Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আবহাওয়া চরম ভাবাপন্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

নতুন গবেষণা

ঘূর্ণিঝড় তাপদাহসহ বাড়ছে দুর্যোগ-দুর্ভোগ
শফিউল আলম : অত্যধিক চরম ভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে আবহাওয়া-জলবায়ু। রুদ্র রুক্ষতা বাড়ছে পরিবেশ প্রকৃতির আচরণে। আরও প্রবল আকারে ও ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়, তাপদহন, বরফগলার মাত্রা বৃদ্ধিসহ অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী পড়বে নানান দুর্যোগ-দুর্বিপাকের ঘনঘটায়। এর পরিণামে মানুষের দুর্ভোগ ক্রমাগত হবে দুঃসহ। আর ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হবে দেশে দেশে অসংখ্য মানুষ। বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় এহেন অশনি সঙ্কেত দেয়া হয়েছে।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী নোয়া এস. ডিফেনবাগের নেতৃত্বে এ গবেষণা পরিচালিত হয়। এর ভিত্তিতে গবেষণা নিবন্ধ গত ১৮ মার্চ প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান জার্নাল দ্য সায়েন্স এডভান্সেস। বিজ্ঞানী নোয়া ডিফেনবাগ এবং তার গবেষকদল বলছেন, আগের পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণা হার মানছে। এসব পূর্বাভাস ওলটপালট হতে চলেছে। পূর্বেকার ধারণাগুলোকে অতিক্রম করেই জলবায়ু পরিবর্তণ ঘটছে। বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ধারায় পৃথিবীজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার। বিজ্ঞানীদের নতুন এই অনুসন্ধান ও গবেষণায় জানানো হচ্ছে, পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির গতি ইতোমধ্যেই বেড়েছে ধারণা-পূর্বাভাস ও দূরাভাসের তুলনায় অধিকতর। যা আগের অবস্থান কিংবা ধারণার চেয়েও ৮০ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে বিশ্বে আর্দ্রতার মাত্রা আগের ধারণাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ৫০ শতাংশ হারে। এতে করে গুমোট গরমভাব বেড়ে চলেছে। বিজ্ঞানী নোয়া এস. ডিফেনবাগ টিমের এ গবেষণায় আগামী দিনগুলোর জন্য অশনি সঙ্কেতই ফুটে উঠেছে। কেননা ‘সায়েন্স এডভান্সেস’ বলছে, পৃথিবীতে অধিক হারে আবহাওয়া-জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং আর্দ্রতার মাত্রাও বেড়ে যাওয়ার কারণে হ্যারিকেন-ঘূর্ণিঝড়, তাপদাহ আরো ব্যাপক রূপ ধারণ করতে পারে। বাড়বে বরফ গলনের হারও। যা একেকটি দুর্যোগের পেছনে আবহাওয়া-জলবায়ু ও প্রকৃতির চরম ভাবাপন্ন রূপ। তাছাড়া মানুষের জীবনযাত্রায় বিপর্যয় ঘটিয়ে অন্যান্য দুর্যোগের ঘনঘটা বা প্রকোপ বৃদ্ধির শঙ্কা জাগায়। এতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ঝামেলা পোহাতে হবে আরও বেশিগুণে। গবেষকগণ সতর্ক করছেন, বছর বছর ধরে আমরা আবহাওয়া জলবায়ু প্রকৃতির ক্রমাগত চরম ভাবাপন্ন এবং তার বৈরী আচরণ লক্ষ্য করছি। কঠিন বাস্তবতাকে হেলা করে দেখার উপায় নেই। আমাদের সুরক্ষার উপায় খুঁজতে হবে। অভিজ্ঞতা, বুদ্ধি-বিবেচনা, জ্ঞান-কৌশলগুলো সময়মতো কাজে লাগাতে হবে।

বাংলাদেশেও ধাক্কা-
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রিয়াজ আক্তার মল্লিক তার এক গবেষণাপত্রে জানান, বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়নের ধারায় বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা গড়ে শূণ্য দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। এমনকি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত বেড়েছে। গত ৫০ বছর সময়কালে বৃষ্টিপাত বেড়ে গেছে গড়ে প্রায় ২৫০ মিলিমিটার। ৫০ বছরে গড় বৃষ্টি এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বৃষ্টিপাতের আধিক্য, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খরা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসছে। বাংলাদেশও এসব ঝুঁকির মধ্যে আছে। জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের বিশেষ করে খাদ্য ও কৃষিখাতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এসব সঙ্কট, প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সুনির্দিষ্ট ও সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা সহকারে এগিয়ে যেতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ