পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঊদ্ধারে বিলম্ব হলে প্রাণ সংশয়ের কারণ হতে পারে
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বন্যার সময় আসাম থেকে জীবন্ত অজগর, মরা হাতি, গ-ার, কিংবা বুনো শুয়োর ভেসে আসা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবার একটা জীবন্ত হাতি ভেসে আসার ঘটনায় চারিদিকে সাড়া পড়ে গেছে। আসাম সীমানা পেরিয়ে পক্ষকালব্যাপী এখানে সেখানে ভেসে বেড়িয়ে হাতিটি এখন বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরে অবস্থান করায় শত শত কৌতুহলী মানুষ হাতি দর্শনে ছুটে যাচ্ছে নৌকা যোগে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্ভবত বন্যা জনিত ভুমি ধ্বস বা খাদ্যাভাবের কারণে কুড়িগ্রামের রৌমারি এলাকায় একটি দলছুট ভারতীয় হাতি ব্রহ্মপুত্র নদের চরে ভেসে আসার পর অতিবাহিত হয়েছে পক্ষকাল। এই দীর্ঘ সময়ে হাতিটি এক চর থেকে আরেক চরে ভেসে উঠে রীতিমতো বিষ্ময় সৃষ্টি করেছে। কুড়িগ্রাম থেকে প্রায় ১শ’ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিয়ে বন্য হাতিটি সর্বশেষ সারিয়াকান্দির চালুয়াবাড়ির চরনোয়াপুর চরে উঠেছে শুক্রবার। যমুনার পানিতে ভেসে এসে সারিয়াকান্দির চরে আটকাপড়ার পর আশপাশের চর এলাকার উৎসুক লোকজন হাতিটিকে দেখতে নৌকায় করে সেখানে যাচ্ছে। একটি দুটি নয় বরং শত শত নৌকায় তারা সেখানে যাচ্ছে।
বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৬ জুন কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের চরবাগুয়ায় ভেসে আসে বন্য হাতিটি। ভারতের আসাম রাজ্যের শিশু মারা পাহাড়ি এলাকা থেকে এই হাতিটি ভেসে আসে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। প্রায় এক সপ্তাহ ব্রহ্মপুত্র নদের এক চর থেকে অন্য চরে থাকার থাকার সময় হাতিটি আলোচনায় আসে। সামাজিক বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ বিষয়টি খোঁজ নেয়। বন অধিদপ্তর থেকে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর বিষয়টি ভারতের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়। এই দীর্ঘ সময়ে হাতিটি ব্রহ্মপুত্র থেকে যমুনার পানিতে ভাসছে এবং এক চর থেকে আরেক চরে উঠেছে। কিন্তুু স্্েরাতের তোড়ে হাতিটির স্থান পরিবর্তন হলেও শেষ পর্যন্ত এর বেঁচে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নদী পথে ভেসে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে বিষ্ময় সৃষ্টি করেছে হাতিটি। শুক্রবার সকালে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের নোয়ারপাড়া চরে দেখা মিলে হাতিটির। যমুনার স্রোতে ভেসে দুর্গম এই চরে আটকাপড়ে সে। চালুয়াবাড়ির হরিরামপুর এলাকার পশ্চিমে অবস্থিত এই চরে কোন বসতি নেই। চরের কাশবনে হাতিটি ঘোরাফেরা করছে। পাশের চর ভাঙ্গুর গাছা। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার প্রথম তারা হাতিটি দেখতে পান। এর পর থেকে আশ পাশের চর এলাকার উৎসুক লোকজন নৌকায় করে সেখানে গিয়ে হাতিটি দেখছেন। কেউ কেউ আবার হাতিটির খাবারের জন্য কলাগাছ কেটে দিয়েছেন। তবে সবাই দুর থেকেই হাতিটি দেখেছেন। এদিকে সারিয়াকান্দির চর এলাকায় হাতিটি ভেসে আসার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বগুড়া সামাজিক বন বিভাগকে বিষয়টি জানান হয়। বগুড়া সামজিক বন বিভাগের কর্মকর্তা মোল্লা মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানান হয়েছে। এর আগে থেকেই বন্যহাতির ভেসে আসার পুরো বিষয় বন অধিদপ্তর এবং বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের নজরে রয়েছে। বগুড়ায় আসার পর বন বিভাগের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, যেখানে হাতিটির অবস্থান সেখান থেকে এটি উদ্ধার করা সম্ভব না। শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ থেবে বন বিভাগের একটি টিম হাতিটির অবস্থান পর্যবেক্ষণে যান। কারণ হাতটির অবস্থান বগুড়ার শেষ সীমানায় জামালপুরের ইসলামপুরের নিকটবর্তী। তিনি আরো জানান, লোকজন হাতিটির নিকট থেকে দুরে থাকলেই ভালো হবে। নদী তীরে হাতিটি না উঠে আসলে এটিকে উদ্ধার করা সম্ভব না। তিনি জানান, দীর্ঘ পথ পানিতে ভেসে এসে হাতিটি এরমধ্যেই বিষ্ময় সৃষ্টি করেছে।
এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ ঢাকার বিভাগীয় কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিন জানান, বিষয়টি তারা নজরে রাখছেন এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জানান হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ভারতীয় বনবিভাগের প্রতিনিধি দল আসতে পারেন। হাতিটি বগুড়ার চরে আসার পর বিষয়টি আসামের বন বিভাগকে জানানো হয়েছে। এছাড়া হাতিটির প্রাণরক্ষা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। শীর্ঘই ভারতীয় বন বিভাগের একটি টিম আসার কথা রয়েছে। এবিষয়ে আলোচনাও চলছে।
তিনি আরো জনান, হাতিটির গতিবিধি লক্ষ্য রাখতে বনবিভাগ কাজ করছে এবং হাতিটির পরবর্তী অবস্থান যে জেলায় হতে পারে সেখানকার প্রশাসনের বনবিভাগ যোগাযোগ রাখছে।বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার ওসি ওয়াহেদুজ্জামান জানিয়েছেন, হাতিটি চরে আটকা পড়ার বিষয়টি বন বিভাগসহ ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানান হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।