Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বুয়া সেজে দুর্ধর্ষ চুরি

চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

রাজধানীর যেসব বাসায় শিশু ও বয়স্ক মহিলা-পুরুষ রয়েছে সেইসব বাসায় বুয়ার কাজ করে তারা। শুধু তাই নয়, যেসব বাসার বাসিন্দারা নিজেরা কিছু করতে চায় না, অন্যের সাহায্যে নিয়ে বাসার কাজ করায়; ওই সব বাসায় বুয়ার কাজ করে তারা। এছাড়াও বাসায় লোক সংখ্যা কম, শিক্ষিত ও সরল, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ কম এমন বাড়ির বাসিন্দাদের সফট টার্গেটকে বেছে নিয়ে গৃহকর্মীর কাজের ফাঁকে সুযোগ বুঝে উচ্চমাত্রায় ঘুমের ঔষধ খাবারের সাথে মিশিয়ে অচেতন করে সর্বস্ব লুট করাই তাদের পেশা। তবে এমন এক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানান, ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার ২৮/বি সতীশ সরকার রোডের একটি বাসার তৃতীয় তলায় গৃহকর্মী বাসার লোকদের অচেতন করে স্বর্ণ ও টাকা লুট করে নিয়ে যাওযার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় গেন্ডারিয়া থানায় মামলা হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকালে জানা যায়, বিউটি বেগম ওরফে ময়না ওরফে জান্নাতের মা নামের এক নারী গত ৯ মার্চ বাসার দারোয়ানের মাধ্যমে ভিকটিম ফয়জুন্নেছার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ পায়। নিয়োগের পরের দিন খাবারের সাথে উচ্চমাত্রায় চেতনানাশক ট্যাবলেট মিশিয়ে বাড়ির তিনজনকে অচেতন করে। এই সুযোগে বাসার আলমারি থেকে ২৫ ভরি স্বর্ণ ও ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বিউটি। মালামাল লুটের পর মামলার বাদি অসুস্থদের উদ্ধার করে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ডিসি ওয়ারী আরো জানান, অজ্ঞাতনামা কাজের বুয়া জান্নাতের মা পরিচয় দানকারীর ছবি সংগ্রহ করে অনুসন্ধান করা হয়। এক পর্যায়ে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে গত শনিবার ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকোরিয়া বেপারীপাড়া বাঁশপট্টি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিউটি বেগম ওরফে ময়না ওরফে জান্নাতের মা (৩৩), খোরশেদ আলম ওরফে মোরশেদ (৩৫), আসাদুল ইসলাম (৩৬), রিপনা বেগম (৩৫) ও ফারুক আহম্মেদকে (৬২) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একজোড়া স্বর্ণের চুড়ি, একটি লকেটসহ স্বর্ণের চেইন, একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, একটি স্বর্ণের গলার হার, একটি স্বর্ণের নাক ফুল, চেতনানাশক ঔষধ ও ৯১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, গ্রেফতার হওয়া খোরশেদ আলম সুকৌশলে তার স্ত্রী বিউটিকে ভিকটিম ফয়জুন্নেছার বাসার কাজের বুয়া হিসেবে পাঠান। আর গ্রেফতার আসাদুল ও তার স্ত্রী রিপনা বেগম চুরির উদ্দেশ্যে বিউটিকে চেতনানাশক ওষুধ সরবরাহ করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজের বুয়া বিউটি দুপুরের খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ালে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর আলমারিতে রাখা ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি বিভিন্ন স্বর্ণালংকার টাকা নিয়ে যান তিনি। এরপর চোরাই করা মালামাল স্বর্ণের দোকানদার আটক ফারুক আহম্মেদের কাছে বিক্রি করা হয়। নগরবাসীর উদ্দেশ্যে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, বাসায় কাজের বুয়া নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্য নিন, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি রাখুন, প্রয়োজনে বুয়ার বাড়ির নম্বরও রেখে দিন। সন্দেহজনক হলে পুলিশকে জানান। পুলিশ সার্বিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বুয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ