পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় পুনরায় রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। ভারতের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এই কমিটি।
গতকাল (বুধবার) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল। তিনি দেশের স্বার্থে এই চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তি হলে সুন্দরবন অংশে এভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে এগিয়ে যেত না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁও হোটেলে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি সই হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, কমিটির সদস্য খুশি কবির, শরীফ জামিল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভারতই লাভবান হবে। আর অর্থনৈতিকভাবে ও পরিবেশগতভাবে বিপর্যয় ঘটবে বাংলাদেশের। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কি না? এ প্রশ্ন রেখে সুলতানা কামাল বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হলে সুন্দরবন অংশে এভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে এগিয়ে যেত না। দেশ-বিদেশে চরম উদ্বেগ প্রকাশের পরও সুন্দরবনের পরিবেশকে হুমকির মধ্যে রেখে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার এ ধন্যবাদ দেওয়ায় আমাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, চুক্তিটি কি তবে ভারতের স্বার্থে হচ্ছে? তিনি বলেন, এখনো সময় আছে সরকার এ চুক্তি বাতিল করুক।
এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবে না বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক এম এম আকাশ। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। আমরা বহু বার সরকারের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ না করার দাবি জানিয়েছি। অথচ সরকার তা আমলে নেয়নি। এ প্রকল্পে অর্থসহায়তা দিচ্ছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। ওই ব্যাংকের নীতি অনুসারে, তারা এসব প্রকল্পেই সহায়তা করে, যার মাধ্যমে ভারতের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সুবিধা থাকে। এ কারণে প্রশ্ন থেকে যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ব্যবহৃত কয়লা কি ভারত থেকে আমদানি করা হবে? নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর তা ভারতে রপ্তানি করা হবে?
বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিম্নমানের কয়লা ব্যবহারের আশঙ্কা প্রকাশ করে সুন্দরবন জাতীয় রক্ষা কমিটির সদস্য শরীফ জামিল বলেন, বলা হয়েছিল উন্নত মানের কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। অথচ ভারতের যে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, এতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে নিম্নমানের কয়লা ব্যবহারের প্রযুক্তি সক্ষমতা থাকার শর্ত দেওয়া হয়েছে। এতে করে নিম্নমানের কয়লা ব্যবহারের আশঙ্কাই থাকে। আর তা হলে সুন্দরবনের পরিবেশ আরও হুমকির মধ্যে পড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সমালোচনা করে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির বলেন, যে উন্নয়ন জনগণের বিপক্ষে যায়, সে উন্নয়ন আসলেই কোনো উন্নয়ন কি না, সে প্রশ্ন থেকে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে রামপাল এলাকার এক অধিবাসী মো. মুজাহিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে সরকার পরিবেশ রক্ষার তকমা দিয়ে জনগণের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তারা কীভাবে পরিবেশবিধ্বংসী এমন একটি প্রকল্প করার অনুমতি দিল এমন প্রশ্ন দেশবাসীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।