পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পৃথিবীর ১৯৯টি দেশ করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। বাংলাদেশে এ ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সংক্রোমন এড়াতে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা রক্ষা করছেন দেশের কোটি কোটি মানুষ; অনেকেই রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে। ২ বছর ১ মাস ১৭দিন পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বেগম কার্যত: হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত করে এবং দিনের বড় সময় বই ও পত্রিকা পড়ে কাটাচ্ছেন। এছাড়া টেলিভিশনের মাধ্যমে খবর দেখছেন, শুয়ে-বসেই নিজের মতো করে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া রুপসা থেকে পাথুরিয়ার মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
সদ্যকারামুক্ত নেত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে অনেকেই রোযা রেখেছেন, নামাজ আদায় করেছেন, দোয়া করেছেন, মানত করেছেন। ফলে বেগম জিয়ার মুক্তির খবরটি তাদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের। তবে এমন এক সময় তিনি মুক্ত হলেন যখন বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব প্রাণঘাতি বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিচ্ছিন্ন। এ থেকে বাঁচতে প্রত্যেককেই দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই ভাইরাস বয়স্ক, আগে থেকে অসুস্থ থাকা রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হিসেবে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ৭৫ বছর বয়স্ক বিএনপি চেয়ারপারসন ডায়াবেটিস, আর্থ্রারাইটিস, চোখ, দাঁত, হাটুসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন। তাই তার মুক্তির মাধ্যমে একদিকে দলটির নেতাকর্মীরা যেমন উচ্ছ¡সিত, তেমনি শারীরিক সমস্যা নিয়েও উদ্বিগ্ন। তাই দলের লাখ লাখ নেতাকর্মী তাকে হোম কোয়ারেন্টইনে থাকার অনুরোধ করেছেন।
এদিকে বেগম জিয়া কারামুক্ত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে উঠেছেন গুলশানের ভাড়াবাসা ফিরোজায়। সেখানে দ্বিতীয় তলায় কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তিনি। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে পরিবারের সদস্য, নার্স এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছাড়া আর কারো সাথেই সাক্ষাত করছেন না; ভক্তরাও নেত্রীর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে সেদিকে যাচ্ছেন না। এর মধ্যে চিকিৎসক ছাড়া পরিবারের সদস্য ও নার্সরা সার্বক্ষণিক বাসার ভেতরেই অবস্থান করছেন। বাসার প্রবেশ পথে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া কারো প্রবেশের অনুমতি নেই। আবার বাসার ভেতরেও ব্যক্তিগত দূরত্ব ও প্রোটেকশন ব্যবহার করে একে অপারের সাথে কথা বলছেন। লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান পেশায় চিকিৎসক। তিনি বাংলাদেশে সরকারি চাকরি করতেন। তিনিই অসুস্থ শাশুড়ি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম তদারকি করছেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলছেন, চিকিৎসা নিয়ে দিচ্ছেন নানা দিক-নির্দেশনা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, ম্যাডাম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এই সময়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্স অর্থাৎ একজন থেকে অপরজনকে যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলার নিয়ম তা যথাযথ মেনেই ম্যাডামের সেবা প্রদানকারীরা সেবা দিচ্ছেন। চিকিৎসার সার্বিক বিষয় তত্ত¡াবধান করছেন লন্ডন থেকে ম্যাডামের পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান। ম্যাডাম প্রিয়জনদের সাথে মোবাইলে কথা-বার্তা বলতে পারছেন, ডাক্তারদের সাথে কথা বলছেন যেটা সমস্যা যেটা জানাচ্ছেন। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে তিনি সময় কাটাচ্ছেন। তবে তার মতোবল খুবই শক্ত।
খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনের একটা বড় সময় খালেদা জিয়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত, বই পড়ে, পত্রিকা পড়ছেন। এছাড়া টেলিভিশনের মাধ্যমে খবর দেখছেন, শুয়ে-বসে সময় পার করছেন। তারা আরো জানান, বেগম জিয়া ভীষণ অসুস্থ অবস্থায়ও কারাগারেও নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। এখনো নানা অসুস্থতার মধ্যে চেয়ারে বসে বসেই নামাজ পড়ছেন। নামাজের পর তেলাওয়াত করছেন কোরআন শরীফ। করোনা মহামারী থেকে দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীকে আল্লাহ যেনো মুক্তি দেন সেজন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করছেন। দেশবাসীকেও আহŸান জানিয়েছেন আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করার জন্য।
পরিবারের একজন স্বজন জানান, বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগে খাওয়া-দাওয়ার যেমন রুচি ছিল এখন অনেকটা কম। খুবই কম খাচ্ছেন। তবে আমরা চেষ্টা করছি ঘন ঘন তাকে খাওয়ানোর। বাসার রান্না করা খাবার কিছুদিন খেলে ও রেস্টে থাকলে তিনি অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে উঠবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ওই স্বজন।
তিনি জানান, উনি (খালেদা জিয়া) শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হলেও ঘরোয়া পরিবেশে এখন স্বস্তি বোধ করছেন। পারিবারিক পরিবেশে এসেছেন, আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে যারা বাসায় রয়েছেন তাদের সাক্ষাতে এবং যারা দূরে রয়েছেন তাদের সাথে ফোনে কথা বলতে পারছেন। এত উনার মানসিক বলটা আরও বেড়ে গেছে। আগে যে বিপর্যস্ত চেহারা ছিল সেটাও অনেকটা কমে আসছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও দীর্ঘসময় কারাবন্দী থেকেও মানসিক দিক থেকে এতটুকুও দুর্বল হননি বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ। তিনি জানান, কোয়ারেন্টিনে ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। বিএসএমএমইউর মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া ওষুধগুলোতে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন আনা হয়েছে। ম্যাডামের হাত-পায়ে প্রচÐ ব্যথা রয়েছে। আর্থ্রাইটিসের কারণে হাত-পায়ের জয়েন্টে গুটলি হয়েছে। এগুলো উনাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে, প্রচÐ ব্যথা। এই ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওষুধে কিছুটা পরিবর্তন ও সংযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, কারাগারের নির্জনতা ও নির্মমতার কারণে ম্যাডাম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। উনি অনেকটা শুকিয়ে গেছেন, দুর্বলতাও রয়েছে তার। ওজনও তার ৯-১০ কেজি কমে গেছে। কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন আশা প্রকাশ করে এই চিকিৎসক বলেন, একটা সিস্টেমের মধ্যে চলে আসলে উনার ডায়াবেটিসের সমস্যাও ক্রমশ কমে আসবে বলে আমরা ধারণা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।