পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক প্রধান লে. জেনারেল টিক্কা খান একাত্তরের ১৩ মার্চ এক সামরিক ফরমান জারি করেন। এই সামরিক ফরমানে তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা বাজেট থেকে যারা বেতন উত্তোলন করেন, তারা ১৫ মার্চের মধ্যে কর্মস্থলে যোগ না দিলে সবাইকে চাকরিচ্যুত করা হবে। শুধু তাই নয়, সামরিক আইনের বিচারে এসব আইন অমান্যকারীকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদÐ দেওয়া হবে।’ টিক্কা খানের এ আদেশের পরও কর্মস্থলে যোগ দেননি কোনো বাঙালি সেনা কর্মকর্তা। স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর অকুতোভয় বাঙালি পাকিস্তান সামরিক সরকারের কোনো আদেশ-নির্দেশের প্রতিই কর্ণপাত করেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেনারেল টিক্কা খানের সামরিক ফরমানকে উস্কানিমূলক আখ্যায়িত করে বলেন, কোনো শক্তিই বাংলার জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না। পাকিস্তানের সামরিক সরকারের হুমকি-ধমকি বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনকেও ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। জেনারেল টিক্কার এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ সমগ্র জাতি প্রতিবাদ ও ক্ষোভে আরও ফুঁসে ওঠে। সর্বত্র অহিংস অসহযোগ আন্দোলন আরও বেগবান হতে থাকে। ধীরে ধীরে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন রূপ নিতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকে।
স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যেসব জেলা ও থানায় তখনও গঠন হয়নি, অতি অল্প সময়ের মধ্যে সেসব স্থানে কমিটি গঠনের জন্য তাগিদ পাঠানো হয়। অসহযোগ আন্দোলন তখন এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত যে, কেউ আর পাকিস্তান সরকারের আদেশ-নির্দেশের পরোয়া করছে না। পূর্ব পাকিস্তান তথা গোটা বাংলাদেশে তখন নেতা একজনই। তিনিই দেশ, তিনিই সরকার।
এদিকে বঙ্গবন্ধু তার ৩২ নাম্বারের বাসভবনে শীর্ষস্থানীয় চার ছাত্রনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে ডেকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু কলকাতার ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্কের ২১ রাজেন্দ্র রোডের একটি বাসার ঠিকানা দিয়ে বলেন যে, প্রবাস থেকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য এটিই হবে মূল কেন্দ্র।
তিনি জানান, সংসদ সদস্য ডা. আবু হেনাকে কলকাতা পাঠিয়ে তিনি এই বাসাসহ সবকিছু ঠিকঠাক করিয়ে রেখেছেন। সেখানে সংসদ সদস্য চিত্ত সুতার সবাইকে অভ্যর্থনা জানানোসহ ওই দেশের সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করবেন। পরবর্তীতে কলকাতার ওই বাসাতে গিয়েই প্রথমে উঠেছিলেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকসহ শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতা।
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বৈঠক করে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন। আন্দোলনরত নেতারা গোপনে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য শেখ ফজলুল হক মনিও তার অনুগতদের নিয়ে কৌশল নির্ধারণ করে নির্দেশ প্রদান করেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ দলের সর্বস্তরের নেতা এবং ১৭ জেলার নেতাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় আদেশ-নির্দেশ দিতে থাকেন। ভেতরে ভেতরে চলতে থাকে বাঙালি সামরিক অফিসারদের তালিকা প্রণয়নের কাজ। কে কোথায় আছেন ও তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার বার্তা কীভাবে এবং কার মাধ্যমে পৌঁছানো যায় সে বিষয়টিও নির্ধারণ করেন কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।