পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লাল-কালো রংয়ের গেট। গেটে সাটানো আছে সাদা কাগজের দুটি পোস্টার। একটিতে লেখা আছে ‘এই সম্পূন্ন বাড়িটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে’। অপরটিতে লেখা আছে ‘৫ম তলা বাড়ীর নীচ তলায় ২ রুমের ফ্ল্যাট ছোট পরিবারের জন্য ভাড়া হবে। গ্যাস বিদ্যুৎ এবং পানির সার্বক্ষনিক ব্যবস্থা আছে। কোনো রকম অগ্রীম নেয়া হবে না।’ এছাড়াও যোগাযোগের জন্য ওই পোস্টারে দুটি মোবাইল নম্বর দেয়া আছে। গেটের ভেতরে ছোট একটি গ্যারেজ রয়েছে। ওই গ্যারেজে একটি গাড়ি রাখা আছে। তবে গেটে কোনো দারোয়ান নেই। একদম সুনসান নিরবর্তা। স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো বাড়ি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখানের প্রেমবাগান এলাকায় সেই ‘আশ্রয়’ ভবনে গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে।
গত মাসের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই ভবনের চারতলা থেকে মুন্নী বেগম (৩৭), তার ছেলে ফারহান ভুঁইয়া (১২) ও মেয়ে লাইবা ভূঁইয়ার (৪) লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। মুন্নীর স্বামী বিটিসিএলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রকিব উদ্দিন আহমেদ। তিনি স্বী ও সন্তানদের হত্যা করে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহত মুন্নী বেগমের ভাই মুন্না রহমান। ওই মামলায় এক মাত্র আসামি করা হয় রকিব উদ্দিন আহমদকে। তবে গতকাল পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এমনকি মামলা তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতিও নেই। তাই মামলাটি থানা পুলিশ থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানান নিহতের স্বজনরা।
গতকাল বিকেলে মুন্না রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, এখনো পর্যন্ত রকিব উদ্দিনের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া পুলিশও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ নিয়মিত তাদের সাথে যোগাযোগ করছে। আর কোনো অগ্রগতি নেই। তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে তাকে গ্রেফতার না করা হলে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশে দেয়ার জন্য আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, নিহত মুন্নী ও তার সন্তানরা যে বাসায় থাকতেন সেই বাসা এখনো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মালিকপক্ষকে এখনো বাসাটি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। আগামীকাল (আজ) পুলিশের সাথে আমরা বসব। তখনই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
আশ্রয় ভবনের মালিকের স্ত্রী ফাতেমা বেগত দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এখনো পর্যন্ত রকিব উদ্দিনের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। রকিব উদ্দিন ১১ বছর আমাদের এখানে ছিলেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাসা ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই মাসেই এত বড় ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, রকিব উদ্দিন বাসা ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার পর অন্য এক পক্ষকে বাসা ভাড়া দেই। তাদের কাছ থেকে অগ্রীম ভাড়াও নেয়া হয়। কিন্তু এই ঘটনা হওয়ার পর অগ্রিম টাকা ফেরত দেয়া হয়। তবে ফ্ল্যাটটি এখনো পুলিশ আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। দিলে আমরা ফের ভাড়া দিব।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন দৈনিক ইনকিলবাকে জানান, মামলাটি তদন্ত চলছে। পলাতক আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কিছু বলতে নারাজ তিনি।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা ছায়া তদন্ত করছে। তারাও এখন পর্যন্ত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, গতকাল পর্যন্ত পলাতক আসামি রকিব উদ্দিনের খুঁজ পাওয়া যায়নি। আর তাকে না পাওয়া গেলে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা কঠিন। তবে রকিব উদ্দিনকে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি ডায়রি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ডায়রিতে রকিব উদ্দিন নিজেকে ঋণগ্রহস্ত হিসেবে লিখে গেছেন। ঋণমুক্ত হওয়ার জন্য স্বজনদের দ্বারস্ত হয়েও ব্যর্থ হয়েছেন; তাই তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করেছেন বলে ওই ডায়রিতে লেখা আছে। এছাড়াও তার লাশও রেল লাইনের পাশে পাওয়া যাবে বলে লিখে গেছেন। পরে বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশকে অবগত করা হয়। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত রেল লাইনের পাশেও তার লাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, পলাতক রকিব উদ্দিন আহমদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাতশালা এলাকায়। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে রাজধানীর দক্ষিণখান প্রেমবাগান রোডস্থ ৮৩৮ নম্বর বাসায় বসবাস করছিলেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ দক্ষিণখান এলাকায় ছিলেন তিনি। এরপর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তার সন্ধানে আত্মীয়-স্বজনের বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় খুঁজাখোঁজি করা হয়। এছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশও তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। তারপরও তার খুঁজ পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।