পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এস কে এম নুর হোসেন, পটিয়া থেকে
জঙ্গি কার্যক্রমে লিপ্ত গত ১১ জুলাই (সোমবার) রাতে চট্টগ্রামের সীতাকু- থানার পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত মুসয়াব ইবনে উমায়ের চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের মহাজনবাড়ির অরুণ কান্তি দাশের পুত্র পিকলু দাশ। তার মায়ের নাম ঝর্ণা রানী দাশ। সে আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের একজন সদস্য। চট্টগ্রামের বিভিন্ন মিল-কারখানায় কর্মরত বিদেশী নাগরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর জঙ্গিরা হামলা চালানোর জন্য পিকলু দাশসহ ১০-১২ জনের একটি টিম পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল। ১১ জুলাই রাতে সীতাকু- থানা পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সীতাকু- উপজেলার বাড়বকু- এলাকা থেকে পিকলুসহ ৪ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। এ মাসের মধ্যে এ টিমের সদস্যরা জঙ্গি হামলা চালানোর ছক কষছিল বলে পুলিশ জানায়।
গত বুধবার এ প্রতিবেদক গ্রেফতারকৃত জঙ্গি মুসয়াব ইবনে উমায়ের ওরফে পিকলু দাশের উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের মহাজনবাড়িতে সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় তার সম্পর্কে। পিকলু দাশের মা ঝর্ণা রানী দাশ জানান, তার ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। ২ ছেলের মধ্যে পিকলু দাশ সবার বড়। তার অপর ভাই স্থানীয় ষোড়শী বালা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে পড়ে। পিকলুর দুই বোনের উচ্চশিক্ষা শেষে বিয়ে হয়। তারা বর্তমানে সংসার জীবনে নিয়োজিত। বাবা অরুণ কান্তি দাশ বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে রেয়াজউদ্দিন বাজারে আলুর আড়তের ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালিত করে আসছে। পিকলুর বাবা অরুণ দাশ জানান, সে পূর্বে একটি আড়তে দিনে দেড়শ’ টাকা মজুরিতে চাকরি করত। সর্বশেষ ২ বছর পূর্বে সে একটি ক্ষুদ্র আড়তের দোকান দেয়। শহরে থাকার সুবাদে অরুণ দাশ পরিবার-পরিজন নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকত। পিকলু দাশ ২০০৭ সালে নগরীর ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজে এইচএসসিতে পড়াশোনা করত। এসময় ২-৩ জন ছেলে প্রায় সময় বাসায় আসা-যাওয়া করত বলে পিকলুর মা ঝর্ণা রানী জানান। তার মায়ের দাবি চার বছর পূর্বে পিকলু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাবা-মায়ের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিগত দুই বছর পূর্বে অরুণ দাশ ছনহরা মহাজনবাড়িতে তার ক্রয় করা ভূমিতে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি নির্মাণ করেন। এলাকার অনেকের ধারণা, আড়তের ব্যবসা করে লাখ টাকা ব্যয়ে ভূমি ক্রয় কিংবা সুশোভিত বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব নয়। পিকলুর জঙ্গি তৎপরতার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা এ ভূমি ক্রয় ও বাড়ি নির্মাণ করেছে বলে লোকজনের ধারণা। পিকলুর মা ঝর্ণা রানী জানান, ‘তিনি অনুকূল ঠাকুরের অনুসারী। হিন্দু উগ্রপন্থী সংগঠন ‘ইসকন’ (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃঞ্চ কনসানসেন)-এর ভক্ত ছিল। তার মা ইসকন মন্দিরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। পিকলু দাশ ইসকনভক্ত হওয়ার পরও কিভাবে ধর্মান্তরিত হয়ে জঙ্গির পথে পা বাড়ায় তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পটিয়া থানার ওসি রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী জানান, ‘ গ্রেফতারকৃত পিকলু দাশ আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য। তার পরিবারের ওপর নজরদারি রাখা হয়েছে। পটিয়া এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্য কেউ জঙ্গির সাথে জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া পটিয়ায় জঙ্গিদের তৎপরতার ব্যাপারে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই সোমবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকু- থানার পুলিশ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে। তারা হলেনÑ মুসয়াব ইবনে উমায়ের ওরফে পিকলু দাশ (২৫), মো: খোরশেদুল আলম (৩২), ফয়সাল হোসেন শিপন (২৪) ও রাসেল মোহাম্মদ ইসলাম (৪০)। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বাড়বকু- এলাকার একটি বাড়ি থেকে চারটি চাপাতি, চারটি কিরিচ, একটি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব ও পাঁচটি মোবাইল সেটসহ সরকারবিরোধী অডিও-ভিডিও, আটটি চাপাতি ও তলোয়ার উদ্ধার করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।