পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়াই ছিল শাহেদের অপরাধ। মাদক স¤্রাট মালেক রহমানের লোকজন শাহেদের কারণে শ্যামপুর থানার ঢালকানগর এলাকায় মাদক ব্যবসা করতে পারতো না।
এ নিয়ে মালেক ও তার মাদক ব্যবসায়ী সহযোগীরা শাহেদের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। ঘটনার দিন তাই পরিকল্পনা করেই তারা শাহেদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত শাহেদের বড় বোন শামীমা আক্তার বলেছেন, ঘটনার নেপথ্যের নায়করা এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় তাদের পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মালেকের লোকজন তাদেরকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে শ্যামপুরের ঢালকানগরে খুন হয় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শাহেদ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাপ্পু (২৭) নামের স্থানীয় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পরদিন শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রাতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন শাহেদ। তার বাসার সামনে প্রতিবেশী এক যুবক শাহেদের কাছে এতো রাতে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহেদ ওই যুবককে চড় মারেন। কিছুক্ষণ পর আরেক প্রতিবেশী পাপ্পু ওই যুবক ও আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে শাহেদকে মারধর করেন। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহেদ। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শাহেদের বড় বোন শামীমা আক্তার জানান, মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ায় শাহেদ বহু আগে থেকেই স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের টার্গেটে ছিলেন। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে এলাকায় মাদকবিরোধী মিছিল সমাবেশও করেছেন শাহেদ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুরান ঢাকার অ্যাডভোকেট ম-ল হত্যা মামলার আসামি মালেক রহমান মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ঢালকানগরসহ পুরো শ্যামপুর থানা এলাকা মাদকে ভাসছে। মালেকের শত শত সহযোগী প্রকাশ্যে বিক্রি করছে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। এ নিয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করলে বা বাধা দিতে গেলেই তাকে প্রথমে হুমকি ধমকি এবং পরে মারপিট করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জেল থেকে বের হওয়ার পর মালেক তার আধিপত্য বিস্তারের জন্যই কোটি কোটি টাকার ধান্দায় মাদক ব্যবসা শুরু করে। স্থানীয় সন্ত্রাসী শহিদ কমিশনার ও বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী কচির নাম ব্যবহার করে সে মাদক ব্যবসা শুরু করে। শাহেদ তার বাড়ির আশপাশে ইয়াবা বিক্রিতে বাধা দিত। এ কারণে তাকে বেশ কিছুদিন আগে হুমকি দিয়েছিল মালেক।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, শুধু তাই নয়, মালেকের স্ত্রীও মাদক ব্যবসায় জড়িত। তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিল শাহেদ। সেই থেকে মালেক শাহেদকে খুন করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। স্থানীয় অনেকেই বলেছেন, শ্যামপুর থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। পুলিশ তল্লাশির নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে। থানায় ধরে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে না। ধরলে মালেকের লোকজন এভাবে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করতে পারত না।
শাহেদ খুন হওয়ার পর তার স্ত্রী কনিকা আক্তার বাদী হয়ে শ্যামপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলা নং ০৩/০৯/০৭/২০১৬ ইং। এতে ১১ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এরা হলো, গ্রেফতারকৃত পাপ্পু ওরফে অপু, পিতা মৃত দুলাল মিয়া, তুষার ও মুন্না পিতা আব্দুর রহমান, রহমান (৫০), মালেক, লোকমান, শাকিল, সৌরভ, হাবু, ফারুক ও তপন।
এদিকে, শাহেদ হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী কচিও কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কচির কারণে পুলিশও হত্যাকা-কে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা। নিহত শাহেদের ভাই সালামকে গত রোববার শ্যামপুর থানায় লকআপে আটকে রাখা হয়। অথচ খুনি ও তার সহযোগীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানতে চাইলে শ্যামপুর থানার ওসি শেখ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের খুঁজছি। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি। মাদক স¤্রাট মালেক ও কচি গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিহত শাহেদের পরিবারকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। শাহেদের মা, ভাই-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, এ রকম কিছু আমার জানা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।