।
বিশেষ করে, এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদারকরনের বিষয়ে, সন্ত্রাস দমন কর্মকা- এবং আমূল পরিবর্তন, মানব উন্নয়ন এবং জাতিসংঘ নির্ধারিত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রসঙ্গত, উলানবাটোরে শুরু হওয়া ১১তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘আসেম’-এর ২০ বছর : কানেকটিভির মাধ্যমে ভবিষ্যতের অংশীদারিত্ব’। গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয় হোটেল সাংগ্রিলাতে এই সম্মেলন শুরু হয়। আসেমভুক্ত ৫১টি দেশ- ৩০টি ইউরোপীয় ও ২১টি এশীয় দেশ এবং দুটি আন্তঃসরকার সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। দুই দিনের এ সম্মেলনে ১১টি দেশের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৩টি দেশের প্রধানমন্ত্রী, ১৬ জন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ও ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট এবং অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ-ইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস-এর সেক্রেটারি জেনারেল অংশ নিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, প্রথম অধিবেশনে আসেম-এর ২০ বছরের রাজনৈতিক সংলাপ লব্ধ অভিজ্ঞতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে আর্থ-সামাজিক আদান-প্রদান বিষয়ে পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে দুই মহাদেশের মধ্যে ‘হার্ড’ এবং ‘সফট’ কানেকটিভির উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হবে দ্বিতীয় সেশনে।
আজ ‘এনহেন্সিং দ্য থ্রি পিলার অব আসেম’ শীর্ষক অবকাশকালীন বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এই অধিবেশনেই বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী বিশেষ করে সন্ত্রাস দমন এবং অভিবাসনের মত বিষয়গুলোও আলোচনায় স্থান পাবে। আসেম-এর ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে ‘উলানবাটোর’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজ সম্মেলন শেষ হবে। সম্মেলন চলাকালে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।